দুনিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের শীর্ষ দুজন তাঁরা। আধুনিক কালের রাজা–বাদশাহ বলা যায় নির্দ্বিধায়। তুড়ি বাজালেই হতে পারে যেকোনো মুশকিলের ত্বরিত সমাধান। অথচ বিল গেটস ও জেফ বেজোস রোজ রাতে থালাবাসন ধুয়ে রাখেন নিজ হাতেই। কেবল নিজের প্লেট বা গ্লাসই নয়, পরিবারের বাকিদের এঁটো ঘটিবাটিও সাফ করেন যত্ন নিয়ে।
২০১৪ সালে বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমাজন ডটকমের প্রধান বেজোস বলেছিলেন, ‘আমি রোজ থালাবাসন মাজি। আমি বিশ্বাস করি, আমার করা কাজগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে দারুণ।’
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস কী বলেন এ ব্যাপারে? ২০১৪ সালে রেডিট আস্ক মি অ্যানিথিং নামের প্রশ্নোত্তর পর্বে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘অন্যরা আপনার কাছ থেকে আশা করে না এমন কী আছে যা আপনি উপভোগ করেন?’ গেটসের উত্তর ছিল বেজোসের মতোই, ‘আমি রোজ রাতে থালাবাসন মাজি। অনেকেই অন্যদের সাহায্য নেয় কিন্তু আমি নিজেই করতে ভালোবাসি।’
দুই ধনকুবের যে কারণেই থালাবাসন মাজুন না কেন, বিজ্ঞান বলে, এতে করে সৃজনশীলতার বিকাশ হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি একটি গবেষণা করেছিল। তাতে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা থালাবাসন মাজার পর নিজেদের ফুরফুরে মেজাজে আবিষ্কার করে। এ ধরনের কাজের সময় শিক্ষার্থীরা শ্বাস–প্রশ্বাস, স্পর্শ, ঘ্রাণে মনোযোগ দেয় বেশি। এর ফলেই মানসিক চাপ যায় কমে। নতুন কোনো কাজের অনুপ্রেরণাও খুঁজে পায়। হালকা গরম পানি স্পর্শ করার অনুভূতি অথবা সাবানের ঘ্রাণ মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, স্যান্টা বারবারার আরেক গবেষণায় জানা গেছে, এলেবেলে কাজের সময় সৃজনশীল সমস্যা সমাধানে তৎপর হয়ে ওঠে আমাদের মস্তিষ্ক। অতএব এরপর যখনই নোংরা থালাবাসন দেখবেন, ঝাঁপিয়ে পড়ুন সেগুলোর ওপর। এর ফলে যে আপনি বিল গেটস বা জেফ বেজোস বনে যাবেন, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে আপনি যে প্রশান্তি পাবেন এবং সৃজনশীল চিন্তা করতে পারবেন, তা প্রায় নিশ্চিত।
সূত্র: সিএনবিসি ডটকম