মনের বাক্স
মনের বাক্স

মনের বাক্স

গাঁয়ের ঈদ

আমার কী দোষ

আমি বাইরে থেকে ঘুরাঘুরি করে ইফতারের কিছুক্ষণ আগে বাসায় ফিরলাম। দেখলাম, আব্বু বসে টিভিতে খবর দেখছেন। আব্বুর পাশে গিয়ে বসতেই হঠাৎ আব্বু জিজ্ঞেস করলেন, ‘অটোরিকশা চালাবি নাকি টানা রিকশা?’ আমি খানিকটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, মানে?

আব্বু বললেন, ‘যেভাবে ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে যাচ্ছে আর আজব আজব সার্কুলার দিচ্ছে, আমার মনে হয় না, তোর আর পরীক্ষা দেওয়া হবে। তার থেকে ভালো একটা কাজ করে বিয়েশাদি কর। অন্তত নাতি–নাতনির মুখ দেখতে পারব।’

দেলোয়ার হোসেন

শৈশবের সরলতা

ছোট ছিলাম, বেশ ছিলাম। চারদিকে সবুজ মাঠ, তার মধ্যে দ্বীপের মতো একটা বাড়ি। বাড়িটি ঘিরে বাঁশঝাড় আর বেতের সর্পিল সমারোহে থোকা থোকা বেতল ফলও উঁকি দিত। বাড়ির উত্তর সীমানায় ছিল ছোট পুকুর। সেই পুকুরের একবুক জলের ওপর আম, নারকেল আর সুপারি গাছের শীতল ছায়ায় হাঁসেরা খেলা করত। এখনো স্মৃতিতে সব জ্বলজ্বলে। পুকুরের ঠিক পাশেই ফসলি জমি। জমিতে খুব গাজর হতো। কমলা রঙের বাহারি গাজর।

পাখির কলকাকলি আর কিচিরমিচিরবিহীন শহরে যান্ত্রিক শহরে হাজারো মানুষের ভিড়ে আমিও আছি। কিন্তু এখনো ছেলেবেলার সরলতা ও বোকামি মিস করি।

দ্বীন মোহাম্মাদ, মালিবাগ, ঢাকা।

তুমি বুঝলে না

অনেক স্বপ্ন আর আবেগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। শীতের সকালে রঙিন স্বপ্নগুলো আরও রঙিন দেখতাম। কুয়াশা ছিন্নভিন্ন করে ডিপার্টমেন্টে যেতাম ক্লাস করতে। হঠাৎ একদিন তোমার দেখা পেলাম। ভাগ্যক্রমে তোমার সঙ্গও পেলাম। আমাদের সম্পর্ক দা-কুমড়োর মতো হয়েছিল। দুজন সব সময় ঝগড়ার মধ্যে থাকতাম। কিন্তু কখন যে আমি তোমার ভেতর ডুবে গেলাম, বুঝতে পারলাম না। আমি তোমার চোখের কাজলে নিজেকে হারিয়েছিলাম। তোমার দুরন্তপনা ভালোবেসেছিলাম। তোমার চুলের ঝাপটায় আমার মনকে হাওয়ায় ভাসিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরিণতি কী জানো? বিনিময়ে আমি আমার দুরন্তপনা হারালাম, নিজেই হাসতে ভুলে গেলাম। এখন আমি আমার চুলে চিরুনি দিতেও ভুলে যাই। আফসোসটা কোথায় জানো? আমি যা চাই, তা অন্য কারও হয়ে যায়। তুমি ভালো থেকো, নিজেকে যত্নে রেখো।

আবু সোহান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুস্টিয়া

একুশ শতকের ভালোবাসা

সে বলেছিল আমার জন্য বটবৃক্ষ হবে, যুদ্ধে যাবে, পর্বত ডিঙাবে, রোমিও হবে, হবে আলেকজান্ডার। শুনে আমি অভিভূত, মুখে রা নেই। স্বপ্ন দেখলাম আকাশ ছোঁয়ার, পাগল হলাম, বিশ্বাস করলাম।

তারপর, গ্রীষ্ম গিয়ে বর্ষাও আসেনি। তার ব্যস্ততা বাড়ল, ব্যবসার টেনশন বাড়ল, অফিসে কাজের চাপ, সময় বড্ড কম। অনুভব করলাম, শুধু আমাকেই ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা। একবুক কান্না চেপে, দুচোখের জল মেপে বুঝে গেলাম এটাই একুশ শতক। এটাই একুশ শতকের ভালোবাসা।

এখানে মায়া থাকতে নেই গো, কায়া থাকতে হয়। এখানে অনুভূতি থাকতে নেই গো, রোবট হতে হয়। কিছু নেই ভালোবাসা, শুধু প্রয়োজনে কাছে আসা। নেই ভালোবাসার খামখেয়ালিপনা।

শাহীন সুলতানা, ফরিদপুর।

গাঁয়ের ঈদ

গত বছর ঈদুল আজহায় গাঁয়ে যেতে পারিনি। সারা দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ায় আমাদের মেসে একজনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। সে জন্য আমাদের সবাইকে গৃহবন্দী থাকতে হয়েছিল। তবে এবার মনস্থির করেছি, লকডাউন শিথিল হলে গ্রামের বাড়ি যাব। গত ঈদে কোনো মজা করতে পারিনি। ঈদের নামাজে মাঠে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। সারা দিন বাসায় থেকে বিরক্ত হয়েছিলাম। মনের মধ্যে শুধু গ্রামের ঈদের ছবিগুলো ভেসে উঠছিল সেদিন। সেখানে ঈদে কত মজাই না হয়। আগের দিন সবাই মিলে ঈদের চাঁদ দেখা। খুব সকালে উঠে আতর–সুরমা পরে বাবার সঙ্গে নামাজ পড়তে যাওয়া। কত সেমাই, মিষ্টি-মন্ডা খাওয়া। বড়দের কাছ থেকে ঈদের সালামি নেওয়া। সেবার আমার ভাগ্যে এসব জোটেনি। তবে লকডাউন শিথিল হলে এবার আমি সুরক্ষা মেনে গ্রামে যাবই। ঈদের খুশি সবার সঙ্গে ভাগ করে নেব।

শাকিব হুসাইন, দিনাজপুর।

লেখা পাঠানোর ঠিকানা

অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

ই-মেইল: adhuna@prothomalo.com, ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA

খামের ওপর ও ই-মেইলের subject–এ লিখুন ‘মনের বাক্স’