গাছ তো আমরা কতই দেখি, নামও জানি বেশ কিছুর। কিন্তু যদি সেই চিরচেনা গাছের বাইরে নতুন বৃক্ষের দেখা মেলে? আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুর বাইরেও অজানা–অচেনা একেবারেই আনকোরা ফলের গাছ—নয়তো গোলাপ, জবা, বেলি ছাড়াও একেবারেই নতুন কোনো প্রজাতির ফুলের গাছ? দেশের বাইরে দেখে এলেও এ দেশে কখনোই চোখে পড়েনি, এমন কিছু গাছের সন্ধান পেলে কেমন হয়? তেমন কিছু গাছ এসে জমা হয়েছে ২০ জুন শুরু হওয়া রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় বৃক্ষমেলা ২০১৯–এ। মাসব্যাপী মেলায় গাছেরা শোভা পাবে, চলবে বিকিকিনি। মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে খুঁজে এনেছি তারই খোঁজ।
ফল
চেরি প্রজাতির ফল ম্যানিলা চেরিরগাছ ফিলিপাইন থেকে এ দেশে নিয়ে এসেছে মেলার ১৫ নম্বর স্টল গ্রিন বাংলা। দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫,০০০ টাকা। বেরিকেটেড ডুমুর বা টাইগার ডুমুর থাইল্যান্ড থেকে এনে এ দেশে বসতি বানানোর ইচ্ছাটাও ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে একই স্টল। চারার দাম ৩,০০০ টাকা। ব্রাজিল থেকে আনা আছাই বেরি ফলের একমাত্র চারাটি শোভা পাচ্ছে ৮-৯ নম্বর স্টলের হোসেন নার্সারিতে; যার দাম হাঁকানো হচ্ছে ১ লাখ টাকা।
৯৭-৯৮ নম্বর স্টল পটুয়াখালী নার্সারি, থাইল্যান্ড থেকে নিয়ে আসা সুইট সান্তোল ফলের চারার দাম চাইছে ১৫০০ টাকা ও মালয়েশিয়া থেকে আনা রেড ডুরিয়ামের চারার দাম ৬,০০০ টাকা। ভারত থেকে কোকাম, থাইল্যান্ড থেকে রেড লংগান, ইন্দোনেশিয়া থেকে মামি সফেদা, থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা আন্না আপেলের গাছটি বিক্রি না করলেও এই জাতের চারা বিক্রি করছে ১০১-১০২ নম্বর স্টল। এ ছাড়া নানা জাতের খেজুরগাছের চারা এনেছে ১৪ নম্বর স্টলে থাকা সৌদি খেজুর নার্সারি।
ফুল
হলুদ রঙের নজরকাড়া ফুল মেলামপডিয়ামের চারা এনেছে ৩৩ নম্বর স্টলের মেটাল বায়োটিক নার্সারি; যার দাম ৬০০ টাকা। আফ্রিকা থেকে বাংলাদেশে আনা বিলুপ্ত মেরুন রঙের ফুল ফোটা গাছ কাইজেলিয়া আছে শুধু রংপুর কারমাইকেল কলেজে। সেখানকার ২টি গাছ থেকে চারা তৈরি করে বিক্রি করেছে বরিশাল নার্সারি, দাম ২,৫০০ টাকা। লাল রঙের ম্যানডোভিলা, ৫০০-১০০০ টাকা দামের ভারত থেকে আসা হলুদ স্থল পদ্ম এবং হল্যান্ড থেকে ৫টি আলাদা রঙের গোলাপগাছের কাঠ ফুল প্রজাতির চারা এনেছে গ্রিন বাংলা, যার প্রতিটি গাছের মূল্য ৬০-১০০ টাকা।
জলজ
মেলায় আসা প্রতিটি জলজ উদ্ভিদ পরিচিত হলেও থাইল্যান্ড থেকে কচুরিপানা এনেছে আবাদী; যার স্টল নম্বর ৪২। দাম হাঁকা হচ্ছে ১২০০ টাকা।
সবজি
লাইফ টু ন্যাচার নামের স্টলটি ভুটান থেকে এনেছে ক্যাপসিকাম গোত্রের বড় মরিচ, লেটুস বা ধনেপাতা গোত্রের সালাদ পাতা ও শিম গোত্রের টপক্রপ ও বরলোটো। ছোট ছোট চারার প্রতিটির দাম রাখা হয়েছে ২০ টাকা। এ ছাড়া ৩৬ নম্বর স্টল নিয়ে থাকা লাইফ টু ন্যাচার নজর কেড়েছে ঝুলন্ত কৃষি পদ্ধতির কারণে। এখানে প্রদর্শন ও বিক্রি হচ্ছে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি বালতি, যার নিচের অংশ গোল করে কাটা। এই বালতিতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চারা বেড়ে ওঠার পাশাপাশি নিচের অংশ দিয়ে ঝুলিয়ে মিষ্টি আলুর চাষ করা হচ্ছে। গাছসহ বালতির দাম ৪০০ টাকা আর গাছ ছাড়া শুধু বালতির দাম ৩৫০ টাকা রাখা হয়েছে।