বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ। এ জন্য প্রতিদিনের জীবনযাপনে এসেছে বেশ পরিবর্তন। পরিচ্ছন্নতার দিকে দিতে হচ্ছে বাড়তি নজর। জীবাণুমুক্ত করতে হচ্ছে প্রতিটি জিনিস। এ কথা তো আরও বেশি মানতে হবে রান্নাঘরের তৈজসপত্রের বেলায়।
তৈজসপত্র জীবাণুমুক্ত রাখার ব্যাপারে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ইনডোর মেডিকেল অফিসার নীহার রঞ্জন দাস বললেন, স্টিল আর প্লাস্টিকের ওপর ৭২ ঘণ্টা টিকে থাকে এই করোনাভাইরাস। এই ধরনের উপাদানে তৈরি তৈজস ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
সাধারণত যেমনটা দেখা যায়, খাবার খাওয়ার আগে আমরা কলের পানি দিয়েই বাসনকোসন ধুয়ে নিই। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই সময় যেকোনো কাজে তৈজসপত্র ব্যবহারের আগে তা সাবান পানি দিয়ে ভালো করে মেজে ধুয়ে নিতে হবে। শুধু যে তরল সাবানে ধুতে হবে, তা কিন্তু নয়। যেকোনো ডিটারজেন্ট পানিতে মিশিয়ে সেই পানিতেও বাসনকোসন জীবাণুমুক্ত করা যাবে। খুব ভালো হয়, যদি রান্নার কাজ শুরু করার আগে এক বালতি ডিটারজেন্ট মেশানো পানিতে সব তৈজসপত্র আধা ঘণ্টার জন্য ভিজিয়ে রাখা যায়। এই সময় বাড়ির প্রত্যেক সদস্যের আলাদা বাসনকোসন ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন নীহার রঞ্জন দাস। মাটি ও কাঁসার বাসন ব্যবহারের ক্ষেত্রে একই সতর্কতা অবলম্বন করতে বললেন তিনি।
এ ছাড়া দেখা যায়, খাবার রাখার পাত্রটি ধুয়ে আমরা যেকোনো কাপড়ে তা মুছে নিই। গার্হস্থ্য অর্থনীতি মহাবিদ্যালয়ের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপের সহকারী অধ্যাপক তাসমিয়া জান্নাত বলছিলেন, এখন এমনটি একেবারেই করা যাবে না। বাসনের পানি মোছার জন্য টয়লেট টিস্যু ব্যবহার করতে পারেন। আর তা যদি না থাকে তাহলে কাপড়ের টুকরা ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দুটি কাপড়ের টুকরা রাখুন। যেটি দিয়ে বাসনের পানি মুছবেন, তা আবার ব্যবহার করার জন্য ফেলে না রেখে সাবানপানিতে ধুয়ে নিন। একইভাবে যে র্যাক বা কেবিনেটে বাসন রাখবেন, তা–ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সাধারণত বাসন রাখতে স্টিলের র্যাক ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের র্যাকেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। তাই বাসন রাখার এই আসবাবগুলোকে দিনে ও রাতে দুবার জীবাণুনাশক অথবা ডিটারজেন্ট মেশানো পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। আর খুব বেশি হাতের স্পর্শ লাগে, এমন জায়গায় দৈনন্দিন ব্যবহারের বাসনকোসন না রাখার পরামর্শ দিলেন তিনি।