ওসি মোহাম্মদ মহসীন পুরস্কৃত

পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার নিচ্ছেন ওসি মোহাম্মদ মহসীন। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার নিচ্ছেন ওসি মোহাম্মদ মহসীন।  ছবি: সংগৃহীত

মিলনায়তনভর্তি নারীনেত্রী, রাজনৈতিক ব্যক্তি, পুলিশসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। অতিথি হিসেবে আছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ অনেকে। গত ২৭ জুন চট্টগ্রাম নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে অতিথির হাত থেকে একে একে পুরস্কার নিচ্ছেন দেশের সাহসী নারী পুলিশ সদস্যরা। তাঁদের সঙ্গে পুরস্কার নেন এক পুরুষ পুলিশ সদস্য। অনুষ্ঠানে সবার মনে প্রশ্ন জাগে, বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ পুরুষ কেন?

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ পেয়েছেন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ
মহসীন। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভূমিকা, উত্ত্যক্তকারীদের প্রতিরোধ, যৌতুকবিরোধী প্রচারণা ও নারী
অপরাধীদের আলোর পথে নিয়ে যেতে অগ্রণী ভূমিকা রাখায় তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। ২০১৬ সাল থেকে চালু হওয়া ‘বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড’–এ এবারই প্রথমবারের মতো একজন পুরুষ ‘মেডেল ফর প্রমোশন অব জেন্ডার সেনসিটিভিটি’ পুরস্কার পেলেন। 

১৫ মামলার আসামি পাখি আক্তার। বছরখানেক আগে মাদক বিক্রি করলেও এখন মনোহারী দোকান চালান। প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ছেড়েছেন মাদক বিক্রি। পাখির মতো ২১ মামলার আসামি জুলেখা আক্তার, ১১ মামলার আসামি শাহনাজ বেগম, ৯ মামলার আসামি খালেদা বেগম ও ৭ মামলার আসামি রহিমা আক্তার চালান মুদি দোকান। এ ছাড়া ৭ মামলার আসামি ফাতেমা আক্তার, ৪ মামলার আসামি লাকি আক্তার, ৮ মামলার আসামি সাহিদা আক্তারও মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে গৃহকর্মীর কাজ করেন। মোহাম্মদ মহসীন এই নারীদের পথ দেখিয়েছেন।

নগরের অক্সিজেন এলাকার পাখি আক্তার বললেন, ‘যখন মাদক ব্যবসা করতাম, এলাকার লোকজন ঘৃণা করতেন। এখন সবাই আমাকে ভালো চোখে দেখে।’

 চলন্ত গাড়িতে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত আসামিদের ২৪ ঘণ্টার মধে৵ গ্রেপ্তার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে বাসে শ্লীলতাহানির চেষ্টায় বাসচালকের সহকারীকে ধরে বিচক্ষণতার পরিচয় দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। 

ব্যক্তিগত উদ্যোগে কর্তব্যরত থানা এলাকায় উত্ত্যক্তকারী, যৌতুকবিরোধী ব্যানার, ফেস্টুন টাঙিয়েছেন ওসি মহসীন। এতে নারীরা না–বলা কথাগুলো বলার জন্য এগিয়ে আসছেন। উত্ত্যক্ত রোধে কোতোয়ালি এলাকায় স্কুল–কলেজের সামনে ও সন্ধ্যার পর কিশোরদের কারণ ছাড়া আড্ডা দেওয়া রোধ করে অভিভাবকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন মহসীন। এ ছাড়া ফেসবুকে দুটি পেজ ও একটি ব্যক্তিগত আইডির মাধ্যমে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ভূমিকা রাখছেন তিনি। 

 মোহাম্মদ মহসীন বললেন, ‘পুরস্কার পাওয়া একই সঙ্গে আনন্দের এবং অনুপ্রেরণার। আমি যে সঠিক পথেই এগোচ্ছি, এ পুরস্কার তারই স্মারক। এমন পুরস্কার কাজের অনুপ্রেরণা দেয়।’