আজ ২০ জুন, বাবা দিবস। বাবাকে ভালোবাসার বিশেষ এই দিন উপলক্ষে পাঠকের কাছে লেখা আহ্বান করেছিল গোদরেজ প্রটেক্ট ও প্রথম আলো অনলাইন। ‘বাবা, তোমাকে বলা হয়নি’ শিরোনামে বিপুলসংখ্যক পাঠক তাঁদের বাবাকে নিয়ে অনুভূতিমালা লিখেছেন। এখানে নির্বাচিত লেখাগুলোর একটি প্রকাশিত হলো।
আমার বাবা একটু রাগী মানুষ। এমন স্বভাব হওয়ায় সহজ আবদার তাঁর কাছে কখনোই করতে পারতাম না, এখনো পারি না। একটু ভয় ভয় লাগে। স্কুলে প্রতিবার ফলাফলের আগের দিন বাবা বলতেন, এবারও আমি রোল নম্বর ১ করতে পারব না। কিন্তু ঠিকই প্রথম হতাম। তাতেও বাবার রাগ রাগ ভাব যেত না—কেন অমুক বিষয়ে নম্বর কম পেলাম, তমুক বিষয়ে আরও নম্বর কেন পেলাম না...!
নবম শ্রেণির প্রথম সাময়িক পরীক্ষার পরের ঘটনা। উচ্চতর গণিতে আমি এ প্লাস পাইনি। অন্য একজন সহপাঠীর নম্বর নব্বইয়ের ঘরে উঠেছে। এটা শুনে বাবা তো রেগে আগুন হয়ে গেলেন। শখের একটা রেডিও ছিল, সেটা ভেঙে দিলেন। আমি নাকি গান শুনে অঙ্কে মনোযোগ হারিয়েছি। সেদিন মারলেনও। যে আমি পড়ার জন্য শিক্ষকের হাতে কখনো মার খাইনি, সেই আমি কম নম্বর পাওয়ায় বাবার হাতে মার খেয়েছিলাম সেদিন।
বাবার সেই ছেলেটা আজ অনেক বড় হয়েছে। বাবার স্বপ্ন ছিল, প্রকৌশলী হব। সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
সে সময় বাবার শাসনে রাগ-অভিমান করেছি, ভাত খাওয়া বন্ধ করেছি। এখন মনে হয়, বাবাই ঠিক ছিলেন। পিঠে বেতের বাড়ি না ফেললে হয়তো এত দূর আসতে পারতাম না।
বাবাকে আজ বলতে ইচ্ছা করছে, বাবা, তুমিই সত্যিকারের সফল বাবা, যে কিনা রাগমাখা ভালোবাসায় তাঁর ছেলেকে মানুষ করতে পেরেছেন।
তোমার সেই শাসনের দিনগুলো এখন বড্ড অনুভব করি।