>
কয়েক দিন পরই শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। ইফতারের সময় খাওয়া হবে নানা পদ। ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি বা জিলাপির মতো কিছু পদ ইফতারের সময় টেবিলে থাকাটা রীতি হয়েই দাঁড়িয়েছে। মুখরোচক এসব ইফতারি তৈরি করতে পারেন ঘরেই। রেসিপি দিয়েছেন জেবুন্নেসা বেগম।
ডিমের চপ
উপকরণ: সেদ্ধ ডিম ৪টা, মাঝারি আলু ৬টা, পেঁয়াজকুচি ৩ টেবিল চামচ, তেল ভাজার জন্য, লবণ স্বাদমতো, শুকনা মরিচ ২-৩টা, ফেটানো ডিম ১টা, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা–চামচ, ব্রেডক্রাম্ব বা বিস্কুটের গুঁড়া ১ কাপ ও ধনেপাতা অথবা পুদিনা পাতাকুচি ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি: আলু সেদ্ধ করে চটকে নিন। ডিম সেদ্ধ করে প্রতিটি ডিম দুই টুকরা অথবা চার টুকরা করে কেটে নিন। পেঁয়াজকুচি লাল করে ভেজে নিন। শুকনা মরিচ ৩টা ভেজে ভেঙে নিন। মেখে নেওয়া আলুর সঙ্গে ভেজে রাখা পেঁয়াজ, শুকনা মরিচ, লবণ, ধনেপাতা অথবা পুদিনাকুচি ও গোলমরিচের গুঁড়া ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার প্রতিটি চপের ভেতর টুকরা করা ডিম দিয়ে চপের আকারে তৈরি করুন। ১টা ডিম সামান্য লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া দিয়ে ফেটে নিন। প্রতিটি ডিমের চপ ফেটানো ডিমে ডুবিয়ে এরপর ব্রেডক্রাম্বে গড়িয়ে নিন। ডুবো তেলে ভেজে তুলুন।
পেঁয়াজু
উপকরণ: পেঁয়াজকুচি ২ কাপ, আদাবাটা ১ চা–চামচ, মরিচগুঁড়া আধা চা–চামচ, কাঁচা মরিচকুচি ২ টেবিল চামচ, জিরাগুঁড়া আধা চা–চামচ, বেসন ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, ধনেপাতাকুচি ২ টেবিল চামচ ও ভাজার জন্য তেল।
প্রণালি: পেঁয়াজ কুচি করে নিন। এর সঙ্গে আদাবাটা, মরিচগুঁড়া, কাঁচা মরিচকুচি, ধনেপাতাকুচি, জিরাগুঁড়া, লবণ পরিমাণমতো ও বেসন মেশান। তেল গরম করে পেঁয়াজুর আকারে ভেজে তুলুন। ডালের পেঁয়াজুর বিকল্প হিসেবে এই পেঁয়াজু খেতে পারেন।
বেগুনি
উপকরণ: গোল বেগুন ২টি, বেসন দেড় কাপ, ময়দা আধা কাপ, মরিচগুঁড়া ১ চা–চামচ, আদাবাটা ১ চা–চামচ, জর্দার রং (ইচ্ছে) আধা চা–চামচ, বেকিং পাউডার আধা চা–চামচ, পানি আধা কাপ (আন্দাজমতো), লবণ পরিমাণমতো ও ভাজার জন্য তেল।
প্রণালি: বেগুন আধা ইঞ্চি মোটা করে কেটে নিন। সামান্য লবণ মেখে ৫ মিনিট রেখে দিন। বেসন, ময়দা, মরিচগুঁড়া, আদাবাটা, বেকিং পাউডার, জর্দার রং ও লবণ একসঙ্গে মেশান। অল্প অল্প পানি দিয়ে নাড়তে থাকুন। ব্যাটার যেন পাতলা না হয় সেভাবে পানি দেবেন। এবার প্রতিটি বেগুনের টুকরা বেসনের ব্যাটারে ডুবিয়ে ডুবো তেলে ভেজে নিন।
বুট ভুনা
উপকরণ: ছোলা বা বুট দেড় কাপ, আলু ১টা, পেঁয়াজকুচি ২ টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা–চামচ, মরিচগুঁড়া আধা চা চামচ, শুকনা মরিচ ২টা, টমেটোকুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেগুঁড়া আধা চা–চামচ, আদাবাটা ১ চা–চামচ, জিরাগুঁড়া আধা চা–চামচ, রসুনবাটা আধা চা–চামচ, কাঁচা মরিচকুচি ২ টেবিল চামচ, ধনেপাতাকুচি ২ টেবিল চামচ, শর্ষেবাটা আধা চা–চামচ, লবণ পরিমাণমতো ও তেল দেড় টেবিল চামচ।
প্রণালি: বুট ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। পানিতে ভিজে ফুলে উঠলে পরিষ্কার করে ধুয়ে সামান্য লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। সেদ্ধ বুটের কালো পানি ফেলে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। তেলে শুকনা মরিচ ও পেঁয়াজ ভেজে আদাবাটা, রসুনবাটা, হলুদগুঁড়া, মরিচগুঁড়া, শর্ষেবাটা সামান্য পানি দিয়ে কষিয়ে নিন। সেদ্ধ আলু হাত দিয়ে ভেঙে এতে দিয়ে নাড়ুন। এবার সেদ্ধ বুট, জিরাগুঁড়া, ধনেগুঁড়া, লবণ, কাঁচা মরিচকুচি ও অল্প পানি দিয়ে নাড়ুন। পানি শুকিয়ে এলে ধনেপাতাকুচি দিয়ে চুলা বন্ধ করে দিন।
হালিম
উপকরণ: ভাজা মুগডাল সিকি কাপ, মসুর ডাল সিকি কাপ, ছোলার ডাল সিকি কাপ, মটর ডাল সিকি কাপ, মাষকলাইয়ের ডাল সিকি কাপ, গম সিকি কাপ, পোলাওয়ের চাল সিকি কাপ, মুরগি ১ কেজি, পেঁয়াজকুচি আধা কাপ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ চা–চামচ, জায়ফল–জয়ত্রীগুঁড়া আধা চা–চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা–চামচ, মরিচগুঁড়া দেড় চা–চামচ, গরমমসলাগুঁড়া ১ চা–চামচ, জিরাগুঁড়া ১ চা–চামচ, ধনেগুঁড়া ১ চা–চামচ, লবণ স্বাদমতো, মেথিগুঁড়া ১ চা–চামচ ও তেল ৩–৪ কাপ।
পরিবেশনের জন্য: আদাকুচি ১ টেবিল চামচ, পুদিনা বা ধনেপাতাকুচি ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজবেরেস্তা আধা কাপ, কাঁচা মরিচকুচি ২ টেবিল চামচ, শসা ও গাজরকুচি পরিমাণমতো এবং লেবু।
প্রণালি: মুগডাল তাওয়ায় অল্প আঁচে টেলে নিন। যাতে পুড়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। এবার বাকি সব ডাল, পোলাওয়ের চাল, টালা মুগডাল, গম পরিষ্কার করে ধুয়ে সেদ্ধ করে নিন। গম না থাকলে সমপরিমাণ লাল আটা দিতে পারেন। সেদ্ধ হলে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন।
মুরগির মাংস ছোট ছোট টুকরা করে নিন। পরিষ্কার করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। তেলে পেঁয়াজ বাদামি করে ভেজে আদা, রসুনবাটা, হলুদগুঁড়া, মরিচগুঁড়া, জিরাগুঁড়া, ধনেগুঁড়া, মেথিগুঁড়া, জায়ফল–জয়ত্রীগুঁড়া, গরমমসলাগুঁড়া ও লবণ সামান্য পানি দিয়ে কষান। মসলা কষে গেলে মুরগির টুকরাগুলো দিয়ে নাড়ুন। আধা কাপ পানি দিয়ে ঢেকে দিন। মাংস সেদ্ধ হয়ে এলে ডালের মিশ্রণ ঢেলে দিন।
হালিম হয়ে গেলে আদাকুচি, বেরেস্তা, কাঁচা মরিচকুচি, পুদিনা ও লেবু দিয়ে পরিবেশন করুন।
জিলাপি
উপকরণ: ময়দা ১ কাপ, বেসন ১ টেবিল চামচ, ইস্ট ১ চা–চামচ, জর্দার রং ১ চা–চামচ, চিনি ১ চা–চামচ ও চালের গুঁড়া ১ চা–চামচ।
শিরার জন্য: চিনি ২ কাপ, পানি আধা কাপ, এলাচ ২টা ও ঘি ১ চা–চামচ।
পাইপিং: ব্যাগ অথবা সসের বোতল ১টি।
প্রণালি: এক টেবিল চামচ কুসুম গরম পানিতে ইস্ট ও চিনি ভিজিয়ে রাখুন। ময়দা, বেসন, জর্দার রং ও চালের গুঁড়া একসঙ্গে মেশান। অল্প অল্প পানি দিয়ে নাড়তে থাকুন। গোলানো ইস্ট এর সঙ্গে মেশান। ঘন ব্যাটার তৈরি করুন। ১৫ মিনিট ঢেকে রাখুন। পাইপিং ব্যাগ অথবা সসের বোতলে ময়দার মিশ্রণ ঢুকিয়ে নিন। তেলে জিলাপির আকারে ভাজুন। খেয়াল রাখবেন তেল যেন বেশি গরম না হয়। মাঝারি আঁচে ভাজুন। চিনিতে ২টা এলাচ, ১ চা–চামচ ঘি এবং আধা কাপ পানি দিয়ে শিরা তৈরি করুন। ভাজা জিলাপি ৪-৫ মিনিট চিনির শিরায় রেখে তুলে নিন।