রেলওয়েতে চাকরির স্বপ্ন থাকে অনেকেরই। আর এ স্বপ্নপূরণের সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সম্প্রতি তারা সহকারী স্টেশনমাস্টার পদে ২৭০ জন লোক নেবে বলে বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। যাঁরা এ পদে আবেদন করতে চান, তাঁদের অবশ্যই ৩০ নভেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে আবেদন করতে হবে।
আবেদনের যোগ্যতা: এ পদে আবেদন করতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই স্নাতক পাস হতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের বয়স হতে হবে ২৬-১১-১৫ তারিখে ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, এতিম ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়স ৩২ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য থাকবে।
আবেদন প্রক্রিয়া ও নিয়োগ পদ্ধতি: আবেদন ফরম বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট (www.railway.gov.bd) এই ঠিকানায় পাওয়া যাবে। এই ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফরম এ-৪ সাইজের কাগজে ডাউনলোড করে সংগ্রহ করতে হবে। আবেদন ফরম ও প্রবেশপত্রের সঙ্গে সম্প্রতি তোলা ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, পরীক্ষার ফি বাবদ ১০০ টাকা কোড-১-৫১৩১-০০০০-২০৩১ তে জমাদানের ট্রেজারি চালানের মূল কপি সংযুক্ত করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ‘চিফ পার্সোনেল অফিসার/পূর্ব, বাংলাদেশ রেলওয়ে, সিআরবি, চট্টগ্রাম’-এর দপ্তরে পৌঁছাতে হবে। আবেদনপত্র প্রেরণকালে খামের বাঁ দিকের ওপরের অংশে পদের নাম ও প্রার্থীর জেলার নাম স্পষ্টভাবে লিখতে হবে। আর এ নিয়োগ-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য রেলওয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে ডাকটিকিটসহ আবেদনকারীর ঠিকানা লেখা দুটি খাম দাখিল করতে হবে।
চিফ পার্সোনেল অফিসার (পূর্ব, বাংলাদেশ রেলওয়ে, চট্টগ্রাম) অজয় কুমার পোদ্দার টেলিফোনে জানান, আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। লিখিত পরীক্ষা হবে ৬০ নম্বরে। প্রতিটি প্রশ্নের মান থাকবে ১ নম্বর করে। বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে। অজয় কুমার পোদ্দার আরও বলেন, শুধু যাঁরা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন, তাঁদেরই মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ৪০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় আলাদাভাবে ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাস হতে হবে। এসব পরীক্ষার তারিখ ও প্রবেশপত্র বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। লিখিত পরীক্ষা হবে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী কেন্দ্রে।
পরীক্ষা প্রস্তুতি: লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশনমাস্টার তারেক আহমেদ বলেন, লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পাঠ্যবইগুলো পড়লে ভালো করা যাবে। বাংলা বিষয়ে ভালো করতে হলে ব্যাকরণ অংশে বেশি জোর দিতে হবে। কারণ, এখান থেকেই বেশি প্রশ্ন পাওয়া যাবে। ব্যাকরণ অংশে কারক, বিভক্তি, শব্দ, ভাষা, সন্ধি বিচ্ছেদ, সমাস, সমার্থক শব্দ, এক কথায় প্রকাশ, অনুবাদ, বানান শুদ্ধি, বাগধারা, বাক্য সংকোচন—এসব অধ্যায়গুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। আর ইংরেজিতে Tense, Voice, Article, Parts of speech, Correct spelling, Antonym, Narration, Translation, Noun এই অধ্যায়গুলো চর্চা করলে ইংরেজিতে ভালো করা যাবে। গণিতের জন্য পাটিগণিত থেকে লসাগু, গসাগু, ঐকিক নিয়ম, শতকরা, সুদকষা, লাভ-ক্ষতি, অনুপাত-সমানুপাত—এসব অধ্যায় ভালো করে চর্চা করলে প্রশ্ন পাওয়া যাবে। আর বীজগণিতের জন্য করতে হবে উৎপাদক, বর্গ সূত্রগুলো ও প্রয়োগ, গসাগু, সূচক, লগারিদম—এসব অধ্যায়। সাধারণ জ্ঞানে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রশ্ন থাকে। এ অংশে ভালো করতে হলে নিয়মিত পত্রিকা পড়া, দেশি-বিদেশি সমসাময়িক খবরগুলো নিজের আয়ত্তে করে নেওয়া। বিজ্ঞান, তথ্য ও প্রযুক্তি, পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক অংশের জন্য বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, দিবস, পুরস্কার ও সম্মাননা, সাম্প্রতিক ঘটনা—এসব সম্পর্কে জানা থাকলে ভালো করা যাবে বলে জানান তারেক আহমেদ।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার সময় সংশ্লিষ্ট সব সনদের (যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা, জাতীয়তা, জাতীয় পরিচয়পত্র/ভোটার আইডি কার্ড, প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত চারিত্রিক সনদ, মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পুত্র-কন্যা, রেলওয়ে পোষ্য অবর্তমানে নির্ভরশীল ভ্রাতা-ভগ্নি, এতিমখানা নিবাসী, শারীরিক প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, আনসার ভিডিপি, বিশেষ যোগ্যতা ইত্যাদির সনদ সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্বাক্ষরিত) মূল কপি দেখাতে হবে এবং সব সনদের এক সেট সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে। পোষ্য সনদের ক্ষেত্রে স্থায়ী পদে কর্মকর্তা/কর্মচারীর চাকরিকাল ন্যূনতম ১৫ বছর হতে হবে এবং অন্য কোনো পোষ্য রেলওয়েতে কর্মরত থাকলে তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ সংযুক্ত করতে হবে।