কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে স্নাতকের সুযোগ আছে ঢাকার স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে। প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ, ডেটা স্ট্রাকচার, অ্যালগরিদম, ডিসক্রিট ম্যাথ, থিওরি অব কম্পিউটেশন, অপারেটিং সিস্টেমস, নেটওয়ার্কিং, ওয়েব ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো সনাতন বিষয়গুলোর পাশাপাশি মেশিন লার্নিং, বিগ ডেটা, সাইবার সিকিউরিটি, প্যারালাল প্রসেসিং, ক্রিপ্টোগ্রাফির মতো সাম্প্রতিক বিষয়গুলোও পড়ানো হয় এখানে।
চতুর্থ বর্ষের শেষ সেমিস্টারে শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত প্রকল্প হিসেবে বিভিন্ন ইনফরমেশন সিস্টেম তৈরি করতে হয়, যার মাধ্যমে তাঁরা অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এ ছাড়া যাঁরা প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি আগ্রহী, নিয়মিত কোর্সের পাশাপাশি বিনা মূল্যে তাঁদের প্রোগ্রামিং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। প্রোগ্রামিং প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতা আয়োজন করে বিভাগের নিজস্ব ক্লাব। কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ ২০১৫ সাল থেকে এসইউবি আন্তবিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা আয়োজন করছে। দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রামারেরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
অনেক সময় কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অ্যালামনাইরা নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে শেষ বর্ষের ও সদ্য পাস করা শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ ও চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়।
স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সিএসই স্নাতকেরা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন ওয়েলস ফার্গো ব্যাংক, নিউইয়র্কের সিনিয়র ডেটা অ্যানালিস্ট এ এসএম শাহজালাল; গুগলের সফটওয়্যার প্রকৌশলী মোহাম্মদ মশিউর রহমান, জাপানের নারা ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির সহকারী অধ্যাপক মো. দেলোয়ার হোসেন, ফেডারেল ব্যাংক অব স্যান ফ্রান্সিসকোর সফটওয়্যার প্রকৌশলী রায়হান আক্তারসহ অনেকে।
গুগলের সফটওয়্যার প্রকৌশলী, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সাবেক ছাত্র মোহাম্মদ মশিউর রহমান বলেন, ‘২০০৭ সালে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকে বেছে নিয়েছিলাম স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশকে। আমার ১১ বছরের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ারে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অনেক অবদান আছে। এখানেই আমি আবিষ্কার করি প্রোগ্রামিংয়ের আনন্দ। মানসম্পন্ন কোর্স কারিকুলামের পাশাপাশি শিক্ষকদের কাছ থেকে সব সময়ই পেয়েছি আন্তরিক উৎসাহ ও দিকনির্দেশনা।’
বর্তমান বিভাগীয় প্রধান মাসুদ তারেক বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন সারা বিশ্বের প্রযুক্তিভিত্তিক পেশার ক্ষেত্রে এক সমতাভিত্তিক প্রতিযোগিতার সুযোগ তৈরি করেছে। এ কারণে একটি উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক হয়েও আমাদের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিযোগিতার সুযোগ পাচ্ছে। আমাদের মূল লক্ষ্য বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বের জন্য দক্ষ, সচেতন এবং সক্রিয় তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী ও উদ্যোক্তা তৈরি করা; যারা সমাজ এবং সভ্যতার কল্যাণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ৪ বছর মেয়াদি সিএসই প্রোগ্রামের খরচ ৫ লাখ ৮২ হাজার টাকা। তবে এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে বিভিন্ন বৃত্তি ও টিউশন ফি মওকুফের সুবিধা আছে। এ ছাড়া প্রতি সেমিস্টারে ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থীরা ব্যাচভিত্তিক বৃত্তি পেতে পারেন। ‘ফল-২০২১’ সেমিস্টারের ভর্তি চলবে অক্টোবর পর্যন্ত। এইচএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। অনলাইন বা অফলাইন—দুই মাধ্যমেই ভর্তি হওয়ার সুযোগ আছে। বিস্তারিত জানা যাবে এই ঠিকানায়।