কী কেন কীভাবে

রাইস কুকার কীভাবে হাঁড়ির খবর টের পায়

কুকারের ভেতরের পানি পুরোটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত থার্মোস্ট্যাটে তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রিতেই স্থির থাকে
পেক্সেলস

ভাত রাঁধা খুব সহজ কাজ নয়। কখনো নরম হয়ে একেবারে জাউ, আবার কখনো একদম চাল—সেদ্ধই যেন হয়নি। কিন্তু রাইস কুকার কী সুন্দর করে আপনার ভাত রেঁধে দেয়—বেশি নরম না, বেশি শক্তও না। আপনাকে কোনো চিন্তা করতে হয় না। সারাক্ষণ ভাতের ওপর নজর রাখারও দরকার নেই। কীভাবে সেই কুকার বুঝতে পারে, কখন ভাত ঠিক ঠিক হয়ে গেছে?

চুলায় ভাত রাঁধা যে কত কঠিন, তা আমরা সবাই জানি। এক রকম ভাত রাঁধাকে আমরা বলি ‘বসা-ভাত’। অর্থাৎ এর মাড় ফেলার দরকার হয় না। যত পট চাল তার দ্বিগুণ (আতপ চাল হলে দেড় গুণ) পানি দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিন। পানি ফুটতে থাকলে একটু লক্ষ রাখুন। কিছুটা শুকিয়ে এলে কম জ্বালে চুলায় রাখুন। আপনাআপনি ভাত তৈরি হয়ে থাকবে। এতে সুবিধা হলো, কম জ্বালে চুলায় কিছু বেশি সময় থাকলেও ভাত পুড়বে না। আর ‘মাড়-গালা’ ভাত রাঁধতে বিশেষ দক্ষতা লাগে। সব সময় নজর রাখতে হয়। বেশিক্ষণ চুলায় থাকলে ভাত গলে জাউ হয়ে যাবে, কম সময় থাকলে শক্ত থেকে যাবে। তাই মাঝেমধ্যে খুন্তিতে দুয়েকটা ভাত তুলে টিপে দেখতে হয়, সেদ্ধ হলো কি না। এরপর মাড় ফেলে দিলেই ঝরঝরে ভাত। এখন প্রশ্ন হলো, রাইস কুকারের তো চোখ নেই, হাতের আঙুল নেই, তাহলে এটি কীভাবে টের পায়, কখন চাল ঠিকমতো সেদ্ধ হলো?

কুকারের ভেতর থাকে থার্মোস্ট্যাট। এর কাজ হলো, ভেতরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করা। কুকারে নির্দিষ্ট পরিমাণ চালের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি দিতে হয়। এরপর বিদ্যুৎ সংযোগ দিলে (সুইচ অন) পানি গরম হয়ে ফুটতে থাকে। ফুটন্ত পানির তাপমাত্রা যেহেতু ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তাই কুকারের ভেতরের পানি পুরোটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত থার্মোস্ট্যাটে তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রিতেই স্থির থাকে। কিন্তু যখনই সব পানি শেষ হয়ে যায়, তখন কুকারের ভেতরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রির ওপরে উঠতে শুরু করে। ঠিক তখনই থার্মোস্ট্যাট টের পায়, আর গরম করার দরকার নেই। এটি তখন সংকেত দেয় যে ভাত হয়ে গেছে, আর অমনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ (সুইচ অফ) হয়ে যায়।