বাংলা ভাষায় যে বাগ্ধারাগুলো আছে, সেগুলো এল কোথা থেকে?
যারা ভালো মানুষের ভাব ধরে থাকে এবং সুযোগ বুঝে খারাপ কাজ করে, তাদের বলা হয় বিড়ালতপস্বী। বিড়াল সাধারণত চুপিসারে শিকার ধরে। ধীরে ধীরে এবং সতর্কতার সঙ্গে তারা শিকারের কাছে যায়। এগিয়ে আসার সময়ে পেটে হামাগুড়ি দেয় এবং সব শেষে শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাই সাধু বা ভালো মানুষের বেশ থেকে হঠাৎ আক্রমণকারীর ভূমিকা যারা নেয়, তাদের জন্যই তৈরি হয়েছে এই বাগ্ধারা।
চামড়া দিয়ে মুখ আঁটা ঢোলজাতীয় বড় বাদ্যযন্ত্রকে ঢাক বলে। এটি ঘাড়ে ঝুলিয়ে, কোমরে বেঁধে কিংবা মাটিতে বা কোলে রেখে বাজানো হয়। ঢাক বাজাতে দুটি সরু কাঠি লাগে। ঢাকের মতো বড় জিনিসের নিত্যসঙ্গী এই কাঠি। মানে ঢাক যেখানে যায়, কাঠিও সেখানে যায়। গ্রামের মাতবর বা ক্ষমতাসীন লোকের সঙ্গেও সব সময় তার চাটুকার থাকে। চাটুকার বা তোষামোদকারী ব্যক্তি বোঝাতে ঢাকের কাঠি বাগ্ধারাটি ব্যবহার করা হয়।
ডুমুরের ফুল থাকে ফলের ভেতরে। অতি ছোট ছোট কীটপতঙ্গ সেই ফলের মধ্যে ঢুকে পরাগায়ন ঘটায়। ডুমুর ভাঙলে ভেতরে গর্ভকেশর, পুংকেশর সবই পাওয়া যাবে। ডুমুর ফুল গর্ভাশয় দ্বারা পুরোপুরি আবৃত হয়ে ফলের আকার ধারণ করে। অন্য ফুলের মতো ডুমুরের ফুল তাই সহজে দেখা যায় না। কোনো লোককে যদি সহজে দেখা না যায়, এরপর হঠাৎ একদিন তার দেখা মেলে, তখন তাকে ডুমুরের ফুল হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
তারিক মনজুর: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়