আমকে বলা হয় ফলের রাজা। আম খেতে ভালোবাসেন না, এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। কেবল স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় নয়, পাকা ও কাঁচা উভয় আমেই রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। কাঁচা বা পাকা দুই ধরনের আমই শরীরের জন্য ভালো। আম কাঁচা বা পাকা যা–ই হোক না কেন, পরিমিত গ্রহণ করলে শরীরের ওপর তেমন কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে না।
আম প্রি-বায়োটিক, ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদানে সমৃদ্ধ। কিছু সমীক্ষায় দেখা গেছে, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদান স্তন ক্যানসার ও কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। নতুন কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, আমে কোলন ক্যানসার, স্তন ক্যানসার, লিউকোমিয়া ও প্রোস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধের উপাদান আছে।
আম ভিটামিন এ ও বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন নামের ফ্ল্যাভিনয়েডসের ভালো উৎস। এগুলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফলটি ভিটামিন এ, সি এবং ই-এর ভালো উৎস, যা ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে।
আমের আরও যা গুণ
*বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রাকৃতিক ফলে বিদ্যমান ক্যারোটিন গ্রহণ করলে সেগুলো ফুসফুস ও মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
*তাজা আম পটাশিয়ামের ভালো উৎস। পটাশিয়াম মানবদেহের কোষ ও তরলের উপাদান, যা রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
*ভিটামিন সি ও বিভিন্ন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, যা দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
*ভিটামিন বি-৬ পাওয়া যায়, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে ও কিছু জটিলতা কমাতে সাহায্য করে।
*আম থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়, যা স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
*আম তারুণ্য ধরে রাখতে কার্যকর। আমে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেনের উৎপাদনে সাহায্য করে। ফলে ত্বক সতেজ ও টান টান হয়। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, যা ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
*আমে থাকা বিভিন্ন উপাদান কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
*হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর।
*আমে কপার পাওয়া যায়, যা লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।
দুই দশক ধরে ওজনাধিক্য ও ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে গোটা বিশ্বে। পরিমিত পরিমাণে আম প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলে তা এই সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আমের পাতাও এ ক্ষেত্রে খুব কার্যকর। যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁরা যদি পাঁচ-ছয়টি আমপাতা ধুয়ে একটি পাত্রে সেদ্ধ করে ছেঁকে নিয়ে সেই পানি পান করেন, তাহলে এটা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
স্কিন ক্যানসার ফাউন্ডেশনের মতে, খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত বিটা ক্যারোটিন–জাতীয় খাবার থাকলে তা ত্বকের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর।
আম যেমন পুষ্টিগুণে ভরা, তেমনি এর খোসায় রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। এ ছাড়া এর বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও রয়েছে। কাঁচা আম খোসাসহ খাওয়া উত্তম।