পিরিয়ড বা মাসিক মেয়েদের একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। এ সময়ে নারীদের গর্ভাশয়সহ এর আশপাশে অর্থাৎ পেটে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা অনুভূত হয়। মাঝেমধ্যে অনেকের এই ব্যথা অসহনীয় হয়ে ওঠে। নিয়মিত যোগব্যায়াম চর্চার মাধ্যমে পিরিয়ডের সব সমস্যাই ধীরে ধীরে দূর হয়।
মাসিকের সময়টাতেও যোগব্যায়াম করা যায়। তবে এ সময় মেয়েদের শরীর যেহেতু খুব সংবেদনশীল থাকে, তাই খুব সাবধানে আসন বা প্রাণায়াম করতে হবে। যেসব আসন বা প্রাণায়াম করলে পেটে সরাসরি চাপ পড়ে, এমন কোনো কিছু না করা ভালো। এ সময় জটিল কোনো আসন না করে সহজ আসনগুলো চর্চা করা ভালো। মাসিকের সময় খুব বেশি ব্যথা হলে এক গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ ঘি মিশিয়ে মাসিক চলাকালীন প্রতিটা দিন খান, ব্যথা প্রশমিত হবে। সেই সঙ্গে এমন কিছু আসন আছে, যা মাসিক চলাকালীন করলে ব্যথা কমানো যায়। নিচে এমন তিনটি যোগব্যায়াম দেখানো হলো।
যেভাবে করবেন
সোজা চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন, হাঁটু মুড়ে পা দুটোকে নিতম্বের কাছে রাখুন, দুই পায়ের পাতার মাঝখানে এক–দেড় ফুট দূরত্ব রাখুন। হাত দিয়ে গোড়ালির ওপরের অংশ ধরুন। শ্বাস টেনে কোমর ও নিতম্বকে ওপরের দিকে ওঠান। কাঁধ, মাথা, গোড়ালি মাটির সঙ্গেই লেগে থাকবে। আসন থেকে নেমে আসার সময় শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে কোমরকে মাটির সঙ্গে ঠেকান। শবাসনে বিশ্রাম নিন।
সময়কাল
প্রতিদিন ৩০-৬০ সেকেন্ড করে ৪-৬ বার করুন।
যেভাবে করবেন
উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাতের পাতা মাটির সঙ্গে ঠেকিয়ে রেখে হাত দুটো বুকের দুই পাশে রাখুন। হাতের কনুই ওপরের দিকে উঠে থাকবে এবং হাত দুটো বুকের সঙ্গে সেঁটে থাকবে। পা সোজা থাকবে এবং পায়ের পাতা পরস্পরের সঙ্গে মিলে থাকবে। পায়ের পাতা পেছনের দিকে টানটান অবস্থায় মাটির সঙ্গে লেগে থাকবে। শ্বাস টেনে বুক এবং মাথা ধীরে ধীরে ওপরে ওঠান। তলপেটের নিচের অংশ মাটির সঙ্গে লেগে থাকবে। মাথা ওপরের দিকে তোলার সময় গ্রীবা যতটা পেছনের দিকে মুড়তে পারেন, মুড়ে নিন।
সময়কাল
৩০ সেকেন্ড করে ৩ বার।
উপকারিতা
গর্ভাশয়ের মালিশ হয়। সার্ভাইক্যাল স্পন্ডেলাইটিস, স্লিপডিস্ক ইত্যাদি মেরুদণ্ডের রোগে এই আসন গুরুত্বপূর্ণ।
যেভাবে করবেন
দুই পায়ের পাতা ও গোড়ালি পরস্পরের সঙ্গে মিলিয়ে সামনের দিকে রাখুন। চেষ্টা করবেন যেন গোড়ালির পেছনের অংশ মূত্রেন্দ্রিয় এবং পায়ুর মধ্যবর্তী অংশে লেগে থাকে। দুই হাঁটু মাটির সঙ্গে লাগানোর চেষ্টা করবেন। দুই হাত দিয়ে পায়ের আঙুলগুলো একসঙ্গে ধরে রাখতে পারেন বা হাত জ্ঞান মুদ্রার স্থিতিতে দুই হাঁটুর ওপরে রাখুন। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন।
সময়কাল
৩০ সেকেন্ড করে ৩-৪ বার।