যেমন হাঁটা তেমন জুতা

হাঁটার সঙ্গে মিলিয়ে নিন জুতাজোড়াকে। মডেল: আয়েশা ও অভি, জুতা: অ্যাপেক্স, ছবি: সুমন ইউসুফ
হাঁটার সঙ্গে মিলিয়ে নিন জুতাজোড়াকে। মডেল: আয়েশা ও অভি, জুতা: অ্যাপেক্স, ছবি: সুমন ইউসুফ

‘সুপ্রভাত’, বলে মুচকি হাসি দিলেন। হাঁটতে গিয়ে দেখা হলো পরিচিত একজনের সঙ্গে। বাচ্চা ঘুম থেকে উঠে যাওয়ার আগেই ভোরের হাঁটা শেষ করেন রেজিনা পারভীন। বাসায় ফিরে সকালের নাশতা সেরে বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে হেঁটেই বাসায় ফেরেন। এটা তাঁর প্রতিদিনের রুটিন। স্কুল ছুটির দিনও বাদ দেন না হাঁটা। নিয়ম করে ভোরে হাঁটতেই হয় তাঁকে। স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ সচেতন তিনি। বাড়তি মেদ ঝরাতে তা–ই বেছে নিয়েছেন হাঁটা।

ব্যাংকের বসা চাকরি করে রায়হাত আজিমের মেদ জমে গেছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রেডমিলে দৌড়ানোর। ট্রেডমিল কিনতে গিয়ে জানতে পারলেন জুতা ছাড়া এই যন্ত্রে দৌড়ানো যাবে না। এ রকম হাঁটা, দৌড় কিংবা ব্যায়ামের জন্য জুতা তো লাগবেই। ফিট থাকতে হলে সচেতনতার শেষ নেই। হাঁটার সময় পায়ের ওপর দিয়ে বেশ ধকল যায়। পায়ের আরাম ও সুরক্ষার জন্য কিনতে হবে হাঁটার বিশেষ জুতা।

অ্যাপেক্সের সহকারী ব্যবস্থাপক (ব্র্যান্ড) রিফাতুল করিম হাঁটা বা দৌড়ানোর জুতা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দিলেন। এ ধরনের জুতা কী দিয়ে তৈরি হয়, কখন কোন জুতা পায়ে দেবেন, কতটা আরামদায়ক হয় ইত্যাদি আদ্যোপান্ত ব্যাখ্যা করলেন তিনি।

কী ধরনের জুতা

স্পোর্টস বা স্নিকার জুতাগুলো সাধারণত হাঁটা, দৌড় ও ব্যায়ামের জন্য ব্যবহার করা হয়। এসব জুতা একেবারেই ক্যাজুয়াল।

উপাদান

হাঁটার জুতাগুলোর সোল খুব হালকা হয়। এতে হাঁটা বা দৌড়ানোর সময় পা ভারী মনে হবে না। জুতার ভেতরে ব্যবহার করা হয় খুব নরম একধরনের ফোম। এটা পা’কে আরামদায়ক অবস্থায় রাখে। ম্যারাথন বা পেশাগত দৌড়বিদদের জন্য রয়েছে এর চেয়ে বেশি মজবুত জুতা। যেহেতু বাইরে দৌড়ানোর জন্য, তাই এগুলোর ব্যবহারিক কাজ আরও বেশি হয়। নতুন কিছু জুতা বাজারে আসছে, যেগুলো ঘাম শোষণ করতে পারে কিংবা ঘাম হতে দেয় না। অনেক জুতাতে ঘৃতকুমারীর (অ্যালোভেরা) নির্যাস ব্যবহারও করা হয় এ জন্য।

যাঁরা পরেন

সাধারণত ১৫-৫৫ বছর বয়সীরা হাঁটা বা ব্যায়ামের জন্য জুতা কিনে থাকেন। এসব জুতা খেলাধুলা করার জন্যও ব্যবহার করেন অনেকে। মেদ ঝরানোর বাইরেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত হাঁটেন অনেকে। তাঁদের জন্য জুতা কেনা বাঞ্ছনীয়।

কোথায় কোন জুতা

নারীদের ফিতা ছাড়া হাঁটার জুতাগুলো ইদানীং খুব জনপ্রিয়। তবে এই জুতা বাইরে হাঁটার জন্য ঠিক আছে। ট্রেডমিলে দৌড়ানোর জন্য কিনতে হবে যেসব জুতায় ফিতা আছে, সেগুলো। নইলে দৌড়াতে গিয়ে হঠাৎ জুতা খুলে যেতে পারে। তবে ব্যায়াম করার জন্য যেকোনোটাই কিনতে পারেন।

ঋতুভেদে জুতা

বাইরের দেশে ঋতুভেদে জুতার উপাদানে পার্থক্য থাকলেও আমাদের দেশে নেই। আবহাওয়া অনুযায়ী আমাদের দেশের জুতাগুলো যেকোনো ঋতুর জন্য উপযোগী। সাধারণত এসব জুতার পরিচয় আসলে ‘গ্রীষ্মকালীন’। শীতে ভারী মোজা পরে নিলেই চলে। গরমে পাতলা মোজা দিয়ে পরা যাবে। মোজা ছাড়া জুতা পরা যাবে না, কথাটা ঠিক নয়। অনেকের পায়ে দুর্গন্ধ হয়। মোজা পরলে পায়ের দুর্গন্ধ মোজাতেই আটকে থাকবে। সেটা ধুয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু মোজা ছাড়া জুতা পরলে পায়ের দুর্গন্ধ জুতাতে গিয়ে আটকাবে। সেই দুর্গন্ধ দূর করা মুশকিল!

কেনাকাটা

ব্র্যান্ডের জুতা ছাড়াও জুতার বাজার ঘুরলে হাঁটা বা দৌড়ানোর জন্য জুতা পাবেন। কিনতে পারবেন অনলাইনেও। ব্র্যান্ড ও ননব্র্যান্ডের মধ্যে ৫০০ থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকার মধ্যে সবকিছু মিলিয়ে মনের মতো জুতা পেয়ে যাবেন।