আদবকেতা

লিফটের আদবকেতা

>লিফটের ভেতরে কখনোই উচ্চ স্বরে হাসিঠাট্টা কিংবা চিৎকার করবেন না। এতে অন্যরা বিরক্তবোধ করেন। অনেক সময় আপনাকে অনেকে হয়তো বিরক্তিকর কথা বলবেন না, কিন্তু নিজের মানবিক মূল্যবোধ বজায় রাখুন।

মাঝেমধ্যেই লিফটে বিপত্তিতে পড়েন ফয়সাল আহমেদ (ছদ্মনাম)। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পদে কাজ করেন। প্রতিদিনই এ অফিস-সে অফিস করে নানা জায়গায় ঘোরার সুযোগ পান। এ সুযোগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লিফটে চড়া হয় তাঁর। লিফটে অন্যদের আদবকেতার জন্য বেশ অস্বস্তিবোধ করেন তিনি। ফয়সাল বলেন, ‘এই ধরুন না, লিফটে মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক হয়তো নেই, তারপরেও হ্যালো হ্যালো বলে চিৎকার করেন অনেকে। আবার কেউ কেউ তো অন্যরা লিফট থেকে নামার আগেই লিফটে ঢুকে পড়েন। আবার কেউ তো লিফটে চড়ে হাঁচি-কাশি দিয়ে একাকার করে ফেলেন। সব মিলিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই লিফট এখন এক বিপত্তির নাম।’ মানুষের আবেগ ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছেন মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ এস এম আরিফুজ্জামান। তিনি লিফটে চলাচলের কিছু আদবকেতা জানাচ্ছেন অধুনার পাঠকদের জন্য।

জোরে চিৎকার বা কথাবার্তা নয়: লিফটের ভেতরে কখনোই উচ্চ স্বরে হাসিঠাট্টা কিংবা চিৎকার করবেন না। এতে অন্যরা বিরক্তবোধ করেন। অনেক সময় আপনাকে অনেকে হয়তো বিরক্তিকর কথা বলবেন না, কিন্তু নিজের মানবিক মূল্যবোধ বজায় রাখুন। ফিসফিসানি করবেন না কখনোই।

সেন্সরের দিকে খেয়াল রাখুন: লিফটের সেন্সর কোথায়, তা একটু খেয়াল করলেই চিনতে পারবেন। বেশির ভাগ লিফটেই সেন্সরে হাত বা পা রাখলেই লিফটের দরজা খুলে যায়। যেকোনো পরিস্থিতিতে খারাপ কিছু ঘটলে সেন্সরে হাত দিয়ে দরজা খোলা রাখুন।

অনেকে লিফটে দরজা আটকে রেখে অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। সব কথা শেষ করে লিফটের ওঠা-নামার বোতাম টিপবেন।

ময়লা ফেলবেন না: আমরা বেখেয়ালে লিফটে ময়লা ফেলি। কেউ টিস্যু ফেলি, কেউবা আইসক্রিম বা কাগজের প্যাকেট ফেলি। আবার অনেকে হাঁচি-কাশি বা নাকের ময়লা ফেলেন লিফটে। এমন বেখেয়ালি আচরণ কখনো করবেন না। পানের পিক কখনোই ফেলবেন না।

পণ্য পরিবহনে খেয়াল রাখুন: লিফটে পণ্য পরিবহনের জন্য সব সময়ই আগে মানুষের চলাচলকে গুরুত্ব দিন। ভারী কোনো কিছু লিফটে পরিবহন করতে চাইলে খেয়াল রাখুন। যখন লিফট খালি থাকবে, তখন পণ্য পরিবহন করুন। খুব বেশি ভারী হলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। বাজার পরিবহন করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। বাজারের ব্যাগ থেকে পানি কিংবা অন্য কোনো তরল পড়ছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন। লিফটের মেঝে যেন কোনোভাবেই নোংরা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।

প্রয়োজনে লিফটকে না বলুন: আপনি যদি কোনো ভবনের তিনতলা পর্যন্ত চলাচল করেন, তাহলে সিঁড়ি দিয়ে চলাচল করুন। অসুস্থ না হলে সিঁড়ি দিয়ে নিচতলা থেকে দোতলা বা তিনতলা পর্যন্ত হেঁটে চলুন।

অন্যকে এগিয়ে রাখুন: লিফটে চলাচলের সময় অন্যের কষ্টকে গুরুত্ব দিন। অন্যের ব্যস্ততাকে সম্মান জানানোর চেষ্টা করুন। নারী ও শিশুদের চলাচলের ক্ষেত্রে সহায়তা করুন। একা একা শিশুদের লিফটে চড়তে দেবেন না।

পোষা প্রাণী বিষয়ে: আপনি যখন পোষা প্রাণী নিয়ে লিফটে উঠবেন, তখন সবার আগে পোষা প্রাণীটিকে প্রবেশ করাবেন। এরপর নিজে প্রবেশ করে নিজের কাছে রাখবেন।