বাবার ছেঁড়া লুঙ্গি

আজ ২০ জুন, বাবা দিবস। বাবাকে ভালোবাসার বিশেষ এই দিন উপলক্ষে পাঠকের কাছে লেখা আহ্বান করেছিল গোদরেজ প্রটেক্ট ও প্রথম আলো অনলাইন। ‘বাবা, তোমাকে বলা হয়নি’ শিরোনামে বিপুলসংখ্যক পাঠক তাঁদের বাবাকে নিয়ে অনুভূতিমালা লিখেছেন। এখানে নির্বাচিত লেখাগুলোর একটি প্রকাশিত হলো।

মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান আমি। পড়াশোনা শেষ করে এক বছর হলো বেকার। বাবা, তুমি সামান্য চাকরি করে সংসার চালাও। সারা দিনের ব্যস্ততা শেষে বাসায় এসে, ঘামে ভেজা পাঞ্জাবিটা খুলে আমাদের নিয়ে খেতে বসো। ভাত খেয়ে শুয়ে পড়ে শুধু একটি কথা জিজ্ঞেস করো, ‘কী রে চাকরির ডেট কি হলো?’

বাবা, তোমার বয়স ৬০ বছর। হাঁটুতে সমস্যা। চশমা ছাড়া ঠিকমতো দেখতে পাও না। মাঝেমধ্যে অবাক হয়ে যাই, এই বয়সেও কী করে এত পরিশ্রম করো। আবার চিন্তা করি পরিশ্রম না করে কি উপায় আছে?

কিছুদিন আগে লুঙ্গি না পেয়ে তোমার লুঙ্গিটা নিয়ে গোসলে যাই। লুঙ্গিটা পরে দেখি বড় এক ছেঁড়া। এই লুঙ্গিই তুমি প্রতিদিন পরো। কোনো দিন ছেঁড়াটুকু তো দেখলাম না!

দুফোঁটা চোখের পানি ফেলে মনে মনে বললাম, ‘বাবা, এমনিভাবে কতই–না ত্যাগের কথা তুমি গোপন করেছ। তোমার কত কষ্টের কথা নীরবে সহ্য করেছ। কত সমস্যা নিয়েই না আমাদের দিয়েছ তোমার হাসিমাখা মুখ। আমাদের আবদার পূর্ণ করতে কতজনের কাছে ছোট হয়েছ।’

সেই ঋণ জানি কোনো দিন শোধ করতে পারব না। না বুঝে কত কষ্টই না তোমাকে দিয়েছি। কত সময় মনে আঘাত করেছি। কিন্তু কোনো দিন দূরে ঠেলে দাওনি।

বাবা, ও বাবা। আমার সব বালকসুলভ আচরণকে মাফ করে দিয়ো। চাকরিটা হয়ে গেলেই তোমাকে এবার অবসর দিতে চাই।