খুলনায় জামাল উদ্দীনের প্রথম আলো সংগ্রহশালা

প্রায় ১৩ বছর ধরে প্রতিদিনের প্রথম আলো সংগ্রহে রাখেন জামাল উদ্দীন।
প্রায় ১৩ বছর ধরে প্রতিদিনের প্রথম আলো সংগ্রহে রাখেন জামাল উদ্দীন।

খুলনা নগরের শের-ই-বাংলা রোডের ২৬/১ নম্বর বাড়ি। তিন তলা বাড়ির সিঁড়ি বেয়ে তৃতীয় তলায় উঠে পশ্চিম পাশের ফ্ল্যাটের দরজার দিকে তাকালেই চোখে পড়বে ‘বিডিএস, পরিচালক এ এইচ এম জামাল উদ্দীন’ লেখা একটি স্টিকার। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলেই দেখা যায় এক পাশে রাখা সারি সারি প্রথম আলো পত্রিকা। ২০০৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রথম আলোর সব কপিই রয়েছে সেখানে।
ওই ঘরের পূর্ব দিকে একটি আলমারি। আলমারির ওপরে বড় করে লেখা ‘বিডিএস-প্রথম আলো সংগ্রহশালা’। একটি তাকে বাঁধাই করা বই আকারে সাজানো প্রথম আলোর ‘ছুটির দিনে’সহ অন্য ক্রোড়পত্রগুলো। তাকে শোভা পাচ্ছে নোবেল বিজয়ের পর প্রথম আলোর বর্ষপঞ্জিতে ছাপানো ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি ছবি। এ ছাড়া অন্যান্য তাকে রয়েছে আরও ক্রোড়পত্র, যেগুলো ব্রডশিটে ছাপা। এই ঘরে বসে যে কেউ পড়তে পারবেন প্রথম আলোর এসব পুরোনো সংখ্যা। এটিই হলো বাংলাদেশ ডিবেটিং সোসাইটি (বিডিএস)-প্রথম আলো সংগ্রহশালা। শুধু একটি পত্রিকা নিয়ে একটি সংগ্রহশালা গড়ে তোলার দৃষ্টান্ত বিরল। গত ১ ডিসেম্বর এই সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ আলমগীর।

অনেকেই আসেন পত্রিকা পড়তে

২০০৩ সালের মে মাস থেকে প্রথম আলোর প্রতিটি কপি নিজের সংগ্রহে রেখে আসছেন বাংলাদেশ ডিবেটিং সোসাইটির পরিচালক এ এইচ এম জামাল উদ্দীন। ১৯৯৮ সালের ৪ নভেম্বর প্রকাশিত প্রথম আলোর পাঠকও তিনি। তবে ওই সময় থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা ও সিলেটে চাকরিতে কর্মরত থাকায় ওই কয়েক বছরের পত্রিকা তাঁর সংগ্রহে নেই।
বিভিন্ন সময় বাসা বদল করতে হলেও প্রথম আলোকে বোঝা মনে করেননি জামাল উদ্দীন। বাসা বদলের জন্য অন্য মালামালের সঙ্গে প্রথম আলোর ১৪ বছরের সংগ্রহ করা সব কপিই টেনে নিয়ে গেছেন আপন যত্নে। জামাল উদ্দীন মনে করেন তাঁর অবর্তমানে এত দিনের তিল তিল করে সংগ্রহ করা পত্রিকাগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই তিনি পত্রিকাগুলো সংরক্ষণ ও প্রথম আলোর পাঠকদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সংগ্রহশালা গড়ে তুলেছেন।
জামাল উদ্দীনের পত্রিকা সংগ্রহ নিয়ে প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে প্রথম আলোতে। তিনি বললেন, ‘প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রথম আলোর পুরোনো সংখ্যা দেখতে বহু মানুষ আসতে থাকেন। মানুষের এই আগ্রহ বুঝে ওই পত্রিকাগুলো নিয়ে বিডিএস-প্রথম আলো সংগ্রহশালা দাঁড় করাই।’ এটি চালানোর জন্য ২১ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। নির্বাহী কমিটির সভাপতি হিসেবে আছেন স্থানীয় সরকার বিভাগ খুলনার উপপরিচালক মো. হাবিবুল হক খান। ‘পত্রিকাগুলো এখন আর আমার নিজের সম্পত্তি নয়। এগুলো এখন এই সংগঠনের।’ বললেন জামাল উদ্দীন।