বাড়িতে খুব সহজেই নেওয়া যায় নখের যত্ন।
'নবিতুনের আঙুল তো নাচে না, চেরা বেতের মতো পাতলা আর সরু সরু করে কাটা পাটিপাতার ছিলকেগুলোকে নিয়ে যেন ঝড় তোলে নবিতুনের আঙুল। ...নবিতুনের আঙুলের ছোঁয়ায় প্রজাপতির ডানার মতো ফরফর বাতাসে কেটে যায় ওরা।'
সারেং বউ নবিতুনের আঙুলের মতোই বাঙালি নারীর আঙুলে ব্যস্ততা চিরন্তন। রোজা, ঈদ, উৎসব কিংবা নিত্যকার কাজ, আঙুলের বিরাম মেলে কমই। দুহাতে সামলে চলেছেন ঘর কিংবা বাহির, পদচারণায় মুখর থাকছে বিচরণের জায়গাটুকু। সবদিক ঠিক রাখতে চাই নিজের সুস্থতা—হাত দুটির, পায়ের পাতা দুটির সুস্থতা। কাজের সঙ্গে সঙ্গে নখের সৌন্দর্যহানি ঘটতেই পারে। হাত আর পায়ের আঙুলের নখগুলোকে সুস্থ-সুন্দর রাখার উপায় জেনে নেওয়া যাক আজ।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই নখের সুস্থতার মূল শর্ত। নখের নিচে সহজেই ময়লা জমে যায়, অসাবধানতায় যার কারণে হতে পারে পেটের পীড়াও। সুস্থ-সুন্দর থাকতে তাই পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই। আর নিয়মিত নখ কেটে ঠিকঠাক মাপে, ঠিকঠাক আকৃতিতে রাখতে হবে। নখের ওপরের দিক, ভেতরের দিক পরিষ্কার রাখতে হবে। এমন নানা পরামর্শ দিলেন রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন।
কুসুম গরম পানিতে খানিকটা মৃদু ধাঁচের (লাইট) শ্যাম্পু মিলিয়ে নিন। এতে হাত ডুবিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। এরপর ব্রাশে মৃদু শ্যাম্পু নিয়ে সেটির সাহায্যে নখ পরিষ্কার করে ফেলুন। নখের পাশ থেকে হালকা চামড়া ওঠা থাকলে কিউটিকল কাটার দিয়ে এবার সাবধানে কেটে ফেলুন (চামড়ার এ ধরনের অংশ কখনো টেনে তোলার চেষ্টা করবেন না)। এরপর নেইলফাইল ব্যবহার করুন। ঘষে নিন। চাইলে এরপর নেলপলিশ লাগাতে পারেন। এরপর নখ ও নখের চারপাশে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নিন। নখ ও ত্বকের এই অংশটুকু কোমল থাকবে।
পায়ের নখের যত্নের জন্যও নিয়মটা একই। সপ্তাহে একবার করে এভাবে হাত ও পায়ের নখের যত্ন নিলে সুস্থ-সুন্দর নখ পাবেন। কোনো কারণে তা সম্ভব না হলেও নিদেনপক্ষে ১৫ দিন অন্তর এভাবে হাত ও পায়ের নখের যত্ন নিতেই হবে।
l রান্নাঘরে কাজ করার সময় হাত ও নখে নানান ধরনের কষ লেগে যেতে পারে। এ রকম হলে সঙ্গে সঙ্গে টমেটো কিংবা লেবুর টুকরা ঘষে হাত-নখ পরিষ্কার করে নেওয়া ভালো। তাহলে আর কালচে দাগ বা আঠালো ভাব হবে না, নখের তেমন কোনো ক্ষতিও হবে না।
l রান্নাঘরের কাজের সময় হাতে গ্লাভস পরতে পারেন।
l ঘুমানোর আগে নখে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নিতে পারেন।
l নখ ও আঙুলের চারপাশ, নখের খাঁজ কিংবা আঙুলের ভাঁজে পানি লাগানোর পর অবশ্যই ভালোভাবে মুছে শুকিয়ে নিন। দীর্ঘ সময় ভেজা অবস্থায় থাকলে ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে।
l খুব বড় নখ রাখলে ভেঙে গিয়ে বিপাকে পড়তে হতে পারে, তাই এমনটা না রাখাই ভালো।
l নখে কোনো অস্বাভাবিকতা লক্ষ করলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। এসব ক্ষেত্রে বাড়ির টোটকা কাজে লাগাতে গিয়ে হিতে বিপরীত হতে পারে।