করোনার কারণে পাল্টে গেছে জীবনযাপন। অনেকের অফিসও এখন বাসায়। খুব বেশি জরুরি না হলে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সবাইকে। ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোও সব ধরনের সেবা দিচ্ছে আগের চেয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে। তাই নিত্যপণ্যের কেনাকাটার জন্যও বাইরে না গেলেও চলবে। ঘরে বসে অর্ডার করে পণ্য বুঝে নিন দুয়ার থেকে। রমজানে যাঁরা স্টার হোটেলের ইফতারি বা কলাবাগানের মামা হালিম ‘মিস’ করছেন, তারাও ঘরে বসে খেতে পারবেন রাজধানীর নামকরা দোকানের ইফতারি।
মুদি দোকান থেকে সুপারশপ
অন্য সময়ের তুলনায় রমজান মাসে অনেকেই বাজারে গিয়ে পুরো মাসের কেনাকাটা একবারে করেন। করোনাভাইরাস আতঙ্কে সেটা এবার কম দেখা গেছে। তবে অনলাইনে অর্ডার করে ইচ্ছেমতো বাজার করে নিতে পারেন ঘরে বসে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের সুপারশপগুলোর অনেকগুলোই নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাড়িতে পণ্য সরবরাহ (হোম ডেলিভারি) করছে বেশ আগে থেকে। সেই সঙ্গে আরও নানা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কেনাকাটার সুবিধা রয়েছে।
স্বপ্ন সুপারশপ
ঢাকা, চট্টগাম ও সিলেটে হোম ডেলিভারি দিচ্ছে সুপারশপ স্বপ্ন। স্বপ্নের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘ক্রেতাদের সুরক্ষার কথা ভেবে স্বপ্নের শাখাগুলোকে সর্বক্ষণ জীবাণুমুক্ত রাখার চেষ্টা করছি। এ ছাড়া আমরা দেশের তিনটি বড় শহরে অনলাইন বা ফোনে অর্ডারের মাধ্যমে পণ্য বাসায় পৌঁছে দিচ্ছি। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের প্রতিটি এলাকার জন্য আলাদা আলাদা ফোন নম্বর রয়েছে। স্বপ্নের ফেসবুক পেজে (www.facebook.com/Shwapno.ACILL) গেলেই সেসব ফোন নম্বর সহজে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ফুডপান্ডা, উবার ইটস, সহজ ফুড বা পাঠাওয়ের মাধ্যমেও কেনাকাটা করা যাবে।’
মিনা বাজার
দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সবার জন্য খোলা মিনা বাজার। সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সার্ভিস দিচ্ছে মিনা বাজারের অনলাইন কেনাকাটা মিনা ক্লিক। তাদের ফেসবুক পেজ (www.facebook.com/meenabazar.bd) থেকে মিলবে হালনাগাদ সব তথ্য। এ ছাড়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকার জন্য মিনা বাজার নির্দিষ্ট ফোন নম্বর চালু করেছে। সেখানে ফোন করেও বাজার অর্ডার করতে পারবেন।
আগোরা
সুপারশপ আগোরা চালু করেছে বিশেষ হটলাইন নম্বর। কোয়ারেন্টিনের এই সময়ে সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ফোন করে (০১৫১১৫০৬০৮০) বাজার করা যাবে। এ ছাড়া আগোরার পণ্য কেনা যাবে অনলাইন সহজ ফুডের মাধ্যমে।
ইউনিমার্ট
ঢাকার গুলশান ও ধানমন্ডিতে ইউনিমার্টের দুটি শাখা রয়েছে। সেখান থেকে হোম ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে গুলশান ১, গুলশান ২, বনানী, বারিধারা, বারিধারা ডিওএইচএস, নিকেতন, কলাবাগান, ধানমন্ডি, লালমাটিয়া ও মোহাম্মদপুরে। দিনে দিনে অর্ডার পেতে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে অর্ডার দিতে হবে। অর্ডারের ৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্রেতার বাসায় পণ্য পৌঁছে দিতে চেষ্টা করছে ইউনিমার্ট। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ফোনে এসএমএস করে অর্ডার দেওয়া যাবে। ফোন নম্বর দুটি হচ্ছে, গুলশান: ০১৯৫৮১০৮৬৭২ ও ধানমন্ডি: ০১৬২০০১৪৩৫৫। ইউনিমার্টের পণ্য কেনা যাবে ফুডপান্ডা, উবার ইটস, সহজ ফুড ও পাঠাও ফুডের মাধ্যমে।
ইউনিমার্টের রমজান উপলক্ষে বিশেষ সংযোজন ইফতারি। নানা রকম মুখরোচক ইফতারিও অর্ডার করা যাবে ইউনিমার্ট থেকে।
চালডাল
ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান চালডাল থেকেও কেনা যাবে নিত্যপণ্য। কাঁচাবাজার বা শুকনা খাবার যা দরকার, সবই মিলবে চালডাল ডটকমে। অর্ডার করার পর ক্রেতার হাতে যতটা দ্রুত সম্ভব পণ্য পৌঁছে দিতে চেষ্টা করে তারা। এ সময় বিভিন্ন পণ্যে ছাড় দিচ্ছে তারা। ঠিকানা: www.chaldal.com
অ্যাপে ইফতারি
খাবার সরবরাহ করে এমন বেশ কিছু অ্যাপ চালু আছে ঢাকা, চট্টগ্রাম বা সিলেটের মতো বড় বড় শহরে। রেস্তোরাঁর তৈরি করা খাবার দ্রুত গ্রাহকের ঘরে পৌঁছে দেয় তারা। সহজ ফুডের পরিচালক ফারজানা শারমীন বলেন, ‘অনেক জায়গার এক বা একাধিক ইফতারির সুনাম আছে। লকডাউন বা কোয়ারেন্টিনে থাকায় সেসব খাবার খেতে ইচ্ছা করলেও বাইরে যাওয়া বারণ। তাই হালিম বা িজলেপির মতো খাবারগুলো গ্রাহকের কাছে নিরাপদে, দ্রুত পোঁছে দিচ্ছি আমরা।’
এরই মধ্যে অনেক রেস্তোরাঁ ইফতারি তৈরি শুরু করেছে, অনেক রেস্তোরাঁ পাঁচ রমজান থেকে ইফতারি তৈরি করবে। ইফতারি তৈরি করছে কেএফসি, পিজ্জা হাট, গ্লোরিয়া জিনস, হারফি, মিনা সুইটস, প্রিমিয়াম সুইটস ও স্টার হোটেলের মতো বেশ কিছু খাবারের দোকান। সহজ ফুড ছাড়াও উবার ইটস, ফুডপান্ডা, পাঠাও ফুডের মাধ্যমে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ইফতারি অর্ডার করা যাবে নির্দিষ্ট রেস্তোরাঁ থেকে। এ ছাড়া কিছু রেস্তোরাঁ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ফেসবুক বা মুঠোফোন নম্বর ব্যবহার করে ইফতারি বা রাতের খাবারের অর্ডার নিয়ে গ্রাহকের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন।
পান্থপথের মাদল খাবারঘর প্রায় ৩০ ধরনের ইফতারি তৈরি করছে। হোম ডেলিভারি ও পার্সেল সার্ভিসের মাধ্যমে সেসব খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে কলাবাগান, ধানমন্ডি, রাজাবাজার, কাঁঠালবাগান, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার থেকে দিলু রোড পর্যন্ত। ০১৭১১৮১৭৬৯১ নম্বরে ফোন করে অর্ডার দিতে পারেন মাদলের খাবার।