ইজোনেন্স ১৮

লাল স্বর্গে প্রযুক্তির অনুরণন

নিজেদের প্রকল্প উপস্থাপন করছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি : সংগৃহীত
নিজেদের প্রকল্প উপস্থাপন করছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি : সংগৃহীত

আমাদের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিকে (আইইউটি) আমরা বলি লাল স্বর্গ। ১৯ অক্টোবর, আমাদের লাল স্বর্গে লেগেছিল উৎসবের হলুদ রং। পঞ্চমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎকৌশল বিভাগ আয়োজন করেছিল ‘ইজোনেন্স’। এবারের প্রধান অতিথি হয়ে উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি মো. আবদুস সবুর। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ওমর জাহ, তড়িৎকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. আশরাফুল হক এবং আয়োজন সমন্বয়কারী অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন।
আইইউটির প্রচলিত বিড়াল-কথন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘ইজো’ এবং ‘নেন্স’—দুটি মাসকটের হাত ধরে সূচনা হয় উৎসবের। মনোমুগ্ধকর পরিবেশে রোবোমেনিয়া, রোবো-সকার, প্রকল্প উপস্থাপন, ব্যবসায়িক ভাবনা প্রতিযোগিতা, পোস্টার উপস্থাপন, ম্যাটল্যাব কোডিং প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা—এই ৮টি ইভেন্টে প্রায় ৭০টি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা ১ হাজারেরও বেশি প্রযুক্তিপ্রেমীর পদচারণে দিনভর মুখরিত ছিল আইইউটি ক্যাম্পাস।
স্কুল–কলেজের খুদে বিজ্ঞানীদের প্রতিভা বিকাশে উৎসাহিত করতে তাদের জন্যও অনুষ্ঠানটি উন্মুক্ত ছিল। প্রকল্প উপস্থাপনে (প্রোজেক্ট শোকেসিং) দ্বিতীয় হলো রাফিহাত সালেহ ও তার দল। ওরা এসেছে সিলেট জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্কুল থেকে। সবার মন জয় করে নেয় তাদের বানানো রোবট। ওরা বলছিল, এই রোবট নাকি কদিন আগে বাংলাদেশ ঘুরে যাওয়া বিখ্যাত রোবট সোফিয়াকে চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম!
এবারের আসরের অন্যতম আকর্ষণ ছিল রোবো-সকার। রোবটরা খেলেছে ফুটবল, তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল রিমোটের সাহায্যে। সত্যিকার ফুটবলের মতো এই খেলায়ও ছিল ফাউল আর পেনাল্টি। মজার ধারাভাষ্যের সঙ্গে দর্শকের হইচই মিলে মনে হচ্ছিল যেন বিশ্বকাপের ম্যাচ চলছে! তরুণেরা যেন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে ভাবতে পারে, সে লক্ষ্যে ছিল ‘ব্যবসায়িক ভাবনার প্রতিযোগিতা’ (বিজনেস আইডিয়া কমপিটিশন)। এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ‘ম্যাটল্যাব কোডিং প্রতিযোগিতায়’ গতবারের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবারও প্রথম—আইইউটির হোসেইন মো. সিয়াম।
সোজা পথ ধরে চলতে পারা ‘লাইন ফলোয়ার’ রোবটদের ব্যাপক সমাগম হয়েছিল রোবোমেনিয়াতে। নিখুঁত বিশ্লেষণ আর দ্রুততার বিবেচনায় এই ইভেন্টে প্রথম হয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম ক্র্যাকার নাট’। দ্বিতীয় হয় টিম আইইউটি ইন্ট্রিপাইড। তড়িৎগতিতে রুবিকস কিউব মিলিয়ে তাক লাগিয়ে দেয় নটর ডেম কলেজের অর্ণব বণিক। এ ছাড়া অন্যান্য ইভেন্টে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ডিআইইউ, কলেজ পর্যায়ে হলিক্রস, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ তাদের সাফল্যের ছাপ রেখেছে। অনুষ্ঠানটির সহযোগী ছিল প্রথম আলো।

লেখক: শিক্ষার্থী, শেষ বর্ষ, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগ