রেলওয়েতে চাকরি করতেন বাবা। সে সুবাদে ছেলেবেলায় বিশাল এক বাড়িতে আমরা থাকতাম।
অনেক রাতে কিসের শব্দে যেন ঘুম ভেঙে যেত। বড় আপুকে ডেকে তুলে বলতাম, ঘরে যেন কী ঢুকেছে। ও আমাকে বুকে টেনে নিয়ে বলত, ভয়ের কিছু নেই, বাবা নাক ডাকছে, ঘুমিয়ে যা!
সকালে বাবাকে দেখে ভুলে যেতাম রাতের কথা। কোনো দিন বলিনি, বাবা, তোমার নাক ডাকার শব্দে ভয় পাই।
এত বছর পর সেদিন আমরা বোনেরা এক জায়গায় হলাম। বাবার নাক ডাকার কথা বলে হাসলাম।
আমাদের অতিপ্রিয় মানুষ ছিলেন বাবা। ছিলেন আমাদের খেলার সাথি। পড়ালেখার উৎসাহ জোগাতেন। কিন্তু রাত এলেই কেন যেন ভয় করত। বাবার নাক ডাকার শব্দে অনেক সময় ঘুমাতে পারতাম না। আর বাবা নাক ডাকলে বুঝতাম, তিনি ঘুমের দেশে চলে গেছেন।
বাবা চলে গেছেন ১৯৮০ সালে। আমাদেরও বয়স হয়েছে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে খুঁজে ফিরি অতীত। রাতে বাবার সুমধুর নাক ডাকা।