আমাদের তিতকুটে টক শো ‘কথার কথা’য় আজ উপস্থিত আছেন এই সময়ের একজন আলোচিত সেলিব্রিটি ছাগল।
‘ভাই সাহেব, আপনার নাম কী?’
‘ব্যাঁ...! ম্যাঁ...!’
‘জনাব, ব্যাঁ ব্যাঁ বাদ দিয়ে কথা বলেন। আপনার নাম বলেন।’
‘ব্যাঁ...! ম্যাঁ...! কথা বলতে ডর লাগে। ডরের চোটে কথা বলতে ইচ্ছা করছে না।’
‘কিসের ভয়?’
‘ব্যাঁ...! শুনেন নাই! গত সপ্তাহে গোপালগঞ্জে একটা গাছ কথা কওয়া শুরু করছিল। পাবলিক ঝাঁপায়ে পড়ছিল তার কথা শোনার জন্য। পরে সেই গাছ কাইট্যা ফালাইছে।’
‘বলেন কী! গাছটা কাটল কেন?’
‘ক্যান আবার? কথা বলার অপরাধে। আরে ব্যাটা, তুই হলি গাছ। তোর শোনার কাম শুনবি। কইতে গেলি ক্যান? কথা কইছে, জানও গেছে। কবি গুরুপদ তো আর সাধে বলেন নাই, “দুডো চোখ আর দুডো কান, দ্যাখপা আর শুনবা, এট্টা মুখ তো, তাই কথা কম কবা।” ব্যাঁ...ব্যাঁ...!’
‘আপনি টেনশন করবেন না। আপনি কথা চালায়ে যান। আগামী কোরবানির আগে আপনাকে জবাই দেওয়ার চান্স খুবই কম। আপনার নাম বলেন।’
‘নাম জেনে কী করবেন? দাম আর বংশপরিচয় জানলেই তো টাশকি খেয়ে যাবেন।’
‘বলেন কী! আপনিই তাহলে সেই উচ্চবংশীয় ছাগল?’
‘জে, আমার পূর্বপুরুষ ইয়েমেন থিকা আসছিলেন। বংশমর্যাদার কারণে দাম উঠছিল ১৫ লাখ টাকা।’
‘আপনাদের বংশমর্যাদা কিনতে গিয়ে অনেকের যে মানমর্যাদা লাটে উঠছে, সে খবর পাচ্ছেন?’
‘জে, পাচ্ছি। শুনলাম, আমারে কেনার জন্য যে লোক লাখ টাকা বায়না করছিল, সে নাকি মহাবিপদে পড়ছে। ১৫ লাখের ছাগল খুঁড়তে ৭০ লাখের ষাঁড় বাইর হয়্যা গেছে। তার প্লট-ফ্ল্যাট, জমিজিরাত, ক্যাশ টাকা সব আস্তে আস্তে বাইর হইতেসে।’
‘হ্যাঁ, আপনাকে কিনতে গিয়েই নাকি ঝামেলা হয়েছে। দুদকের ভয়ে ভদ্রলোকের ফুল ফ্যামিলি নাকি এখন গা ঢাকা দিয়েছে।’
‘ব্যাঁ...! জে, সেই লোক এখন আমার চেয়ে বড় ছাগল হয়্যা গেছে। তার জীবন নাকি এখন ঘাসময়। সে নাকি এখন পথে পথে গেয়ে বেড়াচ্ছে “একটি ছাগলের দাম দিতে গিয়ে, ঘটিবাটি–চাকরি সব হারিয়ে, কী আমি পেলাম।”’
‘তাই বলে লোকটার চাকরি খেলেন!’
‘শোনেন নাই? ছাগলে কী না খায়!’
‘তাহলে তো আপনি একজন ডেঞ্জারাস ছাগল!’
‘তা সামান্য ডেঞ্জারাস বলতে পারেন। আমার মতো উচ্চবংশীয় ছাগল কেনায় বিপদ একটু থাকেই। এই ধরনের ছাগল কেনার আগে সবারই ভাবা দরকার, “সকলেই ছাগল নয়, কেউ কেউ ছাগল”।’