বাংলাদেশে সাধারণত বাদুড় থেকে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায়। এ ভাইরাস মানুষের মস্তিষ্কের প্রদাহ বা এনকেফেলাইটিস এবং শ্বাসতন্ত্রের রোগ সৃষ্টি করে। সাধারণত সংক্রমণের ৪ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে লক্ষণ প্রকাশ পেতে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ হলে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো জ্বর, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, মাংসপেশিতে ব্যথা, বমি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, খিঁচুনি, অচেতন হয়ে পড়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
কীভাবে ছড়ায়
আমাদের দেশে শীতকালে খেজুরের গাছ কেটে হাঁড়ি বেঁধে রস সংগ্রহ করা হয়। ওই হাঁড়ি থেকে রাতে বাদুড়ও রস পান করে। এ সময় বাদুড়ের লালা থেকে নিপাহ ভাইরাস হাঁড়ির রসে চলে যায়। বাদুড়ের প্রস্রাবের মাধ্যমেও ভাইরাসটি খেজুরের রসে মেশে। এ ছাড়া গাছে বাদুড়ে খাওয়া ফলেও নিপাহ ভাইরাস থাকতে পারে। ওই রস ও ফল খেলে মানুষের শরীরে এ ভাইরাসের সংক্রমণ হয়। তারপর আক্রান্ত রোগী থেকে সুস্থ মানুষে ছড়ায় নিপাহ ভাইরাস।
চিকিৎসা
নিপাহ ভাইরাসের সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নাই। এ ক্ষেত্রে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
প্রতিরোধ
নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধের কোনো টিকা নেই। গাছ থেকে সদ্য নামানো খেজুরের রস ও বাদুড়ে খাওয়া ফলমূল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যেকোনো ফল ভালো করে ধুয়ে খোসা ফেলে খেতে হবে। খেজুরের রস ফুটিয়ে নিলে নিপাহ ভাইরাস মরে যায়। আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে গেলে সাবধান থাকতে হবে। গাছ পরিচর্যা, ফলমূল পাড়া ও খেজুরের রস আহরণের পর ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
আগামীকাল পড়ুন: সন্তান ধারণে বিলম্ব হলে
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ।