আপনি কি অনুভূতিতে পরিপক্ব?

‘ইমোশনাল ম্যাচিউরিটি’ বা আবেগীয় পরিপক্বতা মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি টার্ম। আবেগের বিচারে পরিপক্ব মানুষ বলতে সাধারণত এমন এক ব্যক্তিকে বোঝা হয়, যিনি নিজের সম্পর্কে ধারণা রাখেন। মানসিকভাবে পরিপক্ব ব্যক্তি সব বিষয়ে সমাধান দিতে না পারলেও ঝড়ের মধ্যে শান্ত থাকার অনুভূতি দিতে পারেন। আবেগের দিক দিয়ে পরিপক্ব একজন ব্যক্তি অনেক পরিবেশেই আবেগের ভারসাম্য ধরে রাখতে পারেন। কিন্তু কী করে বুঝবেন, আপনি আবেগের দিক দিয়ে পরিপক্ব? এ জন্য আপনার মধ্যে থাকতে হবে নির্দিষ্ট কয়েকটি বৈশিষ্ট্য।

আবেগের দিক দিয়ে পরিপক্ব একজন ব্যক্তি অনেক পরিবেশেই আবেগের ভারসাম্য ধরে রাখতে পারেন
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

দায়িত্ব নিতে জানতে হবে

অনুভূতি ও আবেগে পরিপক্ব ব্যক্তি যেকোনো কাজে দায়িত্ব নিয়ে নেন। আর সেই অনুযায়ী নিজের ব্যবহারেও পরিবর্তন আনেন। সাফল্য না পেলে বা নিজের চাওয়ার বিপরীতে কিছু হলে তাঁরা অন্যদের দোষ দেন না। এমনকি এসব মুহূর্তে নিজেকে দোষারোপ না করাই অনুভূতি ও আবেগে পরিপক্ব ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য।

সহানুভূতিশীল হওয়া

অনুভূতিতে পরিপক্ব ব্যক্তি সহানুভূতি দেখাতে বেশি পছন্দ করেন। তাঁরা চারপাশের মানুষদের উপকার ও সহযোগিতা করার চিন্তা থাকে। অন্য মানুষের অবস্থায় নিজেকে রেখে বিচার করতে পারেন।

নিজের ভুলগুলো খুঁজতে হবে এবং মেনেও নিতে হবে

নিজের ভুল বুঝতে পারা

যেকোনো কাজে ভুল হতেই পারে। আর এমন যদি হয়েই যায়, তবে তা সহজভাবে মেনে নিতে হবে। নিজের ভুলগুলো খুঁজতে হবে এবং মেনেও নিতে হবে। আপনার কাছে সবকিছুর সঠিক সমাধান আছে, এমন ধারণা থেকে বের হওয়া জরুরি। তাই ভুল হলে ক্ষমা চাওয়াও সমানভাবে দরকারি।

নিজের দুর্বলতা সম্পর্কে জানা

নিজের সংগ্রাম নিয়ে সব সময় খোলামেলা কথা ও চিন্তার চর্চা করতে হবে। ‘আমি সব দিকে দিয়ে সম্পূর্ণ’—এমন ভাবনা স্বাভাবিক নয়। নিজের দুর্বলতা নিয়ে ভয়ের কিছুই নেই। নিজের অনুভূতিতে সততা রাখা ও বন্ধুদের সঙ্গে বিশ্বাস ধরে রাখা মানেই আপনি অনুভূতিতে পরিপক্ব ব্যক্তি।

নিজের জন্য কথা বলা

জীবনে নানা সময়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা হতেই পারে। সে সময়ে আপনাকেই নিজের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। নিজেকে ভালোবাসা ও সম্মান করা সবচেয়ে জরুরি। অন্য কেউ চাইলেই যেন সেই সীমানা অতিক্রম করতে না পারে, সেটা আপনাকেই খেয়াল রাখতে হবে।

সবকিছুকে নিতে হবে সহজভাবে

বিরক্ত না হওয়া

বন্ধু, পরিচিত বা কর্মক্ষেত্রে সবাইকেই আপনার পছন্দ হবে না। এমনকি তাঁদের অনেক কাজ মনে হবে বিরক্তিকরও। এখানেই বোঝা যাবে আপনার আবেগের পরিপক্বতা কতখানি। এমন পরিস্থিতিতে আপনাকে শান্ত হতে হবে। সবকিছুকে নিতে হবে সহজভাবে। অল্পতেই কারও সম্পর্কে অভিযোগ করা যাবে না। বরং তাঁর ভালো কাজের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা শিখতে হবে।

অন্যদের পর্যবেক্ষণ করা

একটু কথা বলেই বা কিছু শুনেই সঙ্গে সঙ্গে অনুমান অথবা ধারণা করা ঠিক নয়। অনুমান বা ধারণা করা ভুল নয়, তবে তা যেন অন্যের কথা শুনে না হয়। নিজের চিন্তা কাজে লাগান। সঠিকভাবে মানুষকে পর্যবেক্ষণ করা অনুভূতিতে পরিপক্ব ব্যক্তির অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

সূত্র: হেলথলাইন