রাতে ঠিকমতো ঘুম হয়? যাঁরা চাকরি করেন, অনেকেই প্রতিষ্ঠানের কাজের চাপে-দুশ্চিন্তায় রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, যেখানে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের রাতের ঠিকমতো ঘুমের খোঁজখবর রাখা হয়। যাঁরা রাতে ঠিকমতো ঘুমান, তাঁদের জন্য বোনাস পর্যন্ত দেয়। জাপানের একটি বিয়ে ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ক্রেজি ইনকরপোরেশন এ রকম সুযোগ দেয়।
‘হিন্দুস্তান টাইমস’–এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, সপ্তাহে পাঁচ দিন যদি রাতে ঠিকঠাকমতো ছয় ঘণ্টা ঘুমাতে পারেন, তবে ক্রেজি ইনকরপোরেশন প্রতিষ্ঠানটি কর্মীদের বিশেষ পয়েন্ট দেয়। কর্মী চাইলে ওই পয়েন্টের বিনিময়ে ক্যাফেটেরিয়াতে খেতে পারেন। বছরে ৬৪ হাজার ইয়েন বা ৫৭০ মার্কিন ডলার সমান অর্থ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। কর্মীদের রাতের ঘুমের বিষয়টি ম্যাট্রেস নির্মাতা প্রতিষ্ঠা এয়ারওয়েভের একটি অ্যাপে নজরদারি করা হয়।
জাপানের স্বাস্থ্য খাতের পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফুজি রিয়োকির করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশটিতে ২০ বছরের ঊর্ধ্ব অনেকের ঘুমের সমস্যা রয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া ৯০ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তাঁদের রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না।
জাপানের কর্মী সংকট ও করপোরেট চাকরির সংস্কৃতি মেনে দিন–রাত কাজ করেন কর্মীরা। ক্রেজি ইনকরপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা কাজুহিকো মারিয়ামা বলেন, কর্মীরা যদি উন্নত জীবন যাপন করে, তবে অফিসে তাঁদের পারফরমেন্স ভালো হয়।
মারিয়ামা বলেন, কর্মীদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করতে হবে। তা না হলে দেশ দুর্বল হয়ে যাবে। যথেষ্ট ঘুমের জন্য উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি পুষ্টি, ব্যায়াম ও অফিসের ইতিবাচক কাজের জন্য উৎসাহ দেওয়ার কাজ করছেন তাঁরা।
মারিয়ামার কথায় যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের র্যান্ড করপোরেশনের করা ২০০৯ সালের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ঘুম যথেষ্ট ভালো হলে তা ব্যবসার কর্মতৎপরতায় প্রভাব ফেলে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হয়। অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ৪১১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়; যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। জাপানের এ ক্ষতির পরিমাণ ১২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা জিডিপির ২দশমিক ৯২ শতাংশ।
মারিয়ামা বলেন, ‘আমি এক লাখের বেশি কর্মীকে বড়লোক বানাতে চাই। আমি এমন কিছু করতে চাই, যা অন্য লোকের কাছে পাগলামি মনে হতে পারে।’