নতুন স্বাভাবিক সময়ে জীবনযাপনের পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে পোশাকেও। জিমের বাইরেও জিমওয়্যার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিকেলের ঘোরাঘুরি, আড্ডা কিংবা বাড়ি থেকে কাজ করার ক্ষেত্রে নতুন নতুন নকশার ব্যায়ামের পোশাক দেখা যাচ্ছে। যেসবে স্টাইল এবং ব্যায়াম করার সময় আরামের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে
২০২০-২০২১ সালে জীবনযাপনের পরিবর্তনের ছোঁয়া গিয়ে লেগেছে পোশাকেও। ২০২০ সালের পর জিমের বাইরেও জিমওয়্যার (ব্যায়ামের পোশাক) ও স্পোর্টসওয়্যার (খেলার পোশাক) জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে বিকেলের ঘোরাঘুরি, লাউঞ্জে সময় কাটানো, বাড়ি থেকে কাজ করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে নানা নকশার জিমওয়্যার দেখা গেছে। নিত্যনতুন নকশার ব্যায়ামাগারের (জিম) উপযোগী পোশাকগুলো চমক দেখাচ্ছে। প্রয়োজনের পাশাপাশি স্টাইল করার জন্যও এ পোশাকগুলো বেশ জনপ্রিয় এখন। জিমের বাইরের কথা বাদ দিলাম। জিমের চার দেয়ালের ভেতরেই ব্যায়াম উপযোগী পোশাক আরাম, স্বাচ্ছন্দ্য ও আত্মবিশ্বাস—এই তিনের জন্যই ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
কার্ডিও, পিলাটিস, যোগব্যায়াম কিংবা অ্যারোবিকস করার সময় ফ্যাশন না আরাম কোনটা প্রাধান্য পাবে? একেকজনের ক্ষেত্রে উত্তর হবে একেক রকম। তবে বিশেষজ্ঞদের মতামত—জিমের জন্য নির্ধারিত পোশাকই পরা উচিত। ব্যথা পাওয়া বা অস্বস্তি বোধ করার আশঙ্কা কম। পাশাপাশি এটি মনোযোগ ও উৎসাহ দুটিই বাড়ায়। দাম একটু বেশি পড়লেও ঘাম শুষে নেবে দ্রুত এবং স্বস্তি দেবে এমন পোশাক কেনা উচিত জিমের জন্য।
রুসলানস স্টুডিওর স্বত্বাধিকারী এবং ফিটনেস পরামর্শক রুসলান হোসেইন জানালেন, ঘাম তাড়াতাড়ি শুকাবে, এমন ড্রাই ফিট উপকরণে তৈরি জিম উপযোগী পোশাক (জিমওয়্যার) পরা উচিত ব্যায়াম করার সময়। সুতির পোশাকে ঘাম শুকায় দেরিতে। বারবার পোশাক পরিবর্তন করতে হয়, না হলে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। পাশাপাশি জিমের জুতা পরিবর্তন করা উচিত এক বছর পরপর। জিমে দৌড়ানো, ভারোত্তোলন, ডেড লিফটের জন্য আলাদা ধরনের জুতা পাওয়া যায়।
জিমের পোশাক এমন হওয়া উচিত, যেন সেটা বাড়তি ত্বকের মতো মনে হয়। ব্যায়াম করার সময় কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা যেন তৈরি না করে। ফিটনেস পোশাক বাছাই করার সময় নকশা এবং সেলাইয়ে মনোযোগ দিন। ভারী সেলাই বা নকশা থেকে অনেক সময় ঝামেলা হয়।
‘সাফল্যের জন্য পোশাক’ কথাটি জিমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ব্যায়াম করার সময় যেন কঠিন থেকে কঠিনতর কাজগুলো সহজভাবে করা যায়, সেদিকে খেয়াল রাখবে এই জিমের পোশাকই। পারসোনা হেলথের প্রধান প্রশিক্ষক শওকত আরা সাঈদা বলেন, জিমের পোশাক হওয়া উচিত হালকা এবং ত্বক যেন সহজে বাতাস নিতে পারে, সে রকম। খুব বেশি আঁটসাঁট না হওয়াই ভালো, আরাম পাওয়া যাবে না এতে। সেদিক দিয়ে চিন্তা করলে পোশাকটি খুব বেশি ঢিলেঢালা হলেও চলবে না। জিমের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সময় অসুবিধা তৈরি করবে।
জিম করার সময় সঠিক অন্তর্বাস বেছে নেওয়াটাও জরুরি। স্পোর্টস ব্রা ব্যবহারে শারীরিক গঠনে নেতিবাচক পরিবর্তন আসবে না। জুতা কেনার সময় খেয়াল রাখুন নিচের অংশটি যেন বাঁকা (কার্ভ) থাকে। একদম সমান না হলেই ভালো।
আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, পোশাকটি যেন প্রসারণযোগ্য (স্ট্রেচেবল) হয়। একদম সুতি কাপড়ে তৈরি লেগিংস বা টি-শার্টে এ সুবিধাটি নেই। এ কারণে সুতির সঙ্গে পলিয়েস্টার, স্প্যানডেক্স, নাইলন, এলাস্টান, লাইক্রা ইত্যাদি মেশানো আছে এমন পোশাক কিনুন। যোগব্যায়ামই বলুন বা কার্ডিও, যেকোনো ধরনের ব্যায়ামের সময় হাত-পা যেন সহজভাবে নাড়ানো যায়, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। জিমে ব্যায়াম করার সময় একটি ছোট তোয়ালে সঙ্গে রাখুন। ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা প্রয়োজন এ সময়।
জিমে প্রতিদিন যাওয়া ও ব্যায়াম করার জন্য মানসিক অনুপ্রেরণার প্রয়োজন হয়। জিমের পোশাকটি এ ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সেই কাজ করে দেবে। জিম করার সময় অনেকে সালোয়ার ও ঢিলা টি-শার্ট পরে থাকেন। অসুবিধা হবে, শারীরিক ইতিবাচক পরিবর্তনগুলোও এতে বোঝা যায় না। জিম উপযোগী সঠিক পোশাক শারীরিক পরিবর্তনগুলো তুলে ধরবে এবং আপনাকে পরবর্তী দিনগুলোতে নিয়মিতভাবে ব্যায়াম করতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।