‘শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা?’ এই আকুলতা শুধু কবি ভাস্কর চক্রবর্তীর একার নয়, আরও অনেকেই শীতকালের অপেক্ষায় থাকেন। অপেক্ষার পালা ফুরিয়েছে। আর সবজির বাজারও যেন পেয়েছে পূর্ণতা। থরে থরে সাজানো আছে ফুলকপি আর বাঁধাকপি। কোনো বাড়ির হেঁশেলে শোল মাছে যাচ্ছে ফুলকপি, কোনো বাড়িতে মিশছে বাঁধাকপির সঙ্গে আলু। তবে শীতের এই দুই সবজি খাওয়ার আগে জেনে নিতে পারেন কোনটা কীভাবে খেলে বেশি পুষ্টি মিলবে। এ ছাড়া কাদের কোনটা খেতে মানা, সেটাও জেনে রাখা ভালো
কেন খাবেন: বাঁধাকপিতে প্রচুর ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও সোডিয়াম রয়েছে। এসব উপাদান হাড়ের নানান সমস্যা দূর করে, হাড় ভালো রাখে। নিয়মিত বাঁধাকপি খেলে বার্ধক্যজনিত হাড়ের সমস্যার আশঙ্কাও কমে যায়। সাধারণত সবজি হিসেবে খাওয়া হলেও, বাঁধাকপির রয়েছে নানান ঔষধি গুণ। বাঁধাকপি পেটব্যথা এবং অন্ত্রের আলসার কমাতে সাহায্য করে।
কাদের খাওয়া বারণ: তবে বাঁধাকপি পরিপাকে অসুবিধা হলে গ্যাসট্রাইটিস বেড়ে যায়। বাঁধাকপির কারণে পেটফাঁপাভাব হতে পারে। বাঁধাকপি, ব্রকলির মতো ক্রুসিফেরাস সবজি পেটে গ্যাসের সৃষ্টি করতে পারে। চিন্তায় পড়ে গেলেন তো? বাঁধাকপি খাবেন কি খাবেন না? প্রথমে অল্প পরিমাণে খেয়ে দেখুন, কোনো রকম অস্বস্তি বোধ করছেন কি না। যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে কিংবা সমস্যা গুরুতর হয়, তবে বাঁধাকপি না খাওয়াই ভালো।
কেন খাবেন: ফুলকপিতে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, বি, সি। আরও আছে শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও সালফার। ফুলকপির ডাঁটা ও সবুজ পাতায় প্রচুর ক্যালসিয়াম আছে, যা আমরা গ্রহণ করে দেহের নিত্যদিনের ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করতে পারি। তা ছাড়া মরণব্যাধি ক্যানসার প্রতিরোধে ফুলকপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফুলকপি রক্তের শ্বেতরক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। এই সবজি অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য খুবই উপকারী। অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমাতে ফুলকপি বেশ ভালো সাহায্য করে। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য একটি ভালো খাদ্য।
কাদের খাওয়া বারণ: এত এত ভালো গুণ থাকার পরও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই জনপ্রিয় সবজি না খাওয়াই ভালো। ফুলকপি আঁশ ও পানিসমৃদ্ধ। অতিরিক্ত ফাইবার বা আঁশসমৃদ্ধ যেকোনো কিছু অতিরিক্ত গ্রহণ করলে ব্লটিং বা পেটফাঁপা ও গ্যাস তৈরি হতে পারে। ফাইবার বা আঁশ আমাদের হজম হয় না, এ জন্যই এটি উপকারী, কিন্তু যদি খুব বেশিই খেয়ে নিই, তাহলে হজম না হওয়াটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া ফুলকপিতে ভিটামিন কে-এর পরিমাণ বেশি, যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। তাই যাঁরা রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান, তাঁদের জন্যও ভিটামিন কে-সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলা ভালো।