যাঁদের মৃত্যু আজও রহস্যে ঢাকা

>

বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনের অনেক গল্পই চলে আসে সাধারণের সামনে। খ্যাতির কারণেই তাঁদের জীবন হয়ে দাঁড়ায় খোলা কাগজের মতো। কিন্তু তাই বলে বিখ্যাতরা সব সময় স্বচ্ছ স্ফটিকের মতো হন না। অনেকেরই জীবনে থাকে নানা রহস্য। আসুন, জেনে নেওয়া যাক এমনই কিছু বিখ্যাত ব্যক্তির কথা, যাঁদের মৃত্যু আজও রহস্যে ঢাকা।

নেপোলিয়ন বোনাপার্ট। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

১. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট
সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসিত অবস্থায় ১৮২১ সালের ৫ মে মারা যান নেপোলিয়ন বোনাপার্ট। তাঁর আনুষ্ঠানিক মৃত্যুসনদে লেখা ছিল, পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান তিনি। তবে ফ্রান্সের এই সাবেক সম্রাট জীবিত অবস্থাতেই নিজের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে গেছেন, যা এখনো সমাধা হয়নি। মৃত্যুর তিন সপ্তাহ আগে নেপোলিয়ন একটি ইচ্ছাপত্র (উইল) লিখেছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন, ‘সময়ের আগেই মারা যাচ্ছি আমি, আমাকে হত্যা করেছে ইংরেজ শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের গুপ্তহত্যাকারীরা।’

ধারণা করা হয়, নেপোলিয়নকে খুবই পরিকল্পিতভাবে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। মৃত্যুর ১৯ বছর পরে ১৮৪০ সালে প্যারিসে মর্যাদাপূর্ণ শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্য নেপোলিয়নের মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়েছিল। ওই সময় নেপোলিয়নের মরদেহ তুলনামূলক বেশ ভালো অবস্থায় ছিল। কিছু বিজ্ঞানী বলে থাকেন, বিষ হিসেবে আর্সেনিক প্রয়োগের কারণেই নেপোলিয়নের মরদেহে নাকি স্বাভাবিক মাত্রায় পচন ধরেনি। ১৯৬১ সালে এক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় ধরা পড়ে যে নেপোলিয়নের চুলে অত্যধিক মাত্রায় আর্সেনিক ছিল। ২০০৮ সালে আরেক পরীক্ষায় দেখা গেছে, নেপোলিয়নের পুরো জীবনের চারটি পর্যায়েই তাঁর দেহে আর্সেনিকের উপস্থিতি অতিরিক্ত পরিমাণে ছিল। এমনকি তাঁর ছেলে ও স্ত্রীর দেহেও আর্সেনিকের উপস্থিতি বেশি ছিল।

এসব পরীক্ষা থেকে পাওয়া উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, দীর্ঘ সময় ধরে নেপোলিয়নের দেহে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। বিষ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল আর্সেনিক। কারণ, অল্প মাত্রায় দীর্ঘ সময় আর্সেনিক প্রয়োগ করা হলেও তা সহজে চিহ্নিত করা যায় না।

এদিকে ২০০৪ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসিত থাকার সময় নেপোলিয়নের দেহে নানা ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল। আর সেই সব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেই ফরাসি সমরনায়কের হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।

অবশ্য নেপোলিয়নের যে ক্যানসার হয়েছিল, তার সপক্ষেও অনেকে যুক্তি তুলে ধরেছেন। ২০০৭ সালের এক গবেষণায় নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, এই সাবেক সম্রাটের আদতেই ক্যানসার হয়েছিল এবং তা দেহের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে।

তবে কোনো গবেষণা নেপোলিয়নের মৃত্যু নিয়ে রহস্য এখনো দূর করতে পারেনি। ফলে সর্বসম্মতভাবে নেপোলিয়নের মৃত্যুরহস্যের কূলকিনারা হয়নি।

অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট। ছবি: এএফপি

২. অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট
মূলত দুটি কারণে বিশ্বনন্দিত অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট। প্রথমত, ১৯৩২ সালে প্রথম নারী বৈমানিক হিসেবে একাকী আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর উড়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয়ত, তাঁর অন্তর্ধান রহস্য।

১৯৩৭ সালের জুলাইয়ের প্রথম দিকে ইয়ারহার্ট বিশ্বভ্রমণে বের হন। সঙ্গী ছিলেন নাবিক ফ্রেড নুনান। প্রাথমিকভাবে নিউগিনি থেকে হাউল্যান্ড দ্বীপের দিকে উড়োজাহাজ নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। প্রশান্ত মহাসাগরের এই দ্বীপে যাওয়ার পথেই হারিয়ে যায় উড়োজাহাজটি। যে নৌযান ইয়ারহার্টের উড়োজাহাজটিকে হাউল্যান্ড দ্বীপের দিকনির্দেশনা দিচ্ছিল, ওই নৌযানের সঙ্গে ইয়ারহার্টের উড়োজাহাজের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। এরপর তন্ন তন্ন করে খুঁজেও অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট ও ফ্রেড নুনানের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। উড়োজাহাজের কোনো ধ্বংসাবশেষও মেলেনি। এমনকি আজ পর্যন্ত জানা যায়নি, ইয়ারহার্টের ভাগ্যে আদতে কী ঘটেছিল।

এ নিয়ে কয়েক দশকজুড়ে নানা গবেষণা হয়েছে। একদল মনে করেন, ইয়ারহার্ট মারা যাননি এবং নিকুমারোরো নামের একটি দ্বীপে বাকি জীবন কাটিয়েছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ ফর হিস্টোরিক এয়ারক্রাফট রিকভারি নামের একটি সংস্থা গবেষণা চালিয়ে বলেছে, ওই দ্বীপে নাকি ইয়ারহার্টের সেই উড়োজাহাজের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পাওয়া গেছে। সংস্থাটির দাবি, সেখানে ইয়ারহার্টের দেহাবশেষও (খুলি ও হাড়গোড়) পাওয়া গেছে।

তবে এই দাবি সবাই মেনে নেননি। কিছু গবেষক মনে করেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামার মধ্যে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর জাপানের হাতে বন্দী হয়েছিলেন অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট। কারও কারও আবার দাবি, ইয়ারহার্ট আসলে তৎকালীন মার্কিন সরকারের গুপ্তচর ছিলেন। তাঁর উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনাটি সাজানো ছিল। মার্কিন বাহিনীর হাতে বন্দী ছিলেন তিনি এবং ১৯৪৫ সালের পরে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। বাকি জীবনটা নাকি অন্য পরিচয়ে নিউ জার্সিতে কাটিয়েছেন অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট!

অ্যাডগার অ্যালান পো। ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আর্কাইভস অ্যান্ড রোডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সৌজন্যে

৩. অ্যাডগার অ্যালান পো
এই লেখক বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। রহস্য–রোমাঞ্চ ছোটগল্পের পাশাপাশি কবিতাও লিখতেন তিনি। মাঝেমধ্যে ছবিও আঁকতেন পো। গদ্যে যেমন রহস্যের জাল বুনেছিলেন তিনি, ঠিক তেমনি তাঁর জীবনের শেষটাও ছিল রহস্যে মোড়া। ১৮৪৯ সালের অক্টোবরে মৃত্যুর ঠিক ছয় দিন আগে নিখোঁজ হন পো। অক্টোবরের ৩ তারিখ বাল্টিমোরের এক পানশালায় হঠাৎ আবির্ভূত হন তিনি। ওই সময় অস্পষ্ট ও অসংলগ্নভাবে কথা বলছিলেন এই লেখক, পরনে ছিল আরেকজনের জামা। এরপর আশপাশের মানুষকে বলে নিজের এক বন্ধুকে খবর দেন পো। কিন্তু ওই বন্ধু পানশালায় এসে পৌঁছানোর আগেই হাসপাতালে নিতে হয় তাঁকে। এই লেখক তখন প্রলাপ বকছিলেন এবং প্রায় উন্মাদের মতো আচরণ করছিলেন।

হাসপাতালে এর পরের কয়েক দিন প্রচণ্ড জ্বরে ভুগেছিলেন অ্যাডগার অ্যালান পো। অসংলগ্ন কথা বলছিলেন বিকারগ্রস্তের মতো। অ্যাডগারের দেখভাল করেছিলেন চিকিৎসক জন জে মোরান। তিনি জানিয়েছিলেন, হাসপাতালে একটি নাম বারবার বলছিলেন পো। তা হলো ‘রেনল্ডস’। নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এবং পানশালায় ফিরে আসার ঘটনা সম্পর্কে স্পষ্টভাবে কিছুই বলতে পারেননি তিনি। অবশেষে ৭ অক্টোবর রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় এই লেখকের।

এরপরই লেখকের মৃত্যুর কারণের জল্পনা ডালপালা মেলে। ওই সময় চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত রোগে মৃত্যু হয় অ্যাডগারের। কিন্তু তাঁর দেহের কোনো ময়নাতদন্ত হয়নি। এমনকি চিকিৎসাসম্পর্কিত নথিও হাওয়া হয়ে যায়। তৎকালীন সংবাদপত্রগুলোতে রটেছিল, অতিরিক্ত মদ্যপানে প্রাণ গেছে অ্যাডগারের। তবে পরবর্তী সময়ে ভিন্ন ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, জীবনের শেষের দিকে পানাভ্যাস ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। সুতরাং অতিরিক্ত মদ্যপানে মৃত্যুর বিষয়টি খুব একটা যৌক্তিক নয়।

আবার অনেক গবেষক মনে করেন, ভোট জালিয়াতির কাজে সংশ্লিষ্ট হয়ে গিয়েছিলেন অ্যাডগার অ্যালান পো। তৎকালীন আমেরিকায় জোর করে একজনকে দিয়ে একাধিক ভোট দেওয়ার একটি রীতি ছিল। এ ক্ষেত্রে একজনকে জোর করে আটকে একাধিক ভোটকেন্দ্রে পাঠানো হতো। এসব কাজে ছদ্মবেশ ধারণ ছিল স্বাভাবিক বিষয়।

তবে এসবই অনুমিত তত্ত্ব। অ্যাডগার অ্যালান পোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ আজও অজানাই থেকে গেছে।

ভল্‌ফগাং আমাডিউস মোৎসার্ট। অলংকরণ: মাসুক হেলাল

৪. ভল্‌ফগাং আমাডিউস মোৎসার্ট
১৭৯১ সালের শেষ ভাগ। বিশ্বখ্যাত সুরকার মোৎসার্ট কাজ করছিলেন ‘রিক্যুয়েম’ নিয়ে। এর মধ্যেই হুট করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর পাকস্থলী ও অস্থিসন্ধিতে প্রবল ব্যথা। কিছুদিনের মধ্যেই পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন মোৎসার্ট। এরপর তাঁর শরীর দিন দিন ফুলে যেতে থাকে, বের হচ্ছিল দুর্গন্ধ। একপর্যায়ে প্রলাপ বকতে শুরু করেন এই কালজয়ী সুরকার। চিকিৎসকদের প্রাণান্ত চেষ্টার পরও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। ‘রিক্যুয়েম’ রচনা অসমাপ্ত রেখেই ওই বছরের ডিসেম্বরের ৫ তারিখ মারা যান তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৩৫ বছর।

আনুষ্ঠানিকভাবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, মারাত্মক জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মোৎসার্ট। কিন্তু সুরকারের মৃত্যুর সপ্তাহখানেকের মধ্যেই জার্মানির এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষপ্রয়োগে মারা গেছেন মোৎসার্ট। তাঁর স্ত্রী জানিয়েছিলেন, মৃত্যুর কিছুদিন আগেই নাকি বিষপ্রয়োগের আশঙ্কা জানিয়েছিলেন মোৎসার্ট। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি জানি আমাকে মরতেই হবে। কেউ আমাকে বিষ দিয়েছে।’ মোৎসার্ট আরও বলেছিলেন, তাঁর মৃত্যুর সময় হিসাব করেই নাকি বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল।

স্বাভাবিকভাবেই মোৎসার্টের প্রতিদ্বন্দ্বী সুরকারের দিকে ছোড়া হয়েছিল অভিযোগের তির। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণাদি ছিল না। আবার অভিযুক্তরাও এমন অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছিলেন।

কোনো কোনো গবেষকের দাবি, ‘ফ্রিম্যাসনরি’ নামের একটি গোপন সংগঠন মোৎসার্টকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করেছিল। কারণ, ওই সংগঠনের গোপন প্রতীকের বিস্তারিত নাকি ‘দ্য ম্যাজিক ফ্লুট’ নামের অপেরায় উন্মোচন করেছিলেন মোৎসার্ট।

আবার অনেকে বলেন, শূকরের মাংস থেকে তৈরি খাবার খেয়েই নাকি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মোৎসার্ট। অবশ্য এর সপক্ষে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু এসব জল্পনাকল্পনার কোনো কিছুই প্রমাণিত হয়নি। কারণ, মোৎসার্টের চিকিৎসাসম্পর্কিত সব নথিপত্র এবং তাঁর দেহাবশেষ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই আর বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার উপায় নেই। মোৎসার্টের মৃত্যুর সঠিক কারণও তাই আর জানা যায় না।

ধারণা করা হয়, ছবির এই ব্যক্তিই ক্রিস্টোফার মারলো। ছবি: করপাস ক্রিস্টি কলেজের সৌজন্যে

৫. ক্রিস্টোফার মারলো
এই ব্রিটিশ কবি ও নাট্যকার মারা গিয়েছিলেন ১৫৯৩ সালের ৩০ মে। বন্ধুদের সঙ্গে মারামারি করেছিলেন মারলো। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, রেস্তোরাঁর বিল কে দেবে, তা নিয়ে নাকি ঝগড়ার সূত্রপাত। ওই সময় উপস্থিত ইনগ্রাম ফ্রেজার নামের এক ব্যক্তি মারলোকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ইংরেজ কবি।

ক্রিস্টোফার মারলোর মৃত্যু নিয়ে এরপর বিস্তর গবেষণা হয়েছে। একদল গবেষকের দাবি, তৎকালীন ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিরাগভাজন হওয়াতেই নিহত হন মারলো। তিনি একজন নাস্তিক ছিলেন এবং এতে ভীষণ ক্ষুব্ধ ছিলেন রানি এলিজাবেথ। বলা হয়ে থাকে, রানি এলিজাবেথের নির্দেশেই নাকি মারলোকে হত্যা করা হয়। এমন ধারণায় ঘৃতাহুতি দেয় মারলোর মৃত্যুর পরের কিছু ঘটনা। এর এক মাস পরই মারলো হত্যার মূল দোষী ইনগ্রাম ফ্রেজারকে রানি ক্ষমা করে দেন এবং মুক্তি দেন।

কিছু গবেষক বলেন, রানি এলিজাবেথের প্রিভি কাউন্সিলের (পরামর্শক গোষ্ঠী) কয়েকজন সদস্যও নাস্তিক ছিলেন। এবং নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করে দেবেন মারলো—এমন আশঙ্কা থেকেই ব্রিটিশ নাট্যকারকে হত্যা করা হয়। এই ধারণায় উসকানি দেয় কিছু সত্যি ঘটনা। মারলো হত্যায় সংশ্লিষ্ট সবাইকেই পরবর্তীকালে দায়মুক্তি দেওয়া হয়। শুধু তা–ই নয়, তাঁদের জন্য অনেক সম্পদও নাকি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

অবশ্য কারও কারও মতে, ক্রিস্টোফার মারলো আসলে ছুরিকাঘাতে মরেননি। পুরো ঘটনাই ছিল সাজানো। এই ঘরানার গবেষকদের দাবি, ভিন্ন পরিচয়ে বেঁচে ছিলেন মারলো। লিখেছিলেন নাটক ও কবিতাও। আর সেগুলো প্রকাশিত হয়েছিল ‘উইলিয়াম শেকসপিয়ার’ নামে!

তবে কি ক্রিস্টোফার মারলো আর উইলিয়াম শেকসপিয়ার একই ব্যক্তি? সে এক লম্বা ‘বিতর্কিত’ গল্প। তা না হয় আরেক দিনের জন্য তোলা থাক।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, হিস্ট্রি ডট কম, নিউইয়র্ক টাইমস, লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, মেন্টাল ফ্লস, ফোর্বস, নেচার ডট কম ও আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি