কী কেন কীভাবে

যে কারণে বাড়ির সীমানায় নারকেলগাছ থাকলে বিপদের আশঙ্কা কমে

বাড়ির চারদিকে কিছু নারকেলগাছ থাকলে ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কমে যায়
ছবি: পেক্সেলস

আগে গ্রামের প্রায় সব বাড়ির সীমানায় কয়েকটা করে নারকেলগাছ দেখা যেত। এখন অবশ্য দৃশ্যপট অনেকটা বদলে গেছে। গ্রামেও লেগেছে শহুরে ‘আধুনিকতা’র ছোঁয়া। কোনো কোনো গ্রামে তো সাইনবোর্ডে লেখা হয়েছে ‘গ্রাম হবে শহর’। গ্রামগুলোকে কেন শহর বানাতে হবে, এ প্রশ্নের উত্তর মেলাতে পারিনি। হ্যাঁ, শহরের মতো নাগরিক সুবিধা গ্রামেও চাই; কিন্তু তাই বলে গ্রামকে শহর বানাতে হবে কেন! যাহোক, ধান কাটতে শিবের গিত হয়ে যাচ্ছে। মূল প্রসঙ্গে ফেরা যাক। কেন গ্রামের প্রায় সব বাড়ির সীমানায় নারকেলগাছ দেখা যেত? কিংবা এখনো কেন অনেক জায়গায় দেখা যায়?

ডাবের পানি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। আবার নারকেলও আমরা বেশ মজা করে খাই। তাই বাসার আঙিনায় নারকেলগাছ থাকা স্বাভাবিক। অন্যান্য ফলগাছের মতো দুই-চারটা নারকেলগাছ সেখানে থাকে।

কেবল ফল নয়, নারকেলগাছ আমাদের অনেক কিছুই দেয়

কিন্তু শুধু কি ফলগাছ হিসেবেই নারকেলগাছের এত গুরুত্ব? না, এর আরও উপকারিতা আছে। বাড়ির চারদিকে কিছু নারকেলগাছ থাকলে ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কমে যায়। কারণ, বজ্রপাতের সময় মেঘে সঞ্চিত ঋণাত্মক বিদ্যুৎ বাতাসের বাধা অতিক্রম করে দ্রুত মাটির সংস্পর্শে আসতে চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে বাসার কাছের নারকেলগাছ সাহায্য করে।

নারকেলগাছ অনেক উঁচু এবং এর পাতাগুলো সরু ও সুঁইয়ের মতো চোখা। এই সরু পাতাগুলো মেঘের বিদ্যুৎ নিষ্ক্রিয় করতে ভূমিকা পালন করে। মেঘের বিদ্যুৎ নারকেলগাছের পাতার ডগাতেই নিষ্ক্রিয় হয়। মানুষ যুগ যুগের অভিজ্ঞতায় দেখেছে, বাড়ির চারপাশে নারকেলগাছ থাকলে বজ্রপাতে বাড়ির ক্ষতি হয় না। এ জন্যই সাধারণত গ্রামের বাসায় বাসায় নারকেলগাছ দেখা যায়।

নারকেলগাছের পাতাগুলো মেঘের বিদ্যুৎ নিষ্ক্রিয় করতে ভূমিকা পালন করে

শহরে নারকেলগাছ লাগানোর জায়গা থাকে না। তাই বাজের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উঁচু দালানের চূড়ায় চোখা লোহার শিক লাগানো হয়, যা তামার তারের সাহায্যে দেয়ালের ভেতর দিয়ে মাটির সঙ্গে যুক্ত থাকে। ইংরেজিতে একে বলে আর্থিং। বজ্রপাতের সময় মেঘের বিদ্যুৎ ওই সব আর্থিং ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় হয়, বাড়ির ক্ষতি হয় না। গ্রামে এই আর্থিংয়ের কাজটি করে নারকেলগাছ।