দুধ সংরক্ষণ

সর্বোচ্চ পুষ্টিমানের জন্যই দুধের শ্রেষ্ঠত্ব। এই শ্রেষ্ঠত্ব বুঝতে পেরেছিল প্রাচীন যুগের মানুষেরাও। তাই সে সময় থেকেই দুধ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। বেরিয়েছে উপায়।

খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০০ অব্দ
খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০০ অব্দ

খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০০ অব্দ

বর্তমান মধ্যপ্রাচ্যের কোনো অংশ থেকে উদ্ভাবিত হয়েছিল দুধ সংরক্ষণের কৌশল, তাও কিনা খ্রিষ্টের জন্মের ১০ হাজার বছর আগে। গবেষকদের মতে, নব্যপ্রস্তর যুগের মানুষেরা গাঁজন প্রক্রিয়ায় অণুজীবের মাধ্যমে খাবার সংরক্ষণ করতে শিখে নিয়েছিল। প্রায় একই প্রক্রিয়ায় তারা একধরনের অণুজীবের সাহায্যে দুধকে দইয়ে রূপান্তর করে সংরক্ষণ করত।

খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ অব্দ

খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ অব্দ

ন্যাচার সাময়িকীর তথ্যমতে, খ্রিষ্টের জন্মের ৫ হাজার বছর আগে সুমেরীয় সভ্যতার অধিবাসীরা দুধ সংরক্ষণ করত বলে জানা যায়। সে যুগে কাঁচা দুধ দীর্ঘক্ষণ রেখে দিলে স্বাভাবিকভাবেই তা নষ্ট হয়ে যেত। তাই বিকল্প হিসেবে তা থেকে ল্যাকটোজ অপসারণ করে পনিরের তরল একটা আদিরূপ তৈরি করে তা মাটির পাত্রে সংরক্ষণ করা হতো।

খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০ অব্দ

খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০ অব্দ

প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছরের পুরোনো একটি চুনাপাথর খণ্ড থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে নৃবিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, সে যুগে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার অধিবাসীরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার আগে তাদের দুধের পাত্রটি দীর্ঘ সময় ধরে গাছের ডালে ঝুলিয়ে রেখে একধরনের তরল মাখন তৈরি করত, যা তাদের যাত্রাপথে ক্ষুধা মেটাত।

১৮১০ খ্রিষ্টাব্দ

১৮১০ খ্রিষ্টাব্দ

ইউরোপে তখন ফ্রান্সের সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যের যুদ্ধ চলছিল। এমন অবস্থায় ফ্রান্সের সম্রাট নেপোলিয়নের দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়ায় সেনাবাহিনীর জন্য দুধের মতো পচনশীল খাবার পরিবহন। ১৮১০ সালে এই সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবক নিকোলাস অ্যাপার্ট দুধ থেকে পানি অপসারণ করে তার সঙ্গে চিনি মিশিয়ে কনডেন্সড মিল্ক তৈরি করে টিনের পাত্রের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ দুধ সংরক্ষণের উপায় বের করেন।

১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দ

১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দ

দুধ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উদ্ভাবনটি স্বীকৃতি লাভ করে ১৮৬৫ সালে। উচ্চ তাপমাত্রায় দুধকে ফুটিয়ে ক্ষতিকারক জীবাণু ধ্বংস করে খুব দ্রুত তা ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করার কৌশল আবিষ্কার করেন ফরাসি বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর। তাঁর নামানুসারে এই প্রক্রিয়ার নামকরণ করা হয় পাস্তুরিতকরণ।

গ্রন্থনা: আকিব মো. সাতিল

সূত্র: ফোর্বস, টেডএড, এনপিআরলাইভ সায়েন্স