বাবা আমাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়ে সোজা নিয়ে গেলেন মিষ্টির দোকানে। প্লেটভর্তি মিষ্টি খেতে দিলেন। আমি মনের আনন্দে খাচ্ছি। নিজ হাতে একটি মিষ্টি মুখে তুলে দিয়ে বললেন, মা, মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। বড় হতে হবে। আমার খুব ইচ্ছা পড়াশোনা করে তুমি খুব নাম করবে। কয়েক বছর পর অসুস্থ হয়ে বাবা বিছানায়। উঠতে পারেন না। তখন আমি বাবার পাশে হাত ধরে বসে থাকতাম। বাবা আমাকে কাছে টেনে নিয়ে কপালে চুমু দিত। তখন খুব আনন্দ হতো। এক বছর বিছানায় ছিলেন বাবা। এমন রমজান মাসে বাবা আমাকে ছেড়ে চলে যান না-ফেরার দেশে। মৃত্যুর সময়ও তিনি আমাকে ভোলেননি, দুশ্চিন্তা করেছেন। এই জন্য এক চাচাতো বোনের হাতে তুলে দিয়ে আমাকে দেখে রাখার অনুরোধ করেছিলেন।
বাবা তোমাকে বলছি, তুমি চলে যাওয়ার পর আমি বড় একা হয়ে পড়েছি। তোমার অস্তিত্ব আমাকে তাড়া করে। আমি তোমায় প্রতিদিন অনুভব করি। কারণ, আমার কষ্ট তোমার মতো করে আর কেউ বুঝতে চেষ্টা করে না। দিন যাচ্ছে, তোমার শূন্যতা বড় হচ্ছে।
বাবা, আজ প্রথম স্কুলে নিয়ে যাওয়ার দিনটির কথা বেশ মনে পড়ছে। মিষ্টি খাওয়ার কথা মনে পড়ছে। স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর তুমি আমাকে যে মিষ্টি খাইয়েছিলে, ওই মিষ্টি যে এত স্বাদ তা না খেলে অনুভব করতে পারতাম না। তোমাকে হারানোর পর জীবনে অনেকবার মিষ্টি খেয়েছি, হয়তো আরও খাব। তবে তোমার পরম মমতায় মিষ্টি খাওয়ার মুহূর্ত আর কোনো দিন আসবে না।