জাতীয় পতাকা, মানচিত্র, স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার কিংবা অপরাজেয় বাংলা মানে যেমন বাংলাদেশ, তেমনি মাটির হাঁড়ি, রিকশাচিত্র, নকশিকাঁথা, জামদানিও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে। লাল-সবুজ ঢেউটাও তো বাংলাদেশ। ২৬ মার্চ বা ১৬ ডিসেম্বরও কেবল কিছু তারিখ বা সংখ্যা নয়। ফ্যাশন হাউস নিত্য উপহারের স্বত্বাধিকারী বাহার রহমান বলেন, মানুষ নিজের অতীত দিনের গৌরবগাথাকে স্মরণ করতে চায়, উদ্যাপন করতে চায়। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে দেশীয় ঐতিহ্যের স্মারক সংগ্রহে রাখতে চায়। স্মারকটি দিবসভিত্তিক হলেও বছরজুড়েই ব্যবহার করা হয়। এই যেমন নিত্য উপহারে রয়েছে কিছু স্মারক মগ, এমন মগে চা খেয়ে শুরু হতে পারে বছরের প্রতিটা সকাল।
কে ক্র্যাফটের পরিচালক খালিদ মাহমুদ খান বলছিলেন, তাঁদের আছে দেশীয় স্মারকের নানান সামগ্রী। কাঠের কলমদানি, সিরামিক ও ধাতব মগ, ধাতব ঘণ্টা, ধাতব বোতল ওপেনার, চাবির রিং—সবটাতেই বাংলাদেশ। নোটবুকের মলাটেও রয়েছে নকশিকাঁথা-ফোঁড় কিংবা মানচিত্রে এমব্রয়ডারি। লাল-সবুজ ওয়ালেট, মাটির তৈরি অন্দরসজ্জার অনুষঙ্গে বাংলাদেশের দৃশ্য কিংবা দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে, এমন চুম্বক (ফ্রিজ ম্যাগনেট) নিঃসন্দেহে সংগ্রহে রাখার মতো। চাইলে প্রিয়জনকে উপহারও দিতে পারেন।
অঞ্জন’স-এর প্রধান নির্বাহী শাহীন আহমেদ জানালেন স্মৃতিসৌধের ধাতব রেপ্লিকা (ক্ষুদ্র রূপ) রয়েছে তাঁদের কাছে। ১৯৭১ এবং ২৬ মার্চকে নিয়ে তৈরি করা বেশ কিছু মগও পাওয়া যাবে। জামদানি মোটিফ, সুন্দরবনের ঐতিহ্য এবং বাংলাদেশের বিখ্যাত স্থাপনাগুলোকেও খুঁজে পাবেন তাঁদের মগের চিত্রপটে।
হস্তশিল্প নির্মাণ প্রতিষ্ঠান প্রকৃতির রয়েছে বাঁশের তৈরি দেশীয় স্মারক। মাছ ধরার দেশীয় উপকরণের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে স্মারকটি। ডালা, খালুই, ওসা, সাই, পলো, ঠেলাজাল, ঝাঁপ—এমন ১০টি উপকরণের ঝোলানো রেপ্লিকা দিয়ে আপনার অন্দরে আনতে পারেন ভিন্নতা।
আড়ংয়ে পাবেন পাট দিয়ে তৈরি ছবির ফ্রেম, রিকশাচিত্রের ফ্রেম করা আয়না, তামা-পিতলের ফুলদানি, বেতের ঝুড়ি কিংবা নকশিকাঁথার নকশার ট্যাপেস্ট্রির মতো স্মারক। রিকশাচিত্রের ঐতিহ্য মিলবে যাত্রার ট্রে, টেবিল বা কুপির মতো পণ্যেও।
স্মারকের বিশাল সম্ভার
অনলাইনভিত্তিক উদ্যোগ হাত বাক্সর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তানজিনা তারেক জানালেন তাঁদের দেশীয় স্মারকের বিশাল সম্ভারের খোঁজ। চুম্বক (ফ্রিজ ম্যাগনেট), ব্যাগে আটকানোর পিন, ল্যাপেল পিন, দেয়ালসজ্জার ফ্রেম, পেপারওয়েট, কলমদানি, মগ, বুকমার্ক, রেপ্লিকা—সবই পাবেন তাঁদের কাছে। রয়েছে সংসদ ভবন, শহীদ মিনার, ষাটগম্বুজ মসজিদ কিংবা সোমপুর বিহারের মতো ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার রেপ্লিকা। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, সুন্দরবন, রাঙামাটি, বান্দরবান, সিলেটের ঐতিহ্যও খুঁজে পাবেন তাঁদের স্মারকের মধ্যে। ময়ূরপঙ্খী, চাঁদ-নৌকা, বেবিট্যাক্সিও মিলবে। রিকশা, ট্রাক, গরুর গাড়ি যেমন আছে, তেমনি আছে বাংলার প্রাচীন মুদ্রা নিয়ে করা দেয়ালসজ্জার অনুষঙ্গ। রিকশার আকৃতির ছবির ফ্রেমও পাবেন। ফরমাশ দিয়ে পছন্দমতো পণ্য বানিয়েও নিতে পারেন। হাতে রং করা পণ্যের এ বিশাল আয়োজন অনলাইনভিত্তিক (ওয়েবসাইট, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম) হলেও ঢাকা ও ঢাকার বাইরের অনেক জায়গাতেই তাঁদের তৈরি স্মারক পাওয়া যায় বলে জানালেন তানজিনা তারেক। বিমানবন্দরের শুল্কমুক্ত পণ্যের দোকানেও মিলবে তাঁদের স্মারক।