অর্ধেকের বেশি পরকীয়ার স্থায়িত্ব এক মাস থেকে এক বছর

দীর্ঘ আট বছর ধরে পরকীয়া প্রেম নিয়ে গবেষণা করছেন মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অ্যালিসিয়া ওয়াকার। সম্প্রতি তাঁর একটা পেপার প্রকাশিত হওয়ার পর সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। সেটি নিয়ে প্রতিবেদন করেছে ‘স্ট্যাটিস্টা ডট কম’ ও ‘দ্য ইকোনমিক টাইম’। প্রতিবেদনের কিছু হাইলাইট তুলে ধরা হলো।
যে ১০ পেশার মানুষ সবচেয়ে বেশি পরকীয়া করে, তার মধ্যে সবার ওপরে রয়েছে সামাজিক কাজ, প্রতীকী ছবি
ছবি: পেক্সেলসডটকম

এই গবেষণা বলছে, বিশ্বে প্রতিনিয়ত যে বিচ্ছেদের হার বাড়ছে, এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে পরকীয়ার। যদিও পরকীয়ায় ‘সিরিয়াস’ সম্পর্ক কম ক্ষেত্রেই হয়। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই সম্পর্ক পারিবারিক জীবনে অশান্তি ডেকে আনে এবং সেটা বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়ায়।

শতকরা ৫০ ভাগের বেশি পরকীয়া সম্পর্কের স্থায়িত্ব এক মাস থেকে এক বছর। এক বছরের বেশি হলে তা সর্ব্বোচ্চ ১৫ মাস বা তার কিছু বেশি পর্যন্ত টেকসই হয়। শতকরা ৩০ ভাগ সম্পর্ক দুই বছর বা তার বেশি স্থায়ী হয়। পাঁচ ভাগের কম ক্ষেত্রে পরকীয়ার সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়। যদিও এই সংখ্যা বাড়ছে।

শতকরা ৫০ ভাগের বেশি পরকীয়া সম্পর্কের স্থায়িত্ব এক মাস থেকে এক বছর, প্রতীকী ছবি

যে ১০ পেশার মানুষ সবচেয়ে বেশি পরকীয়া করে, সেগুলোর ভেতর সবার ওপরে রয়েছে সামাজিক কাজ (সোশ্যাল ওয়ার্ক)। তারপরে রয়েছে শিল্প ও বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি। তাই কেবল হলিউড আর বলিউডঅলাদের পরকীয়ার কারণে চোখ রাঙানো ভুল।

আশ্চর্যজনকভাবে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শিক্ষাক্ষেত্র। তারপর রয়েছে আইন পেশার মানুষেরা আর মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। এরপর চিকিৎসাক্ষেত্র, মার্কেটিং, সাংবাদিকতা, ফিন্যান্সের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিত্ব আর উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ীরা। এই গবেষণা অনুসারে পরকীয়ায় শীর্ষ দশে নেই রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষেরা!

প্রতিনিয়ত বাড়ছে বিচ্ছেদ, এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে পরকীয়া, প্রতীকী ছবি

পরকীয়ায় শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে থাইল্যান্ড, ডেনমার্ক, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নরওয়ে, স্পেন, ফিনল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য। থাইল্যান্ডের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার বিবাহিত ব্যক্তিদের ভেতর শতকরা ৫০ ভাগের বেশি বিবাহিত মানুষেরা জানিয়েছেন, তাঁদের অন্য সম্পর্ক আছে। তবে সঙ্গে এ–ও বলেছেন, এটাকে এত গুরুত্ব দেবার কিছু নেই। সেটার অবস্থান পরিবার আর পেশাগত দায়িত্বের পর।

এই গবেষণায় বলা হয়েছে, নিঃসন্তান দম্পতির চেয়ে যাদের সন্তান আছে, তাদের পরকীয়ার প্রবণতা বেশি। শতকরা ৫০ ভাগের বেশি পরকীয়ার সম্পর্ক রাখা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা পারিবারিক জীবনে ‘বোর’ হয়ে পরকীয়ায় জড়িয়েছেন। এই গবেষণার অন্যতম ফলাফল হলো, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, পরকীয়ার সম্পর্ক পারিবারিক জীবনের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ নয়, বরং ভারসাম্য আনতে সাহায্য করেছে। পরকীয়ার ফলে পারিবারিক সম্পর্ক আগের চেয়ে ভালো হয়েছে, এমন সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়! তবে মাত্রাজ্ঞানকে এ ক্ষেত্রে উপেক্ষা করা যাবে না।

পরকীয়া সম্পর্ক রাখা শতকরা ৫০ ভাগের বেশি মানুষ জানিয়েছেন, পারিবারিক জীবনে ‘বোর’ হয়ে পরকীয়ায় জড়িয়েছেন তাঁরা, প্রতীকী ছবি