বাবার সঙ্গে মধুর বা তিক্ত কোনো স্মৃতিই আমার নেই। বাবা আমার খুব কঠিন মানুষ। সেই ছোটবেলা থেকে বাবাকে কোনো দিন হাসতে দেখিনি! বেশির ভাগ সময় চুপচাপ থাকতে পছন্দ করেন। তিনি তাঁর মতো করে জীবন কাটিয়েছেন। আমরা তাঁর ছায়াতলে থেকে স্বাভাবিকভাবে বড় হয়েছি। লেখাপড়া শেষ করেছি।
নীতিতে অবিচল থাকা একজন মানুষ আমার বাবা। দুনিয়া এপাশ-ওপাশ হয়ে গেলেও তাঁর নীতি থেকে সরে আসেন না। ছোটবেলার একটা ঘটনা মনে পড়ে। ঝড় হয়েছে। প্রতিবেশীর গাছের আম পড়েছে ঝড়ে। আমি কয়েকটি আম কুড়িয়ে আনি বাসায়। তিনি হুংকার দিয়ে বললেন, বিনা অনুমতিতে অপরের গাছের পাতাও যেন আর কোনো দিন না ছুঁই! এই একটি কথা স্পষ্ট অন্তরে গেঁথে রয়েছে। সেই থেকে কখনো কারও জিনিস ছুঁয়েও দেখিনি! এই শিক্ষাটা আবার নিজের সন্তানদের দিয়েছি।
বাবা এখন বৃদ্ধ। এখনো তিনি সেই নিজের নীতিতে অবিচল। এখনো হাসেন না। চুপচাপ থাকেন। যেন কোনো গভীর চিন্তায় মগ্ন। নিজের নিয়মের বাইরে এক কদম ফেলেন না! বাবার এমন হয়ে ওঠার পেছনে কোনো কারণ ছিল কি না, জানতে পারিনি। বাবাও সেটা জানার সুযোগ দেননি।