মুখে সাধারণত ডেন্টাল ক্যারিজ, মাড়ির রোগ ও পেরিওডেন্টাল ডিজিজ, ক্যানসার, অসমান দাঁত এবং ডেন্টাল সিস্টের মধ্যে মুখের ঘা অন্যতম। এই ঘা নানা কারণেই হতে পারে। যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, হূদেরাগ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ গ্রহণ করছে, তাদের মুখে জীবাণু বিস্তার করে ঘা করতে পারে। লিউকোমিয়া, লাইকেন প্লানাস ইত্যাদি কারণেও মুখে ঘা হতে পারে। তবে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে মাড়ির রোগ অধিকমাত্রায় লক্ষণীয়। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, যাদের মুখে দন্তমল (ডেন্টাল প্লাক) এবং জিনজিভাইটিস রয়েছে, তাদের ডায়াবেটিসের কারণে মাড়ির রোগ বেড়ে পরে দাঁত পড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে মাড়িতে প্লাক জমা হয়ে থাকলে তা অবশ্যই স্কেলিং করিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগের সঠিক চিকিৎসা বা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।মুখের ঘায়ের মধ্যে অন্যতম হলো এপথাস আলসার। ভিটামিন ‘বি’র স্বল্পতা, দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা, মুখ অপরিষ্কার, মানসিক অস্থিরতা ইত্যাদি কারণে এপথাস আলসার বেশি হয়ে থাকে। দুশ্চিন্তা দূর, ঘুম স্বাভাবিক হলে, মুখ পরিষ্কার এবং ভিটামিনের স্বল্পতা হতে না দিলে এপথাস আলসার হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়। সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ধূমপান, জর্দা দিয়ে পান ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে, তাদের মুখের ঘা বেশি হয় এবং মুখে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কাও বেশি। অনেকেই তামাক পাতাকে হাতের তালুতে নিয়ে চুনের সঙ্গে মিশিয়ে গালের মধ্যবর্তী স্থানে রাখে। এভাবে দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে ওই স্থানে ঘা হতে পারে এবং পরে তা ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।যারা জর্দা বা তামাক পাতা পানের সঙ্গে খায়, তাদের মুখে ক্যানসারের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ।যারা ধূমপান ও তামাক পাতা একসঙ্গে ব্যবহার করে, তাদের ঝুঁকি শত ভাগ।চিকিৎসার পরও যদি মুখের ঘা দু-তিন সপ্তাহ স্থায়ী হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এর সঠিক কারণ বের করা উচিত। কারণ, ঘা বা সাদা ক্ষতগুলো ক্যানসারের পূর্বাবস্থার ক্ষত কি না, তা নিশ্চিত হওয়া উচিত। বারডেম হাসপাতাল।