এক আদিম রহস্যের নাম মৃত্যু। অমোঘ, অজেয়, অনিবার্য। চিরকালীন বিস্ময়—কারও কাছে সে চূড়ান্ত আতঙ্ক। কারও কাছে ‘মরণ রে, তুঁহু মম শ্যাম সমান’। সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষ বুঝতে চেয়েছে, মৃত্যু আসলে কী?
জীবন ও মৃত্যুর পার্থক্য সাদা ও কালোর মধ্যকার পার্থক্যের মতো সরল নয়। মূলত মৃত্যুর কোনো একক সংজ্ঞা নেই; এমনকি নেই সুনির্দিষ্ট কোনো মুহূর্ত। কখনো কখনো অনেক সরল প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা সবচেয়ে কঠিন। এমনই প্রশ্ন হলো মৃত্যু কী এবং এটা কখন ঘটে?
চিকিৎসকেরা হৃদ্যন্ত্র, ফুসফুস ও মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ-সংক্রান্ত কিছু নির্ণায়ক বিবেচনায় নিয়ে রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে কখন চূড়ান্ত বা সামগ্রিক মৃত্যু (সোমাটিক ডেথ) ঘটে, তার উত্তর দিতে পারেন না। জীববিজ্ঞানের ভাষায় বলতে গেলে, মৃত্যুর কোনো সুনির্দিষ্ট একক মুহূর্ত নেই। মৃত্যুকালে মানুষ ধারাবাহিকভাবে ছোট ছোট মৃত্যুর ভেতর দিয়ে যায়। আলাদা আলাদা টিস্যু আলাদা আলাদা সময়ে মারা যায়।
২০১৭ সালে নিউইয়র্ক শহরের এনওয়াইইউ ল্যাংগোন স্কুল অব মেডিসিনের ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড রেসাসিটেশন রিসার্চ বিভাগের প্রধান স্যাম পারনিয়া এক গবেষণায় দাবি করেন, তাত্ত্বিকভাবে কোনো ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করা হলেও একেবারে ফুরিয়ে যান না তিনি। তাঁর চেতনা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সজাগ থাকে এবং তিনি অন্যের কথা শুনতে পান। কিন্তু তাঁর কিছু করার মতো শক্তি বা সামর্থ্য থাকে না।
মৃত্যুর নানা ধরন
রোগীর হৃদ্যন্ত্র সচল, দেহ উষ্ণ, পাকস্থলীতে পাওয়া যায় গুড়গুড় শব্দ, অন্ত্র খাবার হজম করতে পারে, আবার শরীরের কোনো আঘাতও নিরাময়যোগ্য—এমন পরিস্থিতিতে বলাই যায় শরীর সম্পূর্ণরূপে জীবিত। অথচ চিকিৎসাবিজ্ঞানে সর্বসম্মত সংজ্ঞা অনুযায়ী এই রোগী মৃত। একে বলা হয় সচল হৃৎস্পন্দনের লাশ (বিটিং হার্ট ক্যাডাভার) বা মৃত মস্তিষ্কের (ব্রেইন ডেড) লাশ, যার রক্ত সঞ্চালনসহ শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল। এরা যে আসলেই মৃত, সে বিষয়ে চিকিৎসকেরা কীভাবে নিশ্চিত?
মৃত্যু নিশ্চিত করাটা কখনোই সহজ ছিল না। ঊনবিংশ শতাব্দীতে মৃত্যু নিশ্চিত করার ৩০টি তত্ত্ব প্রচলিত ছিল। তবে প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসাবিজ্ঞানে তার কোনোটিই সামগ্রিকভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না। ১৮৪৬ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে একাডেমি অব সায়েন্স। মৃত্যুর আগেই কাউকে সমাধিস্থ করার ঘটনা প্রতিরোধে মৃত্যুর সঠিক সংজ্ঞা নিয়ে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। তত দিনে স্টেথিসকোপ আবিষ্কার হয়ে গেছে। ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তরুণ এক চিকিৎসক মতপ্রকাশ করে বলেন, স্টেথিসকোপের মাধ্যমে চিকিৎসকেরা যদি দুই মিনিট কোনো হৃৎস্পন্দন না পান, তবে নিশ্চিতভাবেই সে মৃত। তাকে নিরাপদে সমাধিস্থ করা যেতে পারে।
এ পদ্ধতি বাতলে দিয়ে তরুণ ওই চিকিৎসক প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করেন। তখন থেকে মৃত্যু ঘোষণার এ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ১৯২০-এর দশকের এক আবিষ্কারে দেখা যায়, হৃৎস্পন্দন বন্ধের পরও রোগীর বেঁচে ওঠার সুযোগ রয়েছে। ফলে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভিত্তিতে মৃত শনাক্ত করার ওই তত্ত্ব নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে মানুষ কেন মারা যায়—১৯২০-এর দশকে সে বিষয়ে অনুসন্ধান চালান নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের তড়িৎ প্রকৌশলী কৌয়েনহোভেন। তিনি ধারণা করেন, সঠিক মাত্রার ভোল্টেজ দিয়ে ঝাঁকুনি দিতে পারলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি পুনরায় জীবন ফিরে পেতে পারে। এরপর পরবর্তী ৫০ বছর ধরে ধারণাটি বাস্তবায়নে কাজ করেন উইলিয়াম কৌয়েনহোভেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ডিফিব্রিলেটর আবিষ্কার করতে সক্ষম হন। হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেলেই একসময় ব্যক্তিকে মৃত বিবেচনা করা হতো। কিন্তু ডিফিব্রিলেটর আবিষ্কারের পর দেখা গেল, এটাই শেষ কথা নয়।
মস্তিষ্কের ক্রিয়াকর্ম শনাক্তে ব্যবহৃত ইইজি (ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাম) আবিষ্কারের পর মৃত্যু শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে পড়ে। ১৯৫০ সালের আগে অচেতন রোগীদের কেবল কোমাটোজ (গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন) বলে চিহ্নিত করা হতো। কিন্তু ১৯৫০-এর দশকের শুরুতে বিশ্বজুড়ে চিকিৎসকেরা দেখতে পান, কোমাটোজ বিবেচনা করা অনেক রোগীর মস্তিষ্কে আদৌ কোনো ক্রিয়াকলাপ নেই। এই রহস্যজনক পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করতে ফ্রান্সে প্রথম ‘কোমা ডিপ্যাস’ টার্মটি ব্যবহার করা হয়, অর্থাৎ এমন পরিস্থিতি, যা কোমা পরিস্থিতিকে ছাড়িয়ে যায়। শনাক্ত হয় ‘সচল হৃৎস্পন্দনের লাশ, যাদের মস্তিষ্ক মৃত কিন্তু শরীর জীবিত। এটা সম্পূর্ণ নতুন ধরনের রোগী, যা এক ধাক্কায় পাঁচ হাজার বছরের চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ধারণাকে উল্টে দেয়। জন্ম হয় মৃত্যু সম্পর্কে নতুন দার্শনিক, নৈতিক এবং আইনি জটিল প্রশ্নের।
কোমাসহ অন্যান্য অচেতন পরিস্থিতির সঙ্গে সচল হৃৎস্পন্দনের লাশের সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই রোগীরা নিথর পড়ে থাকে এবং নাম ধরে ডাকলেও কোনো সাড়াশব্দ দেয় না, তবে কোমার ক্ষেত্রে ঘুম এবং সংবেদনহীন জাগরণ চক্রে রোগীর মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ চালু থাকে। কোমায় থাকা রোগীদের সম্পূর্ণ আরোগ্যলাভের সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু ব্রেইন ডেড হলে রোগীর আর বাঁচার কোনো সম্ভাবনা নেই।
আরেকটি পরিস্থিতি হলো পারসিস্টেন্ট ভেজেটেটিভ স্টেট (পিভিএস)। এ পরিস্থিতি কোমার চেয়ে সংকটপূর্ণ। পিভিএস রোগীর মস্তিষ্কের ওপরের অংশ স্থায়ী বা অপরিবর্তনীয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এই রোগী মৃত নয়। পিভিএসের আরও দুটি নাম রয়েছে—অ্যাপালিক সিনড্রোম এবং আনরেসপনসিভ ওয়েকফুলনেস সিনড্রোম। কাজেই বলা যায়, কিছু মৃত অন্যদের তুলনায় বেশি মৃত।
কেবল ‘ব্রেইন স্টেম’সহ পুরো মস্তিষ্ক মৃত হলেই সচল হৃৎস্পন্দনের লাশ বিবেচিত হয়। টিউব আকৃতির মস্তিষ্কের নিচের অংশ হলো ব্রেইন স্টেম, যা শ্বাস-প্রশ্বাসসহ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু এই ব্রেইন স্টেমসহ পুরো মস্তিষ্কের মৃত্যু হলেও সচল হৃৎস্পন্দনের লাশের শরীরের ক্রিয়াকলাপ চালু থাকে। কীভাবে?
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সৈন্য, কসাই এবং জল্লাদেরা দেখেছেন, শিরশ্ছেদ বা দ্বিখণ্ডিত করার পরও শরীরের বিভিন্ন অংশ আপনা-আপনিই কাঁপছে। লাইফ সাপোর্ট আবিষ্কারের অনেক আগে ঊনবিংশ শতাব্দীতে চিকিৎসকেরা শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরও হৃৎস্পন্দন চালু রয়েছে—এমন অনেক রোগী পেয়েছেন। এর কারণ হলো লাজারাস রিফ্লেক্স। স্বয়ংক্রিয় এই রিফ্লেক্সের কথা প্রথম শোনা যায় ১৯৮৪ সালে। এই রিফ্লেক্সের কারণে অনেক সময় মৃত ব্যক্তি শোয়া অবস্থা থেকে বসে পড়ে, হাত ওপরে তুলে আবার নিচে ফেলে দেয়। বেশির ভাগ রিফ্লেক্স মস্তিষ্কের মধ্যস্থতায় ঘটে থাকলেও এই রিফ্লেক্স হয় শিরদাঁড়ার মধ্য দিয়ে।
পাশাপাশি জীবন-মৃত্যুর ধারাবাহিকতায় কোনো ব্যক্তি মারা যাওয়ার পরও কয়েক দিন পর্যন্ত ত্বক এবং মস্তিষ্কের স্টেম সেল বেঁচে থাকে। পেশির স্টেম সেল মৃত্যুর আড়াই সপ্তাহ পরও জীবিত পাওয়া গেছে। এমনকি শেষনিশ্বাস নেওয়ার পর দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আমাদের জিন বেঁচে থাকে।
বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসা কর্মকর্তা এ এইচ এম মাহফুজ উল্লাহ বলেন, মস্তিষ্ক বাদে শরীরের সব কোষ বা টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত বা আহত হলে তা পুনর্জীবিত (রিজেনারেট) হয় বা ক্ষতি পুষিয়ে নেয়। আর মানুষের জন্ম-প্রক্রিয়ায় শুরুর দিকে মস্তিষ্ক তৈরি হয় এবং মস্তিষ্কের কোষ বা টিস্যু কখনো পুনর্জীবিত হয় না বা ক্ষতি পুষিয়ে নেয় না। তাই মস্তিষ্কের ক্রিয়াকর্ম থেমে গেলে আর বেঁচে থাকার কোনো সুযোগ থাকে না।
মৃত্যু কী?
ডার্টমুথের নিউরোলজি অ্যান্ড মেডিসিনের প্রফেসর জেমস বারনাট বলেন, ‘কোনো ধরনের লাইফ সাপোর্টে না থাকা কোনো ব্যক্তির হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেলে বা শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে বা কয়েক মিনিট রক্ত সঞ্চালন বন্ধ থাকলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এটা মৃত্যুর প্রথাগত বা প্রচলিত ধারণা। এ রকম আরও ধারণা রয়েছে। তবে মৃত্যুর কোনো সুনির্দিষ্ট মুহূর্ত নেই বা এমন কোনো সুনির্দিষ্ট একটি মুহূর্ত নেই, যখন একজন ব্যক্তির সর্বাঙ্গ একসঙ্গে মারা যায়। মৃত্যুর আগে শরীরে ধারাবাহিক ছোট ছোট মৃত্যু ঘটে।
জেমস বারনাট বলেন, মৃত্যুর দুটি সংজ্ঞা রয়েছে। প্রথাগত একটি সংজ্ঞা হলো কোনো ধরনের লাইফসাপোর্টে না থাকা ব্যক্তির রক্ত সঞ্চালন ও শ্বাসযন্ত্র স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া।
অপর স্নায়বিক সংজ্ঞা হলো ‘মস্তিষ্কের মৃত্যু’। এর মানে মস্তিষ্কের সব ধরনের ক্রিয়াকলাপ ও সক্ষমতা অপরিবর্তনীয় বা স্থায়ীভাবে স্থগিত হয়ে যাওয়া। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস চালু থাকতে পারে। তবে কিছু দেশ এবং ধর্ম মস্তিষ্কের মৃত্যুকে মৃত্যু বলে গ্রহণ করে না। তবে বেশির ভাগই গ্রহণ করে থাকে। কারণ, আমাদের প্রযুক্তি এখন অত্যাধুনিক। তবে এরপরও আমরা আরও কয়েকটি প্রশ্ন করতে পারি, যা মৃত্যুর ঘোষণার প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলতে পারে। আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, অল্প কিছু স্নায়ু যদি সচল থাকে, তবে কি তা মস্তিষ্কের মৃত্যুর এই সংজ্ঞার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়? পূর্ণাঙ্গ মস্তিষ্কের মৃত্যু ঘোষণার আগে মস্তিষ্কের কতটুকু অংশ ‘মৃত’ হওয়া প্রয়োজন? শরীরের অন্যান্য অংশ কতটা সময় কার্যকর থাকে?
কেনেডি ইনস্টিটিউট অব এথিকসের রবার্ট ভেচ বলেন, ‘মৃত্যুর সংজ্ঞা নির্ধারণ করা মূলত একটি ধর্মীয় বা দার্শনিক প্রশ্ন।’
জীববিজ্ঞানের ভাষায়, প্রাণ আছে এমন কোনো জৈব পদার্থ বা জীবের জীবনের সমাপ্তিই হলো মৃত্যু। তা হলে জীবন কী? গবেষক, শিক্ষক ও লেখক অধ্যাপক আহমদ শরীফ সংক্ষেপে জীবনের সংজ্ঞায় বলেছিলেন, ‘জাগ্রত সময়ের অনুভূত চেতনার সমষ্টিই জীবন।’ তাহলে এই সংজ্ঞা অনুযায়ী, চেতনার স্থায়ী বিনাশই হলো মৃত্যু। অর্থাৎ মস্তিষ্কের মৃত্যু মানেই মৃত্যু। তবে এ ক্ষেত্রেও রয়েছে জটিলতা। মস্তিষ্কের মৃত্যু হলে চিকিৎসকেরা রোগীকে মৃত জ্ঞান করেন, কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করতে পারেন না যতক্ষণ পর্যন্ত হৃৎস্পন্দন বন্ধ না হয়। মাহফুজ উল্লাহ বলেন, স্থায়ীভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ না হলে কাউকে মৃত ঘোষণা করা যায় না। এ জন্য চিকিৎসকেরা প্রয়োজনে ইসিজি করে নিশ্চিত হন।
ক্লিনিক্যাল ডেড
জেমস বারনাট বলেন, পেশাদার চিকিৎসকেরা কখনো ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ শব্দ ব্যবহার করেন না। যদিও ‘যায় যায় অবস্থা’ বোঝাতে কোনো কোনো রোগীর স্বজনেরা টার্মটি ব্যবহার করে থাকেন। বারনাট বলেন, ‘এটা বলা ভুল। তবে চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত নয়—এমন ব্যক্তিরা সাধারণত এই টার্ম ব্যবহার করে থাকে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটা সঠিক নয়।’
ওহাইওর ওয়ালশ ইউনিভার্সিটির একজন বায়োএথিসিস্ট ওয়েটস্টাইন বলেন, কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ টার্মটি ব্যবহার গণমাধ্যমগুলো পাঠক-শ্রোতাদের দ্বিধাদ্বন্দ্বে ফেলে দেয়। হৃৎপিণ্ড-ফুসফুস এবং স্নায়বিক নির্ণায়ক ব্যবহার করে যদি কোনো ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করা হয়, তবে গণমাধ্যমের সহজভাবে বলা উচিত ব্যক্তিটি মারা গেছেন। ক্লিনিক্যাল ডেড বলার মধ্য দিয়ে ব্যক্তিটি আদৌ মারা গেছেন কি না, সে বিষয়ে আপনাকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ফেলে দেয়।
ওয়েটস্টাইন বলেন, ‘কাউকে মৃত ঘোষণা করা কঠিন। প্রযুক্তির অভাবের কারণে নয়, বরং প্রযুক্তি প্রাচুর্যই এর কারণ।’
দুই শতাব্দী আগে চিকিৎসকেরা মৃত্যুর প্রহর নির্ণয়ে সমস্যায় পড়তেন। কারণ, তখন পর্যাপ্ত পরীক্ষার সুযোগ ছিল না। প্রাচীন পদ্ধতিতে তাঁরা শ্বাস-প্রশ্বাস পরীক্ষা করতেন। আর এখন সমস্যার কারণ, অত্যাধুনিক পরীক্ষার প্রাচুর্য।
টাইম, বিবিসি, ইনডিপেনডেন্ট অবলম্বনে