নোয়াল্যান্ডের এক হাজার সরকারি কর্মকর্তাকে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় অভিজ্ঞতা অর্জন করতে বাংলাদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির শিশুশিক্ষা অধিদপ্তর। নোয়াল্যান্ডের পরিকল্পনা কমিশন এর অনুমোদনও দিয়েছে।
প্রকল্পটির পরিচালক ডেভিড নেকমট ‘একটু থামুন’কে বলেন, ‘আমরা আনন্দে দিশেহারা। ৫ বছরে এক হাজার কর্মকর্তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর প্রস্তাবটি পাস হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে নোয়াল্যান্ডের কর্মকর্তারা পানি ও ডিম সেদ্ধ করা এবং তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা বিষয়ে ধারণা নিতে পারবেন। আর এ জন্য বাংলাদেশি প্রশিক্ষণ বিশেষভাবে প্রয়োজন ছিল।’
নোয়াল্যান্ডের শিশুশিক্ষা অধিদপ্তর বাংলাদেশ যাত্রার জন্য প্রাথমিকভাবে ১০ কোটি টলার (নোয়াল্যান্ডীয় মুদ্রা) পাবে। আর এই সেদ্ধ পানি ও ডিম বিতরণ কর্মসূচির জন্য মোট বরাদ্দের পরিমাণ ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টলার।
নোয়াল্যান্ডের শিশুশিক্ষা অধিদপ্তর ও পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ সফরে এসে কর্মকর্তারা ট্যাপ থেকে পানি মজুত করা এবং বাজার থেকে ডিম কেনা শিখবেন। এ ছাড়া সেগুলো সেদ্ধ করার নিয়ম এবং বিতরণের উপায় সম্পর্কেও ধারণা নেবেন। এই সফরের সুযোগ পাবেন দেশটির শিশুশিক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন এবং বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন বিভাগের কর্মকর্তারা। নোয়াল্যান্ডের শিশুশিক্ষা অধিদপ্তর বাংলাদেশ যাত্রার জন্য প্রাথমিকভাবে ১০ কোটি টলার (নোয়াল্যান্ডীয় মুদ্রা) পাবে। আর এই সেদ্ধ পানি ও ডিম বিতরণ কর্মসূচির জন্য মোট বরাদ্দের পরিমাণ ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টলার। এর আওতায় পাঁচ বছর ধরে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ শিক্ষার্থীকে পুষ্টিকর সেদ্ধ ডিম ও গরম পানি খেতে দেওয়া হবে। নোয়াল্যান্ডের ২০১টি অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা এই সুবিধা পাবে।
বেতের ভয় না দেখালে পোলাপান ডিম খাবে না। অথচ ডিম ওদের দরকার। ছেলেবেলায় ডিম খাইনি বলেই আজ আমি পোড়–খাওয়া বিরোধীদলীয় নেতা।অ্যালেন কলিমউড, নোয়াল্যান্ডের বিরোধীদলীয় নেতা
তবে নোয়াল্যান্ডের বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেন কলিমউড প্রকল্পটির ব্যাপারে কিছুটা দ্বিমত প্রকাশ করেছেন। ‘একটু থামুন’কে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে ছেলেবেলায় ডিম খেতে চাইতাম না। আমার ছেলেও এখন ডিম খায় না। নোয়াল্যান্ডে খুঁজলে এ রকম লাখ লাখ শিশু পাওয়া যাবে, যারা ডিমের নাম শুনলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেবে। তাই আমার কথা হলো, আপনারা শুধু ডিম নয়, সঙ্গে চিকন জালি বেতও আমদানি করুন। শুনেছি, বাংলাদেশে সস্তায় উন্নত মানের বেত পাওয়া যায়। বেতের ভয় না দেখালে পোলাপান ডিম খাবে না। অথচ ডিম ওদের দরকার। ছেলেবেলায় ডিম খাইনি বলেই আজ আমি পোড়–খাওয়া বিরোধীদলীয় নেতা।’
বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেন কলিমউডের মতামত জানানো হলে প্রকল্প পরিচালক ডেভিড নেকমট বলেন, ‘ডিম কীভাবে খাওয়াতে হয়, তা শেখার জন্যই তো কর্মকর্তারা বাংলাদেশে যাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা বেত নাকি জুজুর ভয় দেখিয়ে ডিম খাওয়ানো শিখে আসবেন, তা তো আমরা বলতে পারি না। তবে শুনেছি, বাংলাদেশে কাউকে কোনো কিছু গেলানোর মতো আন্তর্জাতিক মানের বিশেষজ্ঞ আছেন। তাঁদের ওপর আমাদের আস্থা আছে।’