ঈদের দিন অনেকেই যখন পরিবারের সঙ্গে বাসায় সময় কাটাচ্ছিল, সাঈদ রিমন তখন বেরিয়েছিলেন মাংস সংগ্রহে। তাঁর কর্মসূচির নাম ‘গোশত টোকাই’। ফেসবুকে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর উদ্যোগের কথা, মাংস দানের আহ্বান জানিয়েছিলেন পরিচিত মানুষদের। যাঁরা আগ্রহ নিয়ে যোগাযোগ করেছিলেন, ঈদের দিন তাঁদের দুয়ারেই হাজির হয়েছেন রিমন। একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে রাজধানীর উত্তরা, বসুন্ধরা, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, নিকেতন ও মিরপুর এলাকায় ঘুরেছেন তিনি। সংগ্রহ করেছেন ৭০ কেজি কোরবানির পশুর মাংস।
ঈদের দিন সংগ্রহ করা মাংস দিয়েই ২৩ জুলাই প্রায় ৬০০ মানুষের জন্য খাবার রেঁধেছিলেন সাঈদ রিমন। টঙ্গী ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন এলাকার অসহায় মানুষদের মধ্যে বিতরণ করেছেন এই রান্না করা খাবার। সাঈদ রিমন বলেন, ‘গত বছর ঠিক একইভাবে একটি গরুর সমপরিমাণ গোশত টুকিয়েছিলাম। বন্ধু ও স্বজনদের কাছ থেকে পেয়েছিলাম পোলাওয়ের চালসহ রান্নার অন্যান্য উপকরণ। তখন এক হাজার অসহায় মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে পেরেছিলাম।’
সাঈদ রিমন পেশায় বস্ত্র প্রকৌশলী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা বিষয়ে ছবি পোস্ট করে মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেন তিনি। অনেক সময় প্রচারপত্র হাতে হাজির হন স্টেশনে, স্কুলে, মাঠে। মাদকমুক্ত থাকা, ছিনতাইকারীর কবল থেকে বাঁচা, সড়কে দুর্ঘটনা এড়িয়ে পথচলাসহ প্রায় সাড়ে ৫০০ বিষয়ে সচেতনতামূলক ছবি রয়েছে তাঁর। নানা চরিত্রের বেশে তোলা রিমনের কিছু আলোকচিত্র ব্যবহার করে মানুষকে সচেতন করছে বরগুনা, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও নাটোর জেলা পুলিশ।
সচেতনতার বার্তা ছড়ানো রিমন করোনাকালের শুরুতেই দাঁড়িয়েছেন অসহায় মানুষের পাশে। এই উদ্যোগে তিনি পাশে পেয়েছেন শুভাকাঙ্ক্ষীদের। তাঁদের সহায়তায় কেনা খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন অসহায় মানুষের হাতে, কখনো রান্না করা খাবারের প্যাকেট তুলে দিয়েছেন রাজধানীর নিরন্ন মানুষের হাতে। রিমন বলেন, ‘এই লকডাউনেও আমার সেই চেষ্টা অব্যাহত আছে।’