দমে যাননি জিনিয়া

ফাতেমা–তুজ–জিনিয়া। ছবি: সংগৃহীত
ফাতেমা–তুজ–জিনিয়া।  ছবি: সংগৃহীত

অল্পদিনের সাংবাদিকতাজীবনে ফাতেমা–তুজ–জিনিয়া গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিনের অকথ্য গালাগাল শুনেছেন। হুমকি-ধমকি তো ছিলই। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ফেসবুক দুই দফা হ্যাক করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট হ্যাক করতে চেষ্টা করেছেন—এমন অভিযোগও আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। অবশ্য এত কিছুর পরও দমে যাননি তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চাইতে বলতেও ক্ষমা চাননি জিনিয়া। বলেছেন, অন্যায় করিনি, ক্ষমা কেন চাইব?

জিনিয়া কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত এবং তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং জিতেছেন। বাধ্য হয়েই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

ফাতেমা–তুজ–জিনিয়া গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যাম্পাস রিপোর্টার হিসেবে ১০ মাস ধরে কাজ করেন জাতীয় ইংরেজি দৈনিক ‘ডেইলি সান’ এবং ক্যাম্পাস ডটকম নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে।

মুঠোফোনে ফাতেমা–তুজ–জিনিয়া বললেন, ‘হুমকি-ধমকি পেয়েছি, বহিষ্কার হয়েছি। তার মানে এই নয় যে লেখালেখি বা সাংবাদিকতা থাকে সরে যাব। ভালোকে ভালো বলতে চাই। খারাপকে খারাপ বলতে চাই।’

জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃক্ষরোপণ, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের কাজ বন্ধ থাকা নিয়ে প্রতিবেদন করেছেন। এ নিয়ে আরও খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছিলেন। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে জিনিয়া তাঁর ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজটা কী?’ আর এতেই ক্ষিপ্ত হন স্বয়ং উপাচার্য।

জিনিয়ার ওপর আঘাত এলেও এতে লাভ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীদের। জিনিয়ার লেখালেখিতে আঘাত হানায় দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। জিনিয়ার নিজের বিশ্ববিদ্যালয় শুধু নয়, প্রতিবাদ হয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিন লিখিতভাবে জানান, এখন থেকে লেখালেখি বা সাংবাদিকতার কারণে কাউকে বহিষ্কার করা হবে না। ফেসবুকে লিখলে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে।