মনের বাক্স
মনের বাক্স

ভালো থেকো প্রিয়তমা শহর

পাঠকের সুখ–দুঃখ, হাসি–আনন্দ, পছন্দ, ভালোলাগা, ভালোবাসাসহ যে কোনো না বলা কথা শুনতে চায় মনের বাক্স। প্রতি সপ্তাহে পাঠকের পাঠানো সেসব লেখা থেকে নির্বাচিত কিছু লেখা আজ প্রকাশিত হলো এখানে

আজব সময়

বর্তমান সময়টা বড্ড ছলনাময়ী। হারিয়ে ফেলেছে যেন তার অপরূপ সৌন্দর্য আর রঙিন ডানাগুলো। এখন সবকিছুই যেন অগোছালো মনে হয়। স্বপ্নগুলো যেন ধরা দিয়েও দিচ্ছে না ধরা। মনের মধ্যে নেই কোনো সুখ। যেখানে মুক্ত পাখির মতো খোলা আকাশে উড়ে বেড়ানোর কথা ছিল, আজ সেখানে বদ্ধ ঘরের কোনায় আটকে পড়া নিতান্ত এক অসহায় বালিকা আমি। কী একটা বাজে সময় পার করছি!

এত কিছুর পরও যখন কেউ জিজ্ঞেস করে, ‘কেমন আছ?’

ঠোঁটের কোণে মিষ্টি একটা হাসি রেখে বলতে হয়, ‘হ্যাঁ, আমি ভালো আছি। অনেক ভালো।’

সত্যিই এ এক আজব সময়, তাই না?

জেসমিন আক্তার

চোখে আজও আছ তুমি

আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকার কারণে তোমাকে অনেকবার দেখার সুযোগ হয়েছে। হয়তো তাই মনের অজান্তে তোমাকে ভালো লেগে গেছে। কিন্তু আত্মীয়তার দোহাই দিয়ে তুমি দূরে সরে আছ। কেন তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই, তা তোমাকে জানানোর পরও ফেসবুকে ব্লক করে রেখেছ। হোয়াটসঅ্যাপে দু–একটা মেসেজের জবাব পাই, তা–ও যদি আমি নক করি।

তবু আমার চোখে আজও আছ তুমি, সত্যি অনেক ভালোবাসি তোমায়।

সাদেক, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম

তুমি আমার ভুতু

ভুতু, বলে বোঝাতে পারব না আমি তোমাকে ঠিক কতটা মিস করি। তুমি কি জানো, আমি তোমাকে ঠিক কতটা ভালোবাসি?

রাতের আকাশে যত নক্ষত্র জ্বলে, ঠিক ততটা ভালোবাসি। আমি উপলব্ধি করি যে আমি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মেয়ের (তুমি) সঙ্গে আমার জীবন ভাগ করতে যাচ্ছি। তুমি আমার আকাঙ্ক্ষার, অস্তিত্বের। আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি।

আমি ১০০ কোটি গুণ বেশি কঠিন প্রতিশ্রুতি দিই যে আমি শুধু তোমার সঙ্গেই থাকতে চাই। কখনো তোমাকে ছেড়ে যাব না।

ইতি,

তোমার চেনা কেউ

বোন

বোন। শব্দটা অনেক ছোট কিন্তু এতে মিশে আছে আবেগ আর অনেক ভালোবাসা। আমার আপন বোন নেই কিন্তু তার জায়গা পূরণ করতে সব সময় প্রস্তুত আমার দুই মামাতো বোন। সমবয়সী আমরা। ওরাই আমার বোন, ওরাই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। এককথায় আমার জীবনের খুশি থাকার কারণ। ভুল করলে শাসনও করবে, বিপদে আগলেও রাখবে।

একসঙ্গে থাকলে কত খুনসুটির মধ্যে কাটে সময়টা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার হয়ে যায় তিনজন একসঙ্গে হলে। আমার সব গোপন তথ্য আমার চেয়ে ওরা ভালো জানে। মন খারাপ তো কোনো দিন করে থাকতেই পারি না ওদের সামনে, কোনো না কোনোভাবে হাসাবেই। কষ্টের সময় তা ভাগ করে নিয়ে যেমন কমিয়ে দেয় খুশির সময় তা হাজার গুণ বাড়িয়ে দেয়। হয়তো আগের জনমে কোনো পুণ্যের ফলস্বরূপ ওদের পাওয়া আমার জীবনে। দেখ তোরা সব সময় বলিস তোদের নিয়ে কখনো ফেসবুকে স্টোরি বা পোস্ট দিই না। ভালো কোথাও মেনশন করি না।

আজ তোদের অভিযোগের অবসান ঘটিয়ে একটু কিছু লিখেই ফেললাম। ভালোবাসি তোদের। অনেক ভালোবাসি। তোরা ছাড়া আমার জীবন শূন্য। কখনো ছেড়ে যাস না আমাকে।

সামিহা, ঢাকা।

ভালো থেকো আমার প্রিয়তমা শহর

আমার শহরের ওপর আমি পায়চারি করছি এক যুগের অধিক সময় ধরে। জানার চেষ্টা করছি আমার শহরের অক্লান্ত ডিএনএ সম্পর্কে।

প্রতিটি মানুষ তার শহরকে বর্ণনা করতে গিয়ে মূলত বর্ণনা করে সেই শহরের অধিবাসীকে। আমি তার ব্যতিক্রম নই। আমি দেখেছি আমার শহরকে ব্যক্তিগত মশারির ফাঁকে। তাই এ শহরকে বর্ণনা করতে গিয়ে আমি যেন নিজেকে বর্ণনা করছি বারবার।

এ শহর মানে আমার প্রথম স্কুল যাওয়া। এ শহর মানে আমার প্রথম আকাশ দেখা। এ শহর মানে আমার প্রথম প্রেম, প্রথম রবীন্দ্রনাথ পড়া।

এ শহরের নাম নীলফামারী। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার প্রথম বন্দনা, ভালো থেকো আমার প্রিয়তমা শহর।

আজকের ফেসবুকে পাঁচ হাজার বন্ধু পূর্ণ হলে মানুষ শুরু করে ছাঁটাই। আমার নীলফামারী শহর তার চেয়ে ব্যতিক্রম নয়। যতই তাকে জড়িয়ে ধরতে চাই না কেন, আমরা সবাই জানি, তার একদিন পাঁচ হাজার বন্ধু পূর্ণ হবে, আর তখন সে ছাঁটাই করে ফেলে দেবে খুব সহজে আমাদের। তবু এ শহর আমাকে দিয়েছে প্রথম অক্সিজেন। ভালো থেকো আমার প্রিয়তমা শহর।

সৈয়দ রেজওয়ান সিদ্দিক, নীলফামারী

গিরগিটি

ছিন্ন করতে চাই সব কৃত্রিম যোগাযোগ। কিন্তু এত বিস্তৃত পৃথিবীতে তা অসম্ভব! শিক্ষা, বিনোদন, চিকিৎসা, অর্থনীতি সব—সব জায়গায় তার একক আধিপত্য। বারবার ফিরে আসতে হয় এ কৃত্রিমের ভিড়ে। সুখের চোরাবালিতে আটকে মরীচিকাময় রাস্তায় অনন্ত যাত্রা। এ যাত্রার সফলতা মাপার পাল্লাটা আরও বেশি কৃত্রিম।

আর এ জগতের শ্রেষ্ঠ প্রাণীটিও গিরগিটি!

হোসেন সোহাগ, বরুড়া, কুমিল্লা।