ব্যাকরণ

রাঘববোয়াল কেন বলি

বাংলা ভাষায় যে বাগ্‌ধারাগুলো আছে, সেগুলো এল কোথা থেকে?

অলংকরণ: একটু থামুন

চুনোপুঁটি

পুঁটি মাছ এমনিতেই আকারে ছোট হয়। জাতভেদে পূর্ণবয়স্ক একটি পুঁটির আকৃতি আড়াই থেকে ছয় ইঞ্চি হয়ে থাকে। কোনো কোনো পুঁটি মাছের

প্রজাতি দুই ইঞ্চির বড় হয় না। খালে–বিলে অল্প পানিতে এই মাছ বাস করে।

চুনো মানে ছোট; ফলে চুনোপুঁটি বলতে ছোট পুঁটি মাছকে বোঝানো হয়।

আর তাই নগণ্য বা গুরুত্বহীন কোনো মানুষকে বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয় চুনোপুঁটি বাগ্‌ধারাটি।

কই মাছের প্রাণ

কই মাছ পানি থেকে তোলার পরও ছয় থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে। সাধারণ মাছেরা পানিতে ফুলকার সাহায্যে শ্বাসকাজ চালায়।

কই মাছের শ্বাস নেওয়ার জন্য ফুলকা ছাড়াও বিশেষভাবে অভিযোজিত কানকো রয়েছে। মাথার দুই পাশে থাকা এই কানকোর সাহায্যে সে বায়ুমণ্ডল থেকেও দীর্ঘ সময় ধরে অক্সিজেন নিতে পারে। কঠিন প্রাণ কিংবা যা সহজে মরে না—এমন কোনো ব্যক্তি ও প্রাণী বোঝাতে কই মাছের প্রাণ বাগ্‌ধারাটির প্রয়োগ হয়।

রাঘববোয়াল

রামের বাবার নাম দশরথ। রাজা দশরথের ঠাকুরদাদার নাম রঘু। রঘু বংশে জন্ম যাদের, তাদের বলা হয় রাঘব। এই অর্থে রামের আরেক নাম রাঘব। ‘রাম’ শব্দটি বাংলায় বড় অর্থে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। যেমন, রামছাগল বলতে বড় ছাগল, রামদা বলতে বড় বা বিশাল আকারের দা বোঝানো হয়। একইভাবে, ‘রাঘব’ শব্দটিও বড় অর্থে ব্যবহৃত হয়। রাঘববোয়াল মানে তাই বড় আকারের বোয়াল মাছ। কিন্তু বাগ্‌ধারায় প্রভাবশালী বা ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে রাঘববোয়াল বলে।

তারিক মনজুর: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়