কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নে গত ১ মে কমিউনিটি ক্লিনিকে চালু হয়েছিল প্রসূতিসেবা। এবার আরও বড় পরিসরে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রেও এই সেবা কার্যক্রম চালু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে ওই কেন্দ্রে সাতজন প্রসূতি নারী সন্তান প্রসব করেছেন। দুর্গম এলাকায় প্রসূতিসেবা চালু হওয়ায় এলাকার প্রসূতি নারীদের দুর্ভোগ কমেছে।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় ২০ বছর আগে উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন চিকিৎসক ও তিনজন স্বাস্থ্য সহকারী কর্মরত আছেন। এই দুর্গম এলাকায় প্রসূতি নারীদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কক্সবাজার সদরে যেতে হতো। এতে স্বাস্থ্যগত ঝঁুকিও তৈরি হতো। তবে গত ১ মে এই এলাকায় একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রসূতি সেবা চালু হওয়ায় নারীদের এই দুর্ভোগ কমেছে। গত ১৪ অক্টোবর থেকে মাতারবাড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও প্রসূতিসেবা চালু হয়। এতে অনেক নারী জরুরি প্রসূতি সেবা পাচ্ছেন।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরতরা জানান, এখানে প্রসূতিদের চিকিৎসার পাশাপাশি বিনা মূল্যে ওষুধও দেওয়া হয়। সন্তান প্রসব করার সময় কেউ মারা যায়নি বলে জানান ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা ইয়াকুব আলী।
সাইরার ডেইল এলাকার বাসিন্দা আব্দুল গফ্ফার জানান, দুই বছর আগে তাঁর প্রথম সন্তান হয় চকরিয়ার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে। সেখানে খরচ হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। কিন্তু এবার মাতারবাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের সময় এক টাকাও লাগেনি। বরং উল্টো প্রসবের পর বিনা মূল্যে ওষুধপত্র পাওয়া গেছে।
স্থানীয় পরিবারকল্যাণ সহকারী সুলতানা বেগম বলেন, দিনের পাশাপাশি রাতেও নারীদের প্রসূতিসেবা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে এলাকার প্রসূতি নারীদের প্রসবকালীন (ডেলিভারি) সেবা নেওয়ার জন্য এখন আর বাইরে যেতে হচ্ছে না।
স্থানীয় মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক অছিউর রহমান বলেন, এলাকার বাইরে নারীদের প্রসূতিসেবা নিতে গিয়ে অনেক টাকা খরচ হয়। এখন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে প্রসূতিসেবা চালু হওয়ায় নারীরা ভোগান্তির কবল থেকে রক্ষা পাবেন। জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছেরাজ আহমেদ বলেন, দুর্গম এলাকার নারীদের প্রসূতিসেবা নিশ্চিত করতে মাতারবাড়ি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে প্রসূতিসেবার কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এতে এলাকার অসহায় নারীরা ওই কেন্দ্রে গিয়ে সহজেই বিনা মূল্যে প্রসূতিসেবা পাচ্ছেন।