বসের বকা, বাসের চাপ, রিটেক ও ঘুষের ফুড রিভিউ

ফেসবুকে আছে রেস্তোরাঁ বা খাবারের রিভিউ লেখার একাধিক গ্রুপ। বিচিত্র সব খাবার খেয়ে ভালো-মন্দ লেখেন ভোজনরসিকেরা। মূল ধারার এই খাবারগুলো ছাড়াও জীবনে আমরা অনেক খাবার খাই। তাহলে সেই খাবারগুলোর রিভিউ কেন লেখা হয় না? তাই সেটাই লিখলেন রাফি আদনান, চেখে দেখুন।

বসের বকা

অনেক টেস্টি, ইয়াম্মি একটি খাবার। চাকরি পাওয়ার পর এটাই প্রথম নতুন কোনো খাবার, যেটা চেখে দেখলাম। জায়গা আর পরিবেশটাও ছিল বলার মতো। তবে বসার চেয়ারটা একটু শক্ত ছিল, কিঞ্চিৎ নরম আশা করেছিলাম। এসি রুম, গ্লাসের পাশে সুসজ্জিত রঙিন পর্দা টানানো। খারাপ লাগার কোনো কারণ নেই। আপনারাও টেস্ট নিয়ে দেখতে পারেন। দাম সম্পর্কে কিছু বলার নেই। দাম হিসেবে দিতে হয়েছে টানা দুদিন অফিসে দেরি করে আসা। সার্ভিসটাও বেশ লেগেছে! একটানা ঝাড়ির ওপরে রেখেছিলেন।

লোকাল বাসে চাপ

পছন্দের খাবারের তালিকায় ওপরের দিকে আছে এই খাবার। লোকাল বাসের নিয়মিত যাত্রী হিসেবে আমি প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা নাশতা করি মানুষের চাপ খেয়ে। ঝুলে ঝুলে যাওয়া-আসা করার সময় আমার সামনে ও পেছনে দুজন দুদিক থেকে আমাকে চাপ খাওয়াতে থাকেন। অতুলনীয় এ খাবারের দামও খুব অল্প। শুধু বাস ভাড়াতেই এই খাবারটা পাবেন আপনি। মাঝেমধ্যে ‘স্টুডেন্ট’ বলে ‘হাফ’ ভাড়াতেও স্বাদ পেতে পারেন এমন অনন্যসাধারণ খাবারের। পরিবেশের কথা আর না-ইবা বললাম। একা বা বন্ধুরা মিলে খাওয়ার জন্য অতুলনীয়।

সতর্কতা: কখনো প্রেমিকা নিয়ে এই খাবার খেতে যাবেন না, পরদিন আপনার ব্রেকআপ হয়ে যেতে পারে!

রিটেক

ভার্সিটির প্রতি সেমিস্টারে অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার রিটেক। বিভিন্ন ফ্লেভার ও সাইজের রিটেক মাঝেমধ্যে বদ হজমের উদ্রেক করলেও শরীরের পক্ষে উপকারী। সার্ভিস অতুলনীয় হলেও আরেকটু ভালো করা উচিত। একই সারিতে সবাইকে বসিয়ে খুব সুন্দরভাবে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র সরবরাহ করার পর খুব নিরিবিলি পরিবেশে রিটেক খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়। দাম হিসেবে কোর্স ফির পুরোটাই দিতে হয়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও পরিবেশটা আরেকটু নিরাপদ হতে পারত। কিছু খাদ্য সবার সামনে খেতে লজ্জা লাগে তো!

ঘুষ

ঐতিহ্যবাহী এই খাবারটি সবার জন্য নয়। হর্তাকর্তা-টাইপ ব্যক্তিবিশেষের জন্য বেশ উপাদেয় একটি খাবার। স্থান-কাল-পাত্রবিশেষে কেউ কেউ নিয়মিত খায় আবার কেউ কেউ দিনে একাধিকবারও খায়। সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত এই খাবার মাঝেমধ্যে দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাই চোখ-কান খোলা রেখে খাবেন। সাধারণত রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে টেবিলের নিচ পর্যন্ত যেকোনো জায়গায় খাওয়া যায়, তাই প্লেসের নিরাপত্তা কম। সার্ভিস অনন্য-অসাধারণ। দাম হিসেবে আপনাকে বড় কোনো ফাইল সাইন করা থেকে শুরু করে যেকোনো আটকে থাকা কাজ করে দিতে হবে।

আগামীকাল পড়ুন ‘ছ্যাঁকা, ক্রাশ ও বাঁশের ফুড রিভিউ’