ফ্যাশন

গ্লিটারের কাজ করা পোশাকের যত্ন নেবেন যেভাবে

গ্লিটারের কারুকাজ পোশাককে করে তোলে ট্রেন্ডি আর স্টাইলিশ! এখন তো সুতি, লিনেন, খাদি, সিল্ক, অ্যান্ডি, জর্জেট সব ধরনের কাপড়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে গ্লিটারের বাহারি নকশা। তবে এ দেশের আবহাওয়া আর একেকজনের শরীরের তাপমাত্রার ভিন্নতার কারণে, ঘামের স্পর্শে কিছুটা কালচে হয়ে যেতে পারে এ ধরনের পোশাক। তাই প্রয়োজন বিশেষ যত্ন।

গ্লিটারের কাজ পোশাককে করে তোলে ট্রেন্ডি আর স্টাইলিশ। মডেল : জাকিয়া উর্মি। পোশাক : ওয়্যার হাউস
ছবি : সুমন ইউসুফ

গ্লিটারের পোশাক নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান আইরিসেস ডিজাইনার স্টুডিওর ক্রিয়েটিভ হেড নাতাশা হায়াত বলেন, কাপড়ে সোনালি রং নানাভাবে ব্যবহার করা হয়। একে ‘খাড়ি’ বলে। খাড়ি পাউডার, খাড়ি রং ব্লক প্রিন্টের কাজে ব্যবহার করা হয়। যেহেতু কেমিক্যাল আর পাউডারের মিশ্রণে খাড়ির কাজ করা হয়, নানান দেশ থেকে বেশ কিছু প্রক্রিয়া শেষ করে এটি কারখানায় আসে, তাই কারও পক্ষেই খাড়ির স্থায়িত্ব কত দিন হতে পারে, সেটি নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হয় না। ১০ থেকে ১৫ বছরেও কোনো খাড়ি করা পোশাক টেকসই থাকে, আবার ২ মাস আগে করা খাড়ি কালচে হয়ে যেতে পারে। গ্লিটারের অন্য একটি মাধ্যম ফয়েল পেপার। মূলত হিট কমপ্লেক্স মেশিন দিয়ে ফয়েল পেপার পোশাকে বসানো হয়। ফয়েল পেপারে ফুটিয়ে তোলা নকশার পোশাক অনেক টেকসই। এটি তৈরির প্রক্রিয়া ব্যয়বহুল হওয়ায় ফয়েল বসানো গ্লিটার পোশাকের দাম কিছুটা বেশি হয়

প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য গ্লিটার কাজের পোশাক বেছে না নেওয়াই ভালো। মডেল : জয়া রায়, পোশাক : আইরিসেস

ফ্যাশন হাউস ওয়্যারহাউসের স্বত্বাধিকারী তাসনিম ফেরদৌস বলেন, গ্লিটার কোনোটা টেকসই,আবার কোনোটা না–ও হতে পারে। তবে প্রতিনিয়ত ব্যবহারের জন্য গ্লিটার কাজের পোশাক বেছে না নেওয়াই ভালো। এমন ধরনের পোশাক ধোয়ার জন্য ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করা যাবে না। আলতো করে হাতে ধুয়ে নিলেই পোশাকে গ্লিটারের কাজ দীর্ঘদিন টেকসই থাকবে। পারফিউম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরাসরি পোশাকে স্প্রে না করাই ভালো। এতে পারফিউমে থাকা অ্যালকোহলের কারণে গ্লিটার কালচে হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

গ্লিটারের কাজ করা পোশাকের চাই বিশেষ যত্ন। মডেল : জান্নাতুল পিয়া, পোশাক : ওয়ারা

কেমন হবে গ্লিটার পোশাকের যত্নআত্তি? সে বিষয়ে কিছু টিপস দিয়েছেন ন্যাশনাল কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের (সাবেক গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ) বস্ত্র পরিচ্ছদ ও বয়নশিল্প বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জেসমিন মাসুমা।

  • ড্রাই ক্লিন করতে পারলে খুবই ভালো।

  • নরমাল ওয়াশের জন্য ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে।

  • গ্লিটারের কাজ করা পোশাক ধুতে শ্যাম্পু অথবা সাবান–পানি ব্যবহার করা ভালো। কোনোভাবেই ডিটারজেন্ট পাউডার ব্যবহার করবেন না।

  • আয়রন করার সময় পোশাকের উল্টো দিকে করতে হবে, নয়তো গ্লিটারের ওপর অন্য কাপড় বিছিয়ে নিয়ে করতে হবে।

  • রোদে দিতে চাইলে উল্টো দিকে রোদ লাগাতে হবে।

  • কিছুদিন পরপর পোশাক বাতাসে মেলতে হবে।

  • ভাঁজ করে না রেখে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখা উচিত।

  • যদি ভাঁজ করেই রাখতে হয়, তবে পোশাকে ব্যবহার উপযোগী টিস্যু কিংবা ভাঁজে ভাঁজে কাগজ রেখে সংরক্ষণ করা উচিত।