চোখে বালুকণা পড়লে চোখ খচখচ করে, চোখে পীড়া অনুভূত হয়। একইভাবে, কোনো কোনো মানুষ চোখের সামনে পড়লে বিরক্তি তৈরি হয়। যেসব মানুষকে দেখলে অস্বস্তি লাগে কিংবা চোখে বালিকণা পড়ার মতো পীড়া অনুভব হয়, তাদের বলে চোখের বালি। একই অর্থে চক্ষুশূল শব্দেরও প্রয়োগ আছে। অর্থাৎ যাকে দেখলে চোখে শূল বা বেদনার অনুভূতি হয়।
চোখের পর্দা অর্থ লজ্জা বা সংকোচ। চোখের পর্দা, চোখের পাতা, চোখের চামড়া—এগুলো সব অনুরূপ অর্থে প্রয়োগ করা হয়। চোখের ওপর পাতা বা নেত্রপল্লব সবারই থাকে। লজ্জা পেলে মানুষের চোখের পাতা এমনিতেই নেমে আসে। চোখে পাতা বা পর্দা থাকার কারণে লজ্জাজনক কাজ করতে মানুষ সংকোচ বোধ করে। কিন্তু বাগ্ধারায় বলা হয়, যে মানুষের চোখে পর্দা নেই, তার লজ্জা বলেও কিছু নেই।
বিড়াল, কুকুর, বাঘ, সিংহ ইত্যাদি প্রাণী জন্মের পর দেখতে পায় না। এদের চোখের ওপর একধরনের পাতলা আবরণ থাকে। কয়েক দিন পর ওই আবরণ সরে গেলে চারপাশের সবকিছু দেখতে পায়। এভাবে চোখ ফুটতে প্রাণীভেদে ছয় দিন থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগে। মানবশিশু অবশ্য জন্মের পর থেকেই সবকিছু দেখতে পায়। তবে কোনো মানুষ যখন প্রকৃত অবস্থা জানতে পারে বা বুঝতে পারে, তখন বলা হয়, এত দিনে চোখ ফুটেছে।
তারিক মনজুর: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়