ব্যাকরণ

আক্কেল কখন গুড়ুম হয়

বাংলা ভাষায় যে বাগ্‌ধারাগুলো আছে, সেগুলো এল কোথা থেকে?

আঁকা: জুনায়েদ

কলকে পাওয়া

নারকেলের খোল, মাটির পাত্র ও কাঠের নল দিয়ে তৈরি তামাক খাওয়ার বিশেষ উপকরণকে বলা হয় হুঁকা বা কলকে। গ্রামগঞ্জে অবসরে তামাক খাওয়ার সময় একটি কলকেই এক হাত থেকে আরেক হাতে ঘুরতে থাকে। কারও হাতে কলকে না এলে মনে করা হয়, সে সম্মান পেল না বা উপেক্ষিত থেকে গেল। তাই কলকে পাওয়া বাগ্‌ধারার অর্থ সম্মান পাওয়া বা উপেক্ষিত না হওয়া।

কাকতালীয়

পরস্পর সম্পর্কহীন দুটি ঘটনা একসঙ্গে ঘটলে তাকে বলা হয় কাকতালীয় ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে মনে হয়, একটির কারণে যেন আরেকটি ঘটনা ঘটেছে! কাকতালীয় শব্দের মধ্যে আছে ‘কাক’ ও ‘তাল’—এই দুটি শব্দ। ধরা যাক, একটি কাক উড়ে এসে তালগাছে বসল; আর তখনই তালগাছ থেকে তাল পড়ল। এই আকস্মিক ঘটনা দুটির মধ্যে আদৌ কোনো সম্পর্ক বা কার্যকারণ নেই। একইভাবে, কাকতালীয় ব্যাপারেও দুটি ঘটনা সম্পর্ক ছাড়াই একত্রে ঘটে।

আক্কেল গুড়ুম

আরবি ‘আকল’ থেকে আক্কেল শব্দটি এসেছে। এর অর্থ বুদ্ধি, বিবেচনা, কাণ্ডজ্ঞান। আর ‘গুড়ুম’ হলো কামান থেকে গোলা বের হওয়ার শব্দ। আকস্মিক কোনো ঘটনায় আমাদের বুদ্ধি, বিবেচনা মাঝেমধ্যে লোপ পায় বা হারিয়ে যায়। হতবুদ্ধি হয়ে যাওয়ার এই পরিস্থিতিকে বলা হয় আক্কেল গুড়ুম অবস্থা। কামানের গোলা লেগে বুদ্ধি হঠাৎ উড়ে গেলে যে অবস্থা হয়, আরকি!

তারিক মনজুর: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়