‘মিস ইউনিভার্স’–এর মুকুট পরতে হলে নারী হতে হবে, অবশেষে এ রকম ভাবনা থেকে সফলভাবে বের হয়ে এল পৃথিবী। লিঙ্গসমতার এই যুগে এ এক যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা। আর এই যুগান্তকারী অধ্যায়ের জন্ম দিলেন স্প্যানিশ ফুটবলার আলভারো মোরাতা। এর আগে এই মুকুট জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়েও তা আর পারেননি আর্জেন্টাইন ফুটবলার গঞ্জালো হিগুয়েইন। জাতীয় দলে আর সুযোগ না পাওয়ায় মিস ইউনিভার্সের মুকুটটাও আর জয় করা হয়ে ওঠেনি তাঁর। তবে তাঁর দেখানো পথে হেঁটে ঠিকই এই মুকুট জয় করলেন মোরাতা।
কঠোর অধ্যবসায়, মানে একের পর এক মিস করে, অবশেষে হিগুয়েইন ভাইয়ের শিষ্য হিসেবে ‘মিস ইউনিভার্স’ হতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত।আলভারো মোরাতা, স্প্যানিশ ফুটবলার
নারীদের নিয়ে যেভাবে মিস ইউনিভার্স অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, পুরুষদের ক্ষেত্রে সেভাবে হয় না। এ ক্ষেত্রে ছেলেদের কর্মকাণ্ডের ওপর বিচার করে চূড়ান্ত বিজয়ী নির্বাচন করা হয়। মোরাতাকেও সেভাবেই নির্বাচন করা হয়েছে। যেহেতু মোরাতা একজন ফুটবলার, তাই তাঁর ফুটবল খেলা পর্যবেক্ষণ করেই তাঁকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ঠিক কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করে মোরাতাকে ‘মিস ইউনিভার্স’ হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে, সেটা নিয়ে জানতে চাইলে পর্যবেক্ষকেরা বলেন, ‘আমরা খেয়াল করেছি, মোরাতা মাঠে অনেক মিস করেন। গোলের সহজ সুযোগ পেয়েও সেটা মিস করেন, খালি গোলপোস্ট পেয়েও মিস করেন। অন্যের দেওয়া পাসও ধরতে গিয়ে মিস করেন, পেনাল্টি মারতে গিয়েও মিস করেন। এর আগেও তিনি পেনাল্টি মিস করলেও ইউরোর ইতালি–স্পেন ম্যাচে তাঁকে পেনাল্টি মিস করতে দেখেই আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে আসলে মিস ইউনিভার্সের একমাত্র দাবিদার এই মোরাতাই। তাই আমরা তাঁকেই “মিস ইউনিভার্স” হিসেবে নির্বাচন করেছি!’
‘মিস ইউনিভার্স’ হতে পেরে চরম উচ্ছ্বসিত আলভারো মোরাতা। এ বিষয়ে ‘একটু থামুন’–এর তরফ থেকে তাঁর অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে অনেক খেলোয়াড় অনেক দিন ধরে অনেক কিছু মিস করেছে। এত এত প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এই মুকুট জয় করা সত্যিই গর্বের। ছোটবেলা থেকেই আমার আইডল হিগুয়েইন ভাই। তিনি অনেক চেষ্টা করেও পুরস্কারটি জিততে পারেননি। কঠোর অধ্যবসায়, মানে একের পর এক মিস করে, অবশেষে হিগুয়েইন ভাইয়ের শিষ্য হিসেবে “মিস ইউনিভার্স” হতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত।’
অন্য কোনো খেলোয়াড়ের মধ্যে ‘মিস ইউনিভার্স’ হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পান কি না, এই প্রশ্নের জবাবে মোরাতা বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই পাই। ব্রাজিলের তরুণ খেলোয়াড় ভিনিসিয়াস জুনিয়রের মধ্যে স্পষ্ট আমাকে দেখতে পাচ্ছি। সে এই তারুণ্যেই যেভাবে মিস করে, তাতে করে মনে হচ্ছে, বিয়ে করার আগেই ছেলেটা মিস ইউনিভার্সের মুকুট পেয়ে যাবে। ওর জন্য আমার দোয়া রইল।’
ফুটবল মাঠে মিসের কথা এলেই ‘কিংবদন্তি’ ফুটবলার গঞ্জালো হিগুয়েইনের কথা চলে আসে। অনেক অবিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, হিগুয়েইন শুধু ফুটবল মাঠেই নয়, মাঠের বাইরেও অনেক কিছু মিস করতেন। অগ্রিম টিকিট কেটেও ট্রেন মিস করতেন, প্রেমিকার সঙ্গে ডেট মিস করতেন, ক্রিকেট খেলতে গিয়ে ক্যাচও মিস করতেন। নিজের শিষ্য মোরাতার এ রকম অর্জন নিয়ে তিনি কী ভাবছেন? এই প্রশ্ন নিয়ে ইমো অ্যাপের মাধ্যমে হিগুয়েইনকে ফোন করতেই তিনি বলেন, নো ইংলেস, নো ইংলেস, সরি!