সঠিক সময়সূচি অনুযায়ী নিয়মিত ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুললে তাতে ঘুমের মান ভালো হয়। এই কথাটি এখন কমবেশি সবাই জানে। তবে একই অভ্যাসে যে হৃদ্যন্ত্রটিও ভালো থাকে, এত দিন প্রমাণিত ছিল না তা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, হৃদ্যন্ত্র ও বিপাক ক্রিয়া ঠিক রাখার জন্য এই অভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ডিউক হেলথ ও ডিউক ক্লিনিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একদল গবেষক এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছেন। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস নামের জার্নালে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। মোট ১৯৭৮ জন বেশি বয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, অনিয়মিত ঘুমে ওজন বেড়ে যায়। একই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার হার বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দেয়। যাঁরা একটি সময়সূচি মেনে নিয়মিত ঘুমান, তাঁদের চেয়ে অনিয়মিতভাবে ঘুমানো ব্যক্তিদের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। এ ক্ষেত্রে তফাত হয় প্রায় ১০ বছরের। অর্থাৎ ঠিকমতো না ঘুমালে ১০ বছর আগেই বুকে হাত চেপে হাসপাতালে দৌড়াতে হতে পারে।
গবেষকেরা বলছেন, অনিয়মিতভাবে যাঁরা ঘুমান, তাঁরা সাধারণত বিষণ্নতা ও মানসিক চাপে বেশি ভোগেন। আর দুটোই হৃদ্যন্ত্রের জন্য খারাপ ফল বয়ে আনে। প্রধান গবেষক জেসিকা লান্সফোর্ড-আভেরি বলেন, ‘অনিয়মিত ঘুমের কারণেই স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বা শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় তা ঘুমে প্রভাব ফেলছে—আমাদের গবেষণায় এগুলোর বিষয়ে কোনো উপসংহার টানা হয়নি। সম্ভবত এসব বিষয়গুলো একে অপরের ওপর প্রভাব ফেলছে। তবে এটুকু বলা যায় যে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিকে বিলম্বিত করা সম্ভব।’
গবেষকেরা বলছেন, অনিয়মিতভাবে ঘুমালে সারা দিনই ঘুম ঘুম ভাব থাকে। এর কারণে ভুক্তভোগীরা ক্লান্ত বোধ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, স্থূলতা ও অনিয়মিত ঘুমের মধ্যে একটি সংযোগ থাকতে পারে। এই বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।