বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী কোন বিষয়ে কথা বলবেন আর কোন বিষয় এড়িয়ে যাবেন, সেটা অনেক ক্ষেত্রে পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। তবে প্রথম রাতের কথোপকথনে কিছু বিষয় এড়িয়ে চলাই ভালো। নাহলে সুন্দর সময়টা মধুময় হওয়ার বদলে বিষাদে ভরে উঠতে পারে।
দুজনেরই এমন কোনো অভ্যাস, যা দুজনকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে, তা শেয়ার করার সময় ভবিষ্যতে অনেক পাবেন। বিয়ের রাতে তাই এসব কথা এড়িয়ে চলাই ভালো। মনে রাখবেন, এ কথা বলার জন্য এই রাতটা উপযুক্ত নয়। আগে বুঝতে চেষ্টা করুন তার কী পছন্দ। ভালোবাসার মানুষটার জন্য নাহয় একটু একটু করে বদভ্যাসগুলো বদলে নিলেন।
ভালোবাসাময় সংসারের জন্য কী কী তাদের করা উচিত, নিজ নিজ প্রেক্ষাপট থেকে তা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু একজন এই ধরনের আলোচনা শুরু করলে অন্যজন যদি আগ্রহ না দেখান, তাহলে চুপ করে যেতে হবে। কারণ, অন্যজন আপনার কাছ থেকে আরও ভালো সময় পেতে আশায় আছেন, তাকে গুরুত্ব দিন।
দুজনের পছন্দ–অপছন্দের বিষয়গুলো বলতে গিয়ে অবশ্যই সাবধানতা মেনে চলুন। এসব বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তা যেন সঙ্গীর জন্য অপমানজনক বা বিরক্তির কারণ না হয়, তা খেয়াল করুন। যেমন আপনি হয়তো বললেন ‘নীল রং আমার একদম পছন্দ নয়। কেমন যেন স্কুল ড্রেস বা সার্জারির পোশাক লাগে।’ কিন্তু আপনার পাশে বসা মানুষটার কাছে হয়তো নীল মানেই খোলা আকাশ। ভালোবাসার রং। কিন্তু শুরুতেই আপনি নীলের যে বর্ণনা দিলেন, তাতে আপনার সঙ্গীর আর সাহস হলো না নিজের মনের কথাটা বলার। সারা জীবন চাপা কষ্টে আপনাকে লুকিয়েই সে হয়তো আকাশ দেখবে। নীল রঙের পোশাক কিনতে গেলেও এসব কথা মনে পড়বে। তাই এসব কথা বলা যাবে না বিয়ের রাতে।
গোপন কোনো বিষয় সঙ্গীকে জানানোর জন্য বিয়ের রাত সব সময় উপযুক্ত নয়। হয়তো আপনার এমন কোনো গোপন একটা দিক আছে, যা পরে প্রকাশিত হলে সম্পর্ক নড়বড়ে হতে পারে, তা নিয়ে বিয়ের আগেই আলোচনা করে নেওয়া ভালো। বিয়ের রাতের জন্য বসে থাকবেন না। বিয়ের পরে সেসব কথা জানাজানি হলে বিয়েটাই নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে।
সংসারজীবনে নিজেদের মধ্যে কীভাবে মানিয়ে নিতে পারেন, সেটা নিয়ে আলোচনা করতে বিয়ের রাতেই অস্থির হবেন না। অপেক্ষা করুন। মাত্র তো জীবন শুরু করছেন। অনেক রাত, অনেক দিন পড়ে আছে এসব আলোচনার জন্য। এই রাতকে স্মরণীয় করে রাখতে বরং সুন্দর একটা গল্প রাখুন নিজেদের জন্য; যা বাকি জীবনের জন্য অনুপ্রেরণা আর আকর্ষণীয় হয়।
বিয়ের পর আপনার দায়িত্ব, দায়বদ্ধতা ও সীমাবদ্ধতাগুলো স্বাভাবিকভাবেই অন্যজনের সঙ্গে মিশে যাবে। চাইলেই সেটা এড়িয়ে চলা যায় না। তাই একটা রাত অন্তত দুজন ভালো সময় কাটান। চেষ্টা করুন বন্ধু হিসেবে সারা জীবনের জন্য জুটি হয়ে বেঁচে থাকতে।
লেখক: বিয়েবিষয়ক পরামর্শক