এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এবার ছেলে, মেয়ে ও নাতির সঙ্গে আলিম পাস করেছেন সিরাজুল ইসলাম। জয়ন্তী দেওয়ানকে তাঁর অনেক দিনের বাসনা পূরণের সেই গল্পই শোনালেন খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের সাবেক এই চেয়ারম্যান
অবশেষে আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন?
আমার জীবনের সবচেয়ে সুখকর মুহূর্ত। ফলাফল ঘোষণার পর ছেলে, ছোট মেয়ে আর নাতির সঙ্গে নিজের কৃতিত্বের খবর পাওয়ার সময়টা এককথায় আনন্দে ভরপুর ছিল।
তাঁরাও তো আপনার সঙ্গেই পাস করলেন...
জি, ছেলে, মেয়ে আর নাতির সঙ্গে আমি এইচএসসি পাস করেছি। এতজন একসঙ্গে পাস করার কারণে পরিবারে ঈদের আনন্দ নেমে এসেছে। ফল প্রকাশ হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন লোকজন দেখা করতে আসছে। কেউ কেউ আবার ফুল আর মিষ্টিও নিয়ে আসছে।
সামনে পরিকল্পনা কী?
সবার ইচ্ছা স্নাতকে ভর্তি হই। আমারও ইচ্ছা ব্যবসার পাশাপাশি যেন সুস্থ শরীর নিয়ে স্নাতক শেষ করে স্নাতকোত্তর করতে পারি।
পড়াশোনার শুরু করলেন কবে?
১৯৮৭ সালে দাখিল পাস করেছি। এরপর আলিম পড়তে পারিনি। পড়াশোনা করতে না পারায় মনে একটি দুঃখ থেকে যায়। এরপর চেষ্টা করেছি। জীবনসংগ্রামের কারণে হয়ে ওঠেনি। এভাবে অনেক বছর চলে যায়। কিন্তু পড়াশোনা করার ইচ্ছাটা আমার ছিল। ২০২০ সালে যোগাযোগ করেছিলাম খাগড়াছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসায়। এ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের সহযোগিতায় এবার প্রাইভেটে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি।
এ বয়সে পড়াশোনা করতে সমস্যায় হয়নি?
সারা জীবন ইচ্ছা ছিল উচ্চশিক্ষিত হব। এ বয়সে এসেও তাই আগ্রহের কমতি ছিল না। সে জন্যই পড়াশোনা শুরু করি। পড়াশোনা করতে গিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। বরং ছেলে, মেয়ে, নাতি এবং আমার সঙ্গে যারা পরীক্ষা দিয়েছে, তারা নানাভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছে।
আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন।
আমার পাঁচ মেয়ে, এক ছেলে। মেয়ে ও জামাইরাও শিক্ষিত। ছেলে, মেয়ে, জামাই ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে আমার আর স্ত্রীর সংসার। তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালে যেখানে গেছি, শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে চেষ্টা করেছি। বর্তমানেও পাড়া–প্রতিবেশী সবাইকে বলি সন্তানদের শিক্ষিত করতে। আসলে শিক্ষার কোনো বয়স নেই।